Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

sharebazarসারা দেশের মানুষ যখন গুজব, গণপিটুনি আর প্রিয়া সাহা, মিন্নিদের ঘটনা নিয়ে ব্যস্ত তখন বড় ধরনের দরপতন ঘটেছে দেশের শেয়ারবাজারে। গত ৩০ জুন চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পাস হওয়ার পর থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত মাত্র ১৫ কার্যদিবসে বিনিয়োগকারীদের লোকসান হয়েছে প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা। শেয়ারের মূল্যমান কমে যাওয়ায় প্রায় ৪ লাখ কোটি টাকা থেকে ডিএসইর বাজার মূলধন নেমে এসেছে ৩ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকায়।

এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়েছে। মাত্র ১৫দিনে এত বিপুল পরিমাণ অর্থ শেয়ারবাজার থেকে নাই হয়ে যায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন নেটিজেনরা। বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে চাপা ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। যাদের বেশিরভাগ ক্ষোভ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন, তুলে ধরছেন নানা মন্তব্য।

chardike-ad

সমালোচকদের বেশিরভাগের মন্তব্য, ‘‘পরিকল্পিতভাবে গুজব, গণপিটুনি, প্রিয়া সাহা ও মিন্নিদের মতো ঘটনা ঘটিয়ে পুরো দেশবাসীকে ব্যস্ত রেখে সুকৌশলে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।’’

এবিষয়ে বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ এক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘‘২৭ হাজার কোটি টাকা উধাও। জাতি ব্যস্ত অথবা জাতিকে ব্যস্ত রাখা হয়েছে গণপিটুনি আর মিন্নি নিয়ে।’’

ক্ষোভের সাথে মাহমুদ রাফি লিখেছেন, ‘‘শেয়ারবাজারের ২৭০০০ কোটি টাকা উধাও, এতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরাই সর্বস্ব হারাচ্ছে। দেশের বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষেরা পরিমাণ মতো ত্রাণ পাচ্ছে না,অসহায় তারা। আর আমরা পড়ে আছি কি গুজব আর প্রিয়া সাহাকে নিয়ে, মানুষ আর হলাম না আমরা।’’

‘‘হুজুগ আর গুজবের মাঝেই গত ১৫ দিনে শেয়ার মার্কেট থেকে ২৭০০০ কোটি টাকা উধাও!’’ লিখেছেন আফসার মাহমুদ।

জেএস সজিবের মন্তব্য, ‘‘এই জন্যেই বলি এত এত ঘটনা কেন ঘটে। শুরু থেকেই আমার মনে হয়েছিল পিছনে বড় কারণ আছে। এবং অবশেষে একটা দিক জানা গেল।’’

‘‘ডেসটিনির গাছ গায়েব, খনির কয়লা গায়েব, ব্যাংকের সোনা গায়েব, শেয়ারবাজার গায়েব, বিরোধি মতের লোক গায়েব, মানুষের কল্লা গায়েব কবে জানি দেশটাই গায়েব হয়ে যায়’’ মন্তব্য মাইনুদ্দিন জয়ের।

ফেসবুক ব্যবহারকারী সাবেত বিন সাকিন লিখেছেন, ‘‘আমরা আছি মিন্নিকে নিয়ে আমরা আছি প্রিয়া সাহাকে নিয়ে আমরা আছি ছেলে ধরা নিয়ে আর সরকার আছে শেয়ারবাজার থেকে টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় ধান্দায়।’’

প্রচণ্ড আক্ষেপের সাথে রায়াদ খান লিখেছেন, ‘‘চিন্তা করা যায় বাংলাদেশের মানুষ কত আবুল!!হাজার হাজার কোটি টাকা গায়েব হয়ে গেল অথচ কারো কোনো এই নিয়ে সামান্যতম কথা নাই, প্রতিবাদ নাই।সত্যি বাংলাদেশ এখন একটি বড় ধনী রাষ্ট্র এই সামান্য ২৭ হাজার কোটি টাকা কী এমন টাকা!! এসব নিয়ে ভাবা সময় আছে নাকি!!বাহ!! বাহ!! বাহ!! ভোট ডাকাতের দেশ বলে কথা।’’

‘‘আগে সরকার বলতো দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করেন,আমি সেই ২০১০সাল থেকে এই পযন্ত ৭লাখ টাকা তাদের কথামত দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করছি এখন আমার এই দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ এ ৭০হাজার টাকাও নাই’’ লিখেছেন দেওয়ান ওমর হামদু।

শফিকুল সাব্বির ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘এখন আপনারা বলেন আসলে কারা সারা দেশে এধরণের ঘটনাগুলা ঘটিয়ে সাধারণ মানুষকে অন্যদিকে ব্যস্ত রাখছে।আর এটা ইতিপূর্বে ঘটানো হয়েছে।নিজেদের কর্মকান্ড গুলাকে ঠিকভাবে পরিচালনার জন্য নতুন নতুন কাহিনী করা। যেমন সারা দেশের মানুষ বরগুনা আর গণধূলায় নিয়ে ব্যস্ত।অথচ সাধারণ মানুষের কোটি কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে এর ফাঁকে।’’

বুলবুল আহমেদ তার মতামত তুলে ধরে লিখেছেন, ‘‘আমার মতে বাংলাদেশে শেয়ার বাজারে ইনভেস্ট না করাই ভালো। সবাই এগুলো জানার পরেও আবার এই বাজারেই ইনভেস্ট করে, ক্যান ভাই দেশে কি আর কোন ব্যাবসা নাই?’’

‘‘সত্যি কথা বলতে দেশ সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। ইচ্ছে করলেও এই সরকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পারবেনা। কারন এর জন্য যারা দায়ী তাদের আইন বা সরকারের চেয়েও ক্ষমতা দিয়েছে এই সরকারই’’ এমন মন্তব্য করেছেন আলব্দুল্লাহ আল মামুন।

ফেসবুক ব্যবহারকারী মো. রিপন লিখেছেন, ‘‘সমস্যা নাই পূর্বের ন্যায় তদন্ত কমিটি গঠন হবে মানববন্ধন হবে টকশো-সেমিনার হবে আর এর মধ্যে নতুন কোনো ইস্যু যোগ হবে। আবারো তদন্ত-টকশো-সেমিনার এইটাই হইতাছে আর এইটাই হইতে থাকবো। দিন শেষে বাতাবি লেবুর বাম্পার ফলনেই আমরা সন্তুষ্ট।’’

মোহাম্মাদ ইসমাইলের মন্তব্য, ‘‘কখন কি করে লুটতরাজ করা যায় লুটপাট কারীরা সেই সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। পনের দিন থেকে দেশের মানুষকে মিন্নি, কল্লা কাটা, প্রিয়া সাহা এইসব বিষয়ে ব্যস্ত দেখে সুকৌশলে শেয়ার বাজার থেকে সাতাশ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে।’’

খলিলুর রহমান সাগর লিখেছেন, ‘‘আমি মনে করি যারা চুরি করেছে তারাই গুজব ছড়িয়েছে যেনো ফাকা মাঠে চুরি করতে সুবিধা হয়, তাদের ধরতে পারলেই গুজবের আসল কাহিনী বের হয়ে আসবে আশা করছি.।’’

ফারুক রানা লিখেছেন, ‘‘(উধাও হওয়া টাকা) সুইচ বাংকে পেতে পারেন একটু খোঁজ খবর নিয়ে দেখেন। টাকা কোথাও যাই নি একটু হাত বদল হয়েছে।’’