
সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রন হক সিকদারের নামে রাজধানীর পূর্বাচলে বরাদ্দ দেওয়া ১০০ একর জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২১ এপ্রিল) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন এই আদেশ দেন।
দুদক আদালতকে জানিয়েছে, ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, নামে–বেনামে জনগণের আমানতের অর্থ লুটপাট এবং ঘুষের বিনিময়ে ঋণ দেওয়ার অভিযোগ অনুসন্ধান করছে কমিশন।
তদন্তে উঠে এসেছে, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ১৯ নম্বর সেক্টরের ১০০ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে রন হক সিকদারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান পাওয়ারপ্যাক হোল্ডিংকে। রাজউক এই জমিতে ১০০ থেকে ১৪২ তলা বিশিষ্ট আইকনিক টাওয়ার নির্মাণের অনুমোদন দেয় তাদের।
প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার এই জমি তিন হাজার কোটি টাকায় বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু মাত্র ২৭০ কোটি টাকার একটি কিস্তি পরিশোধ করে রন হক সিকদার নিরাপত্তারক্ষী বসিয়ে সম্পত্তির দখল নেন।
দুদক আরও জানায়, রাজউকের অনুমোদন না নিয়েই পাওয়ারপ্যাক হোল্ডিং সেখানে তিনতলা একটি ভবন নির্মাণ করছিল। এ ছাড়া, ভুয়া তথ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ১১০ কোটি টাকার ঋণ নেয়।
এর আগে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বেশির ভাগ সদস্যই ছিলেন সিকদার পরিবারের। তারা ব্যাংকে থাকা জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকার আমানত বেআইনীভাবেই ঋণ দিয়ে পাচার করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
গত ৯ মার্চ রন হক, তাঁর মা মনোয়ারা সিকদারসহ পরিবারের সদস্যদের ৪২টি বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেয় আদালত। দুদকের দাবি, সিকদার পরিবারের অধিকাংশ সদস্য বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন এবং সেখান থেকে বিও হিসাবগুলো হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন।
গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর আদালত রন হক এবং তার পরিবারের কিছু সদস্যের নামে থাকা মোট ১৫টি ভবন ও ফ্লোর জব্দের আদেশ দেন।
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, রন হক সিকদার ও তার ভাই রিক হক সিকদার ব্যাংকটির পরিচালক থাকাকালীন জনগণের গচ্ছিত অর্থ আত্মসাৎ করে নিজেদের এবং পরিবারের সদস্যদের নামে–বেনামে বিপুল সম্পদ গড়েছেন এবং প্রভাব খাটিয়ে সেই অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন।









































