Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

প্রবাসে বাংলাদেশী শ্রমিকদের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে

মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত বহু বাংলাদেশী শ্রমিকদের কাজ এবং থাকার পরিবেশ অনেক ক্ষেত্রেই অনিরাপদ হয়ে উঠছে বলে উদ্বেগ বাড়ছে। সর্বশেষ বুধবারই সৌদি আরবে অগ্নিকান্ডে দু’জন বাংলাদেশী শ্রমিক মারা গেছেন।

গত কয়েক বছরের সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, যাদের অধিকাংশই মধ্যপ্রাচ্যে। বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত সমস্যা ছাড়াও অনেকে মারা যাচ্ছেন সড়ক দুর্ঘটনা কিংবা অগ্নিকান্ডে।

chardike-ad

middle_east সরকারি হিসাবেই ২০১৩ সালে ৩০৭৫ জন বিদেশে কর্মরত শ্রমিক মারা গেছে। এদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সৌদি আরবে। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মালয়েশিয়াতেও অনেক কর্মরত শ্রমিক মারা গেছে।

সৌদি আরবের সাংবাদিক রুমী সাঈদ জানান, বর্তমানে বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশীদের সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। যেটি বাংলাদেশী অভিবাসী শ্রমিকদের মধ্যে সর্বোচ্চ।

তিনি বলেন সরকার কর্তৃক নির্ধারিত যেসব জায়গা শ্রমিকদের কর্মস্থল হিসেবে বিবেচিত সেগুলো বেশ নিরাপদ ।

নির্মাণ প্রকল্পে কাজে যাচ্ছেন শ্রমিকরা।

মি: সাঈদ বলেন, ”আমাদের দেশের শ্রমিকরা নিজেরা ফ্যাক্টরি খুলে বসে। নিজেদের বাসায় তারা বিভিন্ন ধরনের কাজ করে। ওই জায়গাগুলো নিরাপদ না। এর কারণে অগ্নিকান্ড ঘটে।”

তিনি জানান, কিছু জায়গায় একসাথে একই সাথে অনেক বেশি মানুষ বসবাস করেন। অনেক সময় মালিকরা অল্প জায়গায় বেশি শ্রমিক রাখার ব্যবস্থা করে। তিনি বলেন, বাংলাদেশেী শ্রমিকদের অসচেতনতার কারণেও অনেক দুর্ঘটনা হয়।

অভিবাসন বিষয়ক গবেষক অধ্যাপক তাসনীম সিদ্দিকী বলেন, অনেক শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ পায় না। যেসব শ্রমিকের অতিরিক্ত কাজের চাপ এবং থাকার পরিবেশ ভালো নয় তাদের ক্ষেত্রেই সমস্যা তৈরি হচ্ছে। বড় ফ্যাক্টরিতে কাজ করা কিংবা কোম্পানির ভিসা নিয়ে গেলে কাজ এবং থাকার কোন সমস্যা হয় না। কিন্তু যারা ফ্রি ভিসা নিয়ে সেখানে যাচ্ছে অর্থাৎ যাদের নিদ্দির্ষ্ট কোনো কাজ নেই তাদের অনেকেই ঝুঁকিতে পড়েন।

তাসনীম সিদ্দিকী বলেন বাংলাদেশে থেকে মধ্যপ্রাচ্যে ফ্রি ভিসাতে জনশক্তি পাঠানোর সংখ্যা বেড়েছে।

”এরা থাকে অত্যন্ত মানবেতর পরিবেশে। এদের কাজের কোনো ঠিক নেই। আজকে তাদের নিয়ে যায় খেজুর গাছ পরিষ্কার করাতে, আর আগামীকাল নিয়ে যায় কোনো স্কুলের টয়লেট পরিষ্কার করাতে।” এসব শ্রমিকদের প্রতিদিন লম্বা সময় ধরে কাজ করতে হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন ।

মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, কোন ধরনের সমস্যায় পড়ে বাংলাদেশী দূতাবাসের দ্বারস্থ হলে বেশিরভাগ সময় কর্মকর্তাদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া পাওয়া যায় না। তবে দূতাবাসগুলোর কর্মকর্তারা এই অভিযোগ মানেন না।

তাদের কেউ কেউ বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যত বাংলাদেশী কাজ করছেন সেই তুলনায় দূতাবাসে লোকবল কম । কর্মকর্তারা বলেন, শ্রমিকদের চাকরি কিংবা বাসস্থান বিষয়ে কোন সমস্যা হলে সেটি সংশ্লিস্ট কোম্পানির সাথে আলোচনা করে তারা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা হন।– বিবিসি।