প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন, ‘রক্তে কেনা বাংলাদেশ কোনো পরিবারতন্ত্রকে সহ্য করবে না। আমরা রাজতন্ত্রের জন্য রক্ত দিইনি।’ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জুলাই আন্দোলন স্মরণে অনুষ্ঠিত ‘লাল সন্ধ্যা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুলাই গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্রীক সংগঠন ‘রেড জুলাই’ ও ‘জাস্টিস ফর জুলাই’র উদ্যোগে এ আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ আলোচক হিসেবে ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘প্রতিটি দশক যেন আমাদের রক্তের বিনিময়ে অন্য একটি দশকের আয়ু কেনে। আমরা এ দুই দশক ধরে রক্ত ঝরিয়েছি। কিন্তু আর কত রক্ত দিতে হবে?’
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি দশকের অর্জন আমরা হারাই, আবার নতুন করে শুরু করি। এরপর আরেকটি স্বৈরাচার উঠে আসে, আমরা আবার লড়াই করি, আবার রক্ত দেই। এটা চলতে পারে না। ২০২৪-এ এসে আমাদের এমন এক অবস্থায় পৌঁছাতে হবে, যেখানে এদেশের মানুষের ওপর কোনো স্বৈরাচার কিংবা শোষক আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। কোনো বিদেশি শক্তি আমাদের জিম্মি করতে পারবে না।’
প্রধান আলোচক হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা যুগের পর যুগ যেটা করতে পারিনি, আমাদের ছোট ভাই, ছোট বোন, ছেলে-মেয়ে এবং স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে তা করে দেখিয়েছে। এ ধরনের মহৎ আন্দোলন পুরো পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই।’
তিনি বলেন, ‘এ আন্দোলনে যাদের হাতে রক্ত লেগে আছে, যাদের হাতে অসংখ্য নিরপরাধ মানুষ গুম, খুন, অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়েছে, ফ্যাসিস্ট হাসিনার সেসকল দোসরদের এ দেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই। তাদের বিচারের আওতায় আনতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
তিনি আরো বলেন, ‘লড়াই আমাদের এখনো শেষ হয়নি। যতদিন না আমরা সমতার দেশ পাব, যতোদিন না মানবাধিকার নিশ্চিত হবে- ততদিন আমাদের এ লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘আজকের এই অনুষ্ঠান আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, আমাদের ঐক্যে কোনো ঘাটতি থাকবে না। আমরা দায়িত্বে আসার পর থেকে কিছু পরিবর্তন আনার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আমরা ইতোমধ্যে জাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছি।’
তিনি আরো বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘ ১৫ বছরের যে সংগ্রাম হয়েছে, সেই সংগ্রামের সঙ্গে গণতন্ত্রের প্রক্রিয়া চালু করার যে সামান্য সুযোগ আমাদের হাতে রয়েছে, তা বাস্তবায়ন করা আমি আমার দায়িত্বের অংশ মনে করি।’
সূত্র: TDC