গত ৬০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী সুপার টাইফুন হাগিবিসের প্রভাবে জাপানে একজন নিহত ও কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় শনিবার আরো পরের দিকে প্রলয়ঙ্করী এই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে বলে দেশটির আবহাওয়া সংস্থার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড় হাগিবিস এখনো আঘাত না হানলেও দেশটির হনশু দ্বীপে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি বলছে, জাপানের পূর্ব উপকূলের হনশু দ্বীপে রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। দেশটির মধ্যাঞ্চলে প্রবল শক্তিশালী সুপার টাইফুন হাগিবিস অগ্রসর হচ্ছে। তার মাঝেই স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ২২ মিনিটে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে হনশু। তবে এতে এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপসংস্থা ইউএসজিএস বলছে, হনশুতে আঘাত হানা ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়েছে চিবা শহরের কাটসুরার ৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে ৫৯.৬ কিলোমিটার গভীরে।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, শনিবার রাজধানী টোকিওর দিকে প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে অগ্রসর হতে থাকা সুপার টাইফুন হাগিবিসের প্রভাবে সৃষ্ট তুমুল বর্ষণে চিবা শহরে বেশ কিছু বাড়ি-ঘর ধসে পড়েছে। এতে অন্তত একজনের প্রাণহানি ও আরো ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধারের পর স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দেশটির সরকার এক সতর্কবার্তা জারি করে বলেছে, ১৯৫৮ সালের পর সর্বোচ্চ শক্তিশালী সুপার টাইফুন জাপানে আঘাত হানতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশটিতে নজিরবিহীন বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে; যে কারণে কর্তৃপক্ষ বর্ষণ দূর্যোগের সর্বোচ্চ সতর্ক সঙ্কেত জারি করেছে। কয়েক ঘণ্টার ভারী বর্ষণের কারণে ভূমিধস ও ভয়াবহ বন্যার শঙ্কায় ইতোমধ্যে ৬০ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এই ঝড়ের প্রভাবে গত ২৪ ঘণ্টায় টোকিওতে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৭০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। জাপানের পূর্বাঞ্চলে এই টাইফুন আছড়ে পড়তে পারে ২১৬ কিলোমিটার গতিতে। প্রলয়ঙ্করী এই ঝড়ের কারণে দেশটিতে চলমান রাগবি ওয়ার্ল্ড কাপের দুটি ম্যাচ স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। এমনকি রাজধানী টোকিও থেকে বিমানের সব ধরনের চলাচল স্থগিত রাখা হয়েছে।