২০১৪ সাল জুড়েই বিশ্বে বিমান নিখোঁজ ও বিধ্বস্তের ঘটনা ঘটেছে। অনেকে বছরটিকে বিমানের জন্য ‘কুফা’ বছর হিসেবে বর্ণনা করেছেন। গত বছরের বিমান দুঘর্টনার মধ্যে ভয়াবহ কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরা হলোঃ
প্রথম : ইন্দোনেশিয়া থেকে সিঙ্গাপুরগামী এয়ার এশিয়ার কিউজেড-৮৫০১ ফ্লাইটটি ১৬২ জন আরোহী নিয়ে ২৮ ডিসেম্বর নিখোঁজ হয়। মালয়েশিয়াভিত্তিক স্বল্পমূল্যের বিমান পরিবহণ সংস্থা এয়ার এশিয়া এই বিমানটির ধ্বংসাবশেষ দুই দিন পর জাভা সাগরে পাওয়া যায়। ঘন কুয়াশা ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে বিমানটি যোগযোগ কক্ষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বিমানটির ধ্বংসাবশেষ ও এর আরোহীদের উদ্ধারে বিশাল অভিযান এখানো চালিয়ে যাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া ও সিঙ্গাপুরসহ বেশ কয়েকটি দেশ।
দ্বিতীয় : ২০১৪ সালের ৮ মার্চ মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং-৭৭৭ এর এমএইচ-৩৭০ ফ্লাইটটি ২২৭ জন যাত্রী ও ১২ জন ক্রু নিয়ে কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিংয়ের উদ্দেশে রওনা হয়। প্রায় ঘণ্টাখানেকের মধ্যে বিমানটির সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। আজও বিমানটি হদিস মেলেনি। ভারত মহাসাগরে অবস্থিত মার্কিন নৌ-ঘাঁটি থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বিমান বিধ্বস্ত হয় বলেও মিথ রয়েছে।
তৃতীয় : মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের আরেকটি বিমান ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১৭ জুলাই ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক অঞ্চলে বিধ্বস্ত হয়। এতে ২৯৮ আরোহীর সবাই নিহত হন। নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম শহর থেকে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে যাচ্ছিল ফ্লাইট-এমএইচ-১৭। বিমানটির অধিকাংশ যাত্রী ছিলেন নেদারল্যান্ডসের নাগরিক। বেইজিংগামী বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার মাত্র চার মাসের মাথায় ফের ভয়াবহ এ বিমান দুর্ঘটনা ঘটে। ইউক্রেনের সেনা বাহিনী ও বিদ্রোহীরা বিমানটি বিধ্বস্তের ঘটনায় একে অপরকে দায়ী করে আসছে।
চতুর্থ : ইউক্রেনে মালয়েশীয় বিমান বিধ্বস্তের রেশ কাটতে না কাটতে ২৪ জুলাই ১১৬ জন যাত্রী নিয়ে নিখোঁজ হয় আলজেরীয় একটি যাত্রীবাহী বিমান। এক দিন পর বিমানটির ধ্বংসাবশেষ আফ্রিকার দেশ বারকিনা ফাসোয় পাওয়া যায়। তবে যাত্রীদের সবাই নিহত হন এ দুর্ঘটনায়। বিমানে ৫১ জন ফ্রান্সের নাগরিক ছিলেন। খারাপ আবহাওয়ার কারণে বিমানটির যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর বিধ্বস্ত হয়।
পঞ্চম : ১০ আগস্টে এবার ৪৮ জন আরোহী নিয়ে বিধ্বস্ত হলো ইরানের অভ্যন্তরীণ রুটের একটি বিমান। এ ঘটনায় আরোহীদের অন্তত ৩৯ জন নিহত এবং আরও নয়জন আহত হন। বিমানটি মেহরাবাদ বিমানবন্দর থেকে ইরানের পূর্বাঞ্চলীয় তাবাস শহরের উদ্দেশে উড্ডয়ন করার কিছুক্ষণ পরই বিমানবন্দরটির কাছে এক আবাসিক এলাকায় আছড়ে পড়ে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
ষষ্ঠ : ২৩ জুলাই তাইওয়ানে বিধ্বস্ত হয় ট্রান্সএশিয়া এয়ারওয়েজের একটি যাত্রীবাহী বিমান। দেশটির অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী ট্রান্সএশিয়া এয়ারওয়েজের বিমানটি পেংঘু দ্বীপে যাওয়ার পথে ম্যাগং বিমানবন্দরের কাছে বিধ্বস্ত হয়। ৫৪ যাত্রী এবং চার জন ক্রু মিলে সর্বমোট ৫৮ জন আরোহীর সবাই নিহত হন। ঝড়ের কবলে পড়ে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
তথ্যসূত্র : দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট