Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

englandএই ম্যাচে হারলে সেমিফাইনালের স্বপ্ন প্রায় শেষ হয়ে যেতো ইংল্যান্ডের। তবে এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ভারতের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে বলতে গেলে হেসেখেলেই জিতলো স্বাগতিকরা। বার্মিংহ্যামে পাহাড়সমান সংগ্রহ গড়ার পর ভারতকে ৩১ রানে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। এই জয়ে সেমির সম্ভাবনাও বেঁচে রইলো তাদের। লক্ষ্য ৩৩৮ রানের। প্রথম ৩০ ওভারে খুব একটা খারাপ অবস্থানে ছিল না ভারত। মনে হচ্ছিল, এই রানও তাড়া করা সম্ভব। কিন্তু শেষ ২০ ওভারে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে রান তাড়ার তাড়াটা দেখা গেল না সেভাবে।

রান তাড়ায় নেমে দলের খাতায় ৮ রান উঠতেই সাজঘরে লোকেশ রাহুল (০)। এরপর রোহিত শর্মা আর বিরাট কোহলির ১৩৮ রানের বড় জুটিতে দারুণভাবে লড়াইয়ে ফেরে ভারত। ৭৬ বলে ৬৬ রানের ইনিংস খেলে কোহলি যখন সাজঘরে ফিরেছেন, ১৩০ বলে ভারতের দরকার ১৯২। ব্যাটিং সহায়ক পিচ, হাতে পর্যাপ্ত উইকেটও (৮টি) ছিল। জয় পাওয়াটা অসম্ভব ছিল না একেবারে। কিন্তু শেষ ২০ ওভারে উইকেট হাতে রেখেই ঠুকে ঠুকে খেলল ভারত। রোহিত শর্মা তার সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর দায়িত্ব শেষ করলেন। ১০৯ বলে ১৫ বাউন্ডারিতে ১০২ রানের ইনিংসটাকে তার ব্যাটিং সামর্থ্যের তুলনায় ধীরগতিরই বলা যায়।

chardike-ad

এরপর রিশাভ পান্ত, হার্দিক পান্ডিয়া আর মহেন্দ্র সিং ধোনিরা চালিয়ে খেলতে চাইলেও সেটা মোটেই দলকে জয় এনে দেয়ার মতো ছিল না। সমান ৫টি করে বাউন্ডারিতে পান্ত ২৯ বলে ৩২ আর হার্দিক ৩৩ বলে করেন ৪৫ রান। ধোনি ৩১ বলে ৪ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন শেষপর্যন্ত। ইংল্যান্ডের পক্ষে লিয়াম প্ল্যাংকেট ৩টি আর ক্রিস ওকস নেন ২টি উইকেট।

এর আগে জনি বেয়ারেস্টর দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে ভর করে ৭ উইকেটে ৩৩৭ রানের পাহাড় দাঁড় করায় ইংল্যান্ড। ইংলিশ দুই ওপেনার মিলেই যেভাবে ব্যাট করে যাচ্ছিল, তাতে মনে হচ্ছিল রান নিশ্চিত ৩৫০ পেরিয়ে যাবে। মাত্র ১৫.৩ ওভারেই (৯৩ বল) দলীয় ১০০ রান পূরণ করেন বেয়ারেস্ট এবং জেসন রয়।

এই দুই ওপেনারের ব্যাটে যেন টর্নেডো বয়ে যাচ্ছিল ভারতীয় বোলারদের ওপর। মাত্র ২২ ওভারেই ১৬০ রানের জুটি গড়ে ফেলেন দুই ইংলিশ ওপেনার জেসন রয় এবং জনি বেয়ারেস্ট। একের পর এক বোলার ব্যবহার করেও এই জুটি ভাঙতে পারছিলেন না ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি।

২৩তম ওভারের প্রথম বলে গিয়ে শেষ পর্যন্ত জুটি ভাঙতে পারলেন কুলদিপ যাদব। তবে এ ক্ষেত্রে বোলার কুলদিপের চেয়ে ফিল্ডার রবীন্দ্র জাদেজার কৃতিত্বই সবচেয়ে বেশি। দুর্দান্ত এক ডাইভ দিয়ে ক্যাচটি তালুবন্দী করে নেন জাদেজা। ৫৭ বলে ৬৬ রান করে ফিরে যান জেসন রয়। ৭টি বাউন্ডারির সঙ্গে ২টি ছক্কার মার মারেন তিনি।

রয় আউট হয়ে গেলেও অন্য প্রান্তে ঠিকই নিজের তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছেন অপর ওপেনার জনি বেয়ারেস্ট। ভারতীয় বোলারদের চারদিকে পিটিয়ে ৯০ বলেই পূরণ করে ফেলেন নিজের ক্যারিয়ারের ৮ম সেঞ্চুরি। ৮ বাউন্ডারি এবং ৪ ছক্কায় তিনি সেঞ্চুরির মাইলফলকে পৌঁছান।

তবে সেঞ্চুরি করার পর খুব বেশিদুর এগুতে পারলেন না। নিজের ১১১ রানের মাথায় মোহাম্মদ শামির বলে রিশাভ পান্তের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান বেয়ারেস্ট। ১০৯ বলে খেলা ইনিংসটি সাজানো ছিল তার ১০ বাউন্ডারি এবং ৬ ছক্কায়। অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান তো দাঁড়াতেই পারেননি। ৯ বল খেলে মাত্র ১ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। মোহাম্মদ শামির বলে কেদার যাদবের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।

এরপরই জো রুট আর বেন স্টোকস মিলে জুটি গড়েন ৭০ রানের। ৫৪ বলে জো রুট আউট হওয়ার আগে করেন ৪৪ রান। মোহাম্মদ শামির বলে হার্দিক পান্ডিয়ার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান জো রুট। এরপর জস বাটলার জুটি বাধেন স্টোকসের সঙ্গে এবং এই জুটিতে রান ওঠে ৩৩ টি। ৮ বলে ২০ রান করে আউট হয়ে যান বাটলার। শেষ দিকে ক্রিস ওকস ৭ রান করে এবং শেষ পর্যন্ত ৫৪ বলে ৭৯ রান করে আউট হন স্টোকস। তার ইনিংস সাজানো ছিল ৬ বাউন্ডারি এবং ৩ ছক্কায়।

৬৯ রান খরচায় ৫টি উইকেট নেন বিশ্বকাপের একাদশে জায়গা পাওয়ার পর থেকেই আলো ছড়াতে থাকা মোহাম্মদ শামি। ১টি করে উইকেট নেন জসপ্রিত বুমরাহ এবং কুলদিপ যাদব।