কারাতে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শেখ আলী আহসান বাদলের বিদেশে দল পাঠানোর নামে আদম পাচারের অভিযোগ নতুন নয়। এনিয়ে বেশ কয়েকবার খবরও প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে। শোনা যাচ্ছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় এশিয়ান গেমস থেকে শামীম ওসমানের উধাও হওয়ার পেছনে ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের হাত রয়েছে। ৩রা অক্টোবর খেলা থাকলেও প্রতিযোগিতার ভেন্যুতেই যাননি শামীম ওসমান। দলের ম্যানেজার ও কোচ এহসানুর রহমান এহসানের আচরণও ছিলো রহস্যজনক। শামীম ওসমানের পালিয়ে যাওয়ার নেপথ্যে কয়েক লাখ টাকা হাত বদল হয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে। বাদলের যোগসাজশেই সম্প্রতি মার্শাল আর্ট কনফেডারেশনের ব্যানারে ২২ জন তথাকথিত কারাতেকা মালয়েশিয়ায় পালিয়ে যান।
এবারের এশিয়াডে কারাতে ডিসিপ্লিনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন শামীম ওসমান ও মোহাম্মদ আশরাফুল। ইনচন এশিয়াড দলে অন্তর্ভুক্ত হলেও দু’কারাতেকার কারোরই পোশাক পরিচ্ছদ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ছিলো না। ৩রা অক্টোবর শামীম ওসমানের ইভেন্ট থাকলেও নির্ধারিত সময়ে ভেন্যুতে হাজির হননি ম্যানেজার এহসান ও কারাতেকা শামীম ওসমান। গেমসের নিয়ম অনুযায়ী ম্যানেজারের দায়িত্ব নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রতিযোগীর ওজনশ্রেণীসহ নাম নিবন্ধন করা। কিন্তু এহসান তা করেননি। শামীম ওসমান না খেললেও গেমস ভিলেজে গিয়ে ম্যানেজার এহসান উল্টো প্রচার করেছেন, শামীম ৮-০ পয়েন্টে হেরে গেছে। অন্যদিকে আশরাফুল ভিনদেশী এক প্রতিযোগীর কাছ থেকে পোশাক ধার করে নিয়ে ম্যাটে নেমেছিলেন।
গত রোববার দেশে ফেরার কথা ছিলো বাংলাদেশ কারাতে দলের। এহসান ও আশরাফুল ফিরলেও ফেরেননি শামীম ওসমান। দেশে ফিরে এহসান বিষয়টি কারাতে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শেখ আলী আহসান বাদলকে জানিয়েছেন। তিনি ম্যানেজারকে লিখিতভাবে জানাতে বলেছেন। ম্যানেজার এহসানের মুঠোফোনে তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি ফোন ধরেননি। সাধারণ সম্পাদক বাদল জানিয়েছেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। ম্যানেজারের রিপোর্ট পাওয়ার পর এব্যাপারে আলোচনা করবো।’ অভিযোগ রয়েছে, ‘শামীম ওসমানের উধাও হওয়ার পেছনে ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের হাত রয়েছে। গোপনসূত্রে জানা গেছে, শামীম ওসমানের জিম্মাদার হয়েছিলেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নিজেই। শামীম ওসমানের পালানোর সম্ভাবনা রয়েছে, এটা আঁচ করতে পেরে অনেকেই তার জিম্মাদার হতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এসব জেনেও ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক শামীম ওসমানের জিও (গভর্নমেন্ট অর্ডার) পেপারে সই করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কারাতে খেলোয়াড় বলেন, সাধারণ সম্পাদক সাহেব নিজে শামীম ওসমানের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ওকে পালানোর বন্দোবস্ত করে দিয়েছেন। বাদলের আচার-আচরণ দেখে অন্তত তাই মনে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক সংবাদ প্রচার হলেও নীরব আলী আহসান। তার ভাবসাব দেখে মনে হয়েছে। এটা স্বাভাবিক ঘটনা এবং জন্যই তাকে বসানো হয়েছে কারাতে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে। সংবাদ মানবজমিন।