Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

দেশে ফিরতে খোকার কান্না!

sadekনিউইয়র্কে চিকিৎসাধীন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে দেশের ফেরার জন্য কাঁদছেন। বর্তমানে তার অবস্থা সংকটাপন্ন। তাকে নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যানসার সেন্টারে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতাকর্মীরা দফায় দফায় তাকে দেখতে গেলে তিনি কান্না বিজড়িত কণ্ঠে দেশে ফেরার আকুতি জানান।

বিএনপির চেয়ারপাসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, হাসপাতালে যাওয়ার আগে সাদেক হোসেন খোকা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে আক্ষেপ করে বলেছিলেন, জীবনবাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। দেশের মাটিতে বিদায় হবে কিনা আল্লাহ জানেন। আমার জন্য দোয়া করো। পরিবারের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে দোয়া চাওয়া হয়েছে জানিয়ে শায়রুল কবির খান বলেন, সাদেক হোসেন খোকার সুস্থতা কামনা করে বিএনপির নানা স্তরে দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হচ্ছে। তার পরিবার দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।

chardike-ad

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির একাধিক সূত্র জানান, সাদেক হোসেন খোকা কিছুদিন আগে থেকেই কিডনির নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। স্থানীয় সময় সোমবার থেকে তার স্বাস্থ্যের আরও অবনতি হয়েছে। প্রায় তিন সপ্তাহ আগে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটার পরই এই হাসপাতালে নেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা মিল্টন ভূইয়া ও আব্দুস সবুর মঙ্গলবার রাতে জানান, লাগাতার ওষুধ সেবনের ফলে তার মুখে ঘা হয়ে গেছিল। তিনি খাবার গ্রহণ করতে পারছিলেন না। সেজন্যে কয়েকদিন আগে তাকে ওই হাসপাতালে ভর্তির পর গত ২৭ অক্টোবর তার ফুসফুসে একটি ছোট অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।

এরপর তাকে চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে হাসপাতালেই। তার অবস্থার অবনতির সংবাদে বিএনপি পরিবারের অনেকেই হাসপাতালে গিয়ে তার খোঁজখবর নিচ্ছেন। খবর পেয়ে বাংলাদেশ থেকে ছুটে এসেছেন সাদেক হোসেন খোকার ছেলে বিএনপির বৈদেশিক বিষয়ক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন।

তিনি জানান, তার বাবার শারীরিক অবস্থার অনেক অবনতি হয়েছে। ইশরাক তার বাবার জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন। এক সময়কার বাম ঘরানার রাজনীতিবিদ বিএনপিতে যোগ দেন। বিএনপির বর্তমান কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান তিনি। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম এই সংগঠক অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে ছিলেন।

ঢাকার মেয়র হয়ে তিনি রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক মুক্তিযোদ্ধাদের নামে নামকরণ করেন। বিএনপির ক্ষমতায় থাকাকালে তিনি একাধিকবার মন্ত্রিসভার সদস্যও হন। ২০১৪ সালের ১৪ মে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আসেন সাদেক হোসেন খোকা। একাধিক মামলায় সাদেক হোসেন খোকার সাজা হয়েছে। এরপর থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রেই আছেন। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করা আছে।

রাজধানীর বনানী সুপার মার্কেটের কার পার্কিংয়ের ইজারা দুর্নীতির মামলায় ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকাসহ ৪ জনের ১০ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড হয়। গত বছরের ২৮ নভেম্বর ঢাকা বিভাগীয় স্পেশাল জজ মিজানুর রহমান খান এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় খোকাসহ আসামিরা আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ২৫ এপ্রিল অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন। ২৯ নভেম্বর ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা ১০ বছর বিএনপি ও আওয়ামী লীগের শাসনামলে ঢাকা মহানগরের মেয়র ছিলেন সাদেক হোসেন খোকা। ২০১৪ সালে ১৪ মে ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য খোকা সপরিবারে নিউইয়র্ক এসেছেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সে একটি বাসায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন।