
ছবি: সংগৃহীত
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ মো. ওসমান হাদির মস্তিস্কের অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। এই অবস্থাকে চিকিৎসকরা আরও বেশি উদ্বেগজনক মনে করছেন। ইতোমধ্যে তার মেডিকেল রিপোর্ট দুটি দেশে পাঠানো হয়েছে। যে কোনো দেশ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেলে তাকে বিদেশে পাঠানো হবে।
হাদির চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা রবিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অবস্থা পর্যালোচনায় বৈঠক করেন। এর আগে সকালে সিটি স্ক্যান করা হয়। বোর্ড মিটিং শেষে ন্যাশনাল হেলথ এলায়েন্সের (এনএইচএ) সদস্য সচিব ডা. মো. আব্দুল আহাদ জানান, হাদির মেডিকেল রিপোর্ট থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। কোনো দেশ যদি তার চিকিৎসার বিষয়ে সাড়া দেয় তাহলে তাকে পাঠানো বিষয়ে চিন্তা করা হবে। তবে তাও নির্ভর করবে বিদেশ নেওয়ার মত উপযোগী শারীরিক অবস্থার ওপর।
বিকেলে এভারকেয়ার হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও কো-অর্ডিনেটর (আইসিইউ ও এইচডিইউ) ডা. মো. জাফর ইকবাল স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মেডিকেল বোর্ডের পর্যালোচনা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘সকালে পুনরায় করা সিটি স্ক্যানে দেখা গেছে, মস্তিষ্কের ফোলা পূর্বের তুলনায় আরও বৃদ্ধি পেয়েছে, যা একটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক ক্লিনিক্যাল পরিস্থিতি নির্দেশ করে। রোগীর সার্বিক অবস্থা বর্তমানে অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। তবে মেডিকেল বোর্ড সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব, আন্তরিকতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘রোগীর ফুসফুসের কার্যকারিতা ও মেকানিক্যাল ভেন্টিলেটরের অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে। এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি বা অবনতি হয়নি। চেস্ট ড্রেইন টিউব সচল রয়েছে। কিডনির কার্যক্ষমতা বর্তমানে বজায় আছে। ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। ব্রেন ইনজুরির কারণে শরীরের কিছু হরমোনগত ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে, যা প্রতি ঘণ্টায় ইউরিন উৎপাদনে প্রভাব ফেলছে। এ কারণে এসিড-বেস ব্যালেন্স, ফ্লুইড ও ইলেক্ট্রোলাইট অত্যন্ত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ ও চিকিৎসা করা হচ্ছে। রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তক্ষরণের ভারসাম্যহীনতা বর্তমানে অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে ডা. মো. জাফর ইকবাল জানান, ‘ব্রেন স্টেমে আঘাত ও মস্তিষ্কের অতিরিক্ত ফোলাজনিত চাপের কারণে রোগীর রক্তচাপ ওঠানামা করছে। হৃদস্পন্দন স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেশি হচ্ছে। রক্তচাপ ও হৃদযন্ত্রের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল সাপোর্ট চলমান রয়েছে। ব্লাড সুগার নিবিড়ভাবে মনিটর করা হচ্ছে। এই ধরনের জটিল ও সংকটাপন্ন শারীরিক অবস্থায় ব্লাড সুগারের ওঠানামা একটি পরিচিত ক্লিনিক্যাল চ্যালেঞ্জ, যা মেডিকেল টিম সতর্কতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণে রাখছে।’
ডা. মো. জাফর ইকবাল সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, রোগীর পরিবার অথবা পরিবারের মাধ্যমে সরকার যদি রোগীকে দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, সে ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও মেডিকেল বোর্ড সর্বাত্মক সহযোগিতায় প্রস্তুত রয়েছে।




































