এ বছর বাংলাদেশে ফিতরার হার জনপ্রতি সর্বনিম্ন ৭০ টাকা ও সর্বোচ্চ ২ হাজার ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছরও সর্বনিম্ন ৭০ টাকাই ছিল। তবে সর্বোচ্চ ছিল এক হাজার ৯৮০ টাকা। সোমবার (৪ মে) রাজধানীর বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সভায় এই হার নির্ধারণ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সভাপতি ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। এতে ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট আলেমরা উপস্থিত ছিলেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয় যে, ইসলামী শরীয়াহ মতে সামর্থ্য অনুযায়ী আটা, খেজুর,গম, কিসমিস, পনির ও যবের যেকোনো একটি পণ্যের নির্দিষ্ট পরিমাণ বা এর বাজার মূল্য ফিতরা হিসেবে গরিবদের মধ্যে বিতরণ করা যায়।
আটার ক্ষেত্রে এর পরিমাণ এক কেজি ৬৫০ গ্রাম (অর্ধ সা’)। খেজুর, কিসমিস, পনির ও যবের ক্ষেত্রে ৩ কেজি ৩০০ গ্রামের (এক সা’) মাধ্যমে সাদকাতুল ফিতর (ফিতরা) আদায় করতে হয়। এসব পণ্যের বাজার মূল্য হিসাব করে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ফিতরা নির্ধারণ করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আটার ক্ষেত্রে ফিতরা এক কেজি ৬৫০ গ্রাম (অর্ধ সা’) আটা বা এর বাজার মূল্য ৭০ টাকা। যবের ক্ষেত্রে (এক সা’) ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২৭০ টাকা ফিতরা দিতে হবে। গমের ক্ষেত্রে (অর্ধ সা’) এক কেজি ৬৫০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ৭০ টাকা ফিতরা দিতে হবে।
এছাড়া ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম কিসমিস বা এর বাজার মূল্য এক হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করা যাবে। খেজুরের ক্ষেত্রে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য এক হাজার ৬৫০ টাকা ও পনিরের ক্ষেত্রে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করতে হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, ফিতরার পণ্যের স্থানীয় খুচরা বাজার মূল্যের তারতম্য রয়েছে। সে অনুযায়ী স্থানীয় মূল্য পরিশোধ করলেও ফিতরা আদায় হবে।
ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, ছোট-বড়, নারী-পুরুষ সকল সামর্থ্যবান মুসলিমের পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব। একইভাবে ফিতরার খাদ্য ঈদের নামাজের আগেই বণ্টন করাও ওয়াজিব। ঈদের নামাজের পর পর্যন্ত দেরি করা জায়েয নয়। বরং ঈদের এক বা দুই দিন আগে আদায় করে দিলে কোন অসুবিধা নেই। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৪ বা ২৫ মে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। তবে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারেণ এবারের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন।
সভায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ, কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহের প্রধান ইমাম মাওলানা ফরীদ উদ্দিন মাসউদ, জাতীয় মুফতি বোর্ডের সদস্য সচিব মো. নূরুল আমীন, লালবাগ মাদরাসার প্রধান মুফতি মো. ইয়াহিয়া, তেজগাঁওয়ের মদিনাতুল উলুম কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আব্দুর রাজ্জাক, ঢাকা নেসারিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা কাফীলুদ্দীন সরকার সালেহী, কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া কামিল মাদরাসার প্রধান মুফতি মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান, জামিয়া আশরাফিয়া মাদরাসা অধ্যক্ষ মাওলানা আ. আলীম ফরিদী, জামিয়া শারইয়্যাহ মাদরাসার সহকারি মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মো. আনিসুজ্জামান সিকদার ও মো. আনিছুর রহমান সরকার, উপ-পরিচালক ও মুহাদ্দিস মুফতি ওয়ালিয়ূর রহমান খান, সম্পাদক ড. মাওলানা মুশতাক আহমদ, সম্পাদক ড. মাওলানা আবদুল জলীল, মুফাসসির ড. মাওলানা মুহাম্মদ আবু সালেহ পাটোয়ারী, মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, ড. মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ, মিজানুর রহমান সাঈদ উপস্থিত ছিলেন।