বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী লি ন্যাক-ইয়ন। রোববার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে কোরিয়া-বাংলাদেশ বিজনেস ফোরামে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এ আগ্রহের কথা জানান তিনি।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা অত্যন্ত ইতিবাচক। বাংলাদেশে অবকাঠামো, জ্বালানি এবং তথ্য প্রযুক্তি খাতে আরো বিনিয়োগে আগ্রহী আমরা।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন (কেআইটিএ) এ বিজনেস ফোরামের আয়োজন করে। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতিবৃন্দ, পরিচালকবৃন্দ এবং এফবিসিসিআইয়ের প্রাক্তন সভাপতি, সংগঠনের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানগণসহ দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা এতে অংশ নেন।
রোববার সকালে ফোরামের শুরুতে কোরীয় সরকারের নতুন দক্ষিণ নীতি ও কোরিয়া-বাংলাদেশ সহযোগিতা কৌশল এবং কোরিয়া-বাংলাদেশ সহযোগিতার সর্বোত্তম চর্চা বিষয়ে দুটি সেশন হয়।
প্রথম সেশনে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী সদস্য নাভাশ চন্দ্র মন্ডল এবং দক্ষিণ কোরিয়ার কেটি করপোরেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ডল সুন জু প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। দ্বিতীয় সেশনে কেইপিজেডের সভাপতি জাহাঙ্গীর সাদাত এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের পরিচালক মোহাম্মদ এনামুল কবির প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
দক্ষিণ কোরিয়াকে বাংলাদেশের অন্যতম বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, কোরীয় প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর দেশ দুটির মধ্যে সকল ক্ষেত্রেই সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, কোরিয়া বাংলাদেশে ষষ্ঠ বৃহৎ বিনিয়োগকারী দেশ। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সহায়তায় শিল্প মন্ত্রণালয় তাদের কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছে।
এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, গত অর্থবছরে বাংলাদেশ এবং কোরিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ ও বাণিজ্য ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকার ব্যবসা পরিচালনা সহজ করার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।
অনুষ্ঠানের শেষে বাংলাদেশ ও কেআইটিএর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম এবং কেআইটিএর চেয়ারম্যান ইয়াং জু কিম স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ ২৯৩ দশমিক ৬৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য দক্ষিণ কোরিয়ায় রপ্তানি করে এবং দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ৯৮১ দশমিক ২০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে। দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্যগুলো হচ্ছে নিটওয়্যার, ওভেন গার্মেন্টস, ফুটওয়্যার, চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্য। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে মূলত সড়ক পথের যানবাহন, বিমান, জাহাজ এবং এ সংক্রান্ত যন্ত্রাংশ, ধাতু, ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি এবং রাসায়নিক পণ্য আমদানি করা হয়।