
বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর আরোপিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশে নামিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছরের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী যেসব নতুন পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল, তা-ই এখন আংশিক কমানো হলো। হোয়াইট হাউস থেকে এক বিবৃতিতে বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিশ্ববাজারে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রধান রপ্তানি গন্তব্য। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতে এই বাজারের ওপর নির্ভরতা অনেক বেশি। গত বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৮৪০ কোটি ডলারের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছিল, যার মধ্যে ৭৩৪ কোটি ডলার ছিল শুধু পোশাক খাতের।
চলতি বছরের ২ এপ্রিল হঠাৎ করেই যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, যেখানে আগে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল। ৯০ দিনের সেই শুল্ক বিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর জুলাইয়ের শুরুতে ৩৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করার ঘোষণা আসে। শেষমেশ তা ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা হলো।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের আরও অন্তত ২৫ দেশের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের তথ্য জানা গেছে। এতে দেখা গেছে- ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ, পাকিস্তানের ওপর ১৯ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, মালয়েশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, মিয়ানমারের ওপর ৪০ শতাংশ, ফিলিপাইনের ওপর ১৯ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ওপর ২০ শতাংশ এবং ভিয়েতনামের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট।
এছাড়া আফগানিস্তানের ওপর ১৫ শতাংশ, আলজেরিয়ার ওপর ৩০ শতাংশ, বলিভিয়ার ওপর ১৫ শতাংশ, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার ওপর ৩০ শতাংশ, বতসোয়ানার ওপর ১৫ শতাংশ, ব্রাজিলের ওপর ১০ শতাংশ, ব্রুনাইয়ের ওপর ২৫ শতাংশ, কম্বোডিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, কম্বোডিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, ক্যামেরুনের ওপর ১৫ শতাংশ, চাদের ওপর ১৫ শতাংশ, কোস্টারিকার ওপর ১৫ শতাংশ, আইভরি কোস্টের ওপর ১৫ শতাংশ, কঙ্গোর ওপর ১৫ শতাংশ, ইকুয়েডরের ওপর ১৫ শতাংশ, গিনির ওপর ১৫ শতাংশ এবং ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক শুল্ক আলোচনায় সুবিধা আদায়ের কৌশল হিসেবে বাংলাদেশ ২৫টি বোয়িং উড়োজাহাজ কেনার অর্ডার দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।
রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বোয়িংয়ের সঙ্গে এ ধরনের অর্ডার অন্য দেশও দিচ্ছে— ভারত ও ভিয়েতনাম ১০০টি করে, ইন্দোনেশিয়া ৫০টি। আমরা আগে ১৪টি অর্ডার দিয়েছিলাম, এখন রেসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ চুক্তির অংশ হিসেবে তা ২৫টিতে উন্নীত করা হয়েছে।
শুল্ক ইস্যুতে সমঝোতা আনতে মঙ্গলবার ও বুধবার ওয়াশিংটনে ইউএসটিআরের সঙ্গে তৃতীয় দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। আলোচনার পর বাংলাদেশ ২৩ জুলাই তাদের চূড়ান্ত অবস্থান জানিয়ে দেয়।
বাণিজ্য সচিব বলেন, রেসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ চুক্তির খসড়া পাওয়ার পর আমরা কয়েক দফা বৈঠক করেছি, অনলাইনেও আলোচনা হয়েছে। সব খসড়ার উত্তর দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান পরিষ্কার করেছি।







































