Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

পরিবারের সন্ধান পেয়েও আশ্রমে ফিরে গেল দুই অনাথ

orphanদুই ভাই-বোন রূপা ও সুমিত। রূপার বয়স আট। আর সুমিত তার চেয়ে দুই বছরের ছোট।

তারা যখনই কলকাতায় বাবার সাথে দাদুর বাড়িতে বেড়াতে আসত, তখনই পাশের শ্যামবাজারের একটা পার্কে খেলত।

chardike-ad

তিন বছর আগে তাদের বাবা এক দুর্ঘটনায় মারা যান। তখনই হারিয়ে যায় তারা। এতোদিন বেহালার একটা অনাথ আশ্রমে থাকত দুই ভাই-বোন।

দিনকয়েক আগে শ্যামবাজারের ওই পার্কেই আয়োজন করা হয়েছিল অনাথ আশ্রমটির বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার। সেখানে গিয়েছিল রূপাও। তখনই তার মনে পড়ে যায় ছোটবেলার খেলার জায়গাটার কথা। আর তার পাশের পাখির খাঁচাটা, যাদের সে রোজ দানা খাওয়াত।

রূপা বলছিল, ‘আশ্রমের বড় ভাইদের খেলা দেখতে নিয়ে গিয়েছিল। ওখানে গিয়ে আমার জায়গাটা চেনা লাগছিল। কিন্তু দাদুর বাড়িটা ভাঙ্গা হয়েছে বলে প্রথমে বুঝতে পারিনি। তারপরে আশ্রমের দিদিকে বলতে তিনি আমায় সাথে নিয়ে দাদুর বাড়ি খুঁজে বের করেন। দাদু দেখতে পেয়ে কাঁদছিল- আমাদের দুজনকে ১০ টাকা করে দিয়েছে।’

জায়গাটা যে চেনা লাগছে, সেটা রূপা জানিয়েছিল অনাথ আশ্রমের প্রধান গার্গী গুপ্তকে।

তারপর বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে গুপ্ত খুঁজে বেরিয়েছেন রূপা-সুমিতের দাদুর বাড়ি।

তিনি বলছিলেন, আগেরবার আমাদের স্পোর্টস অন্য মাঠে হয়েছিল। এবারই এই মাঠটায় আসা হয়েছিল। কাকতালীয়ভাবে এখানেই যে ওদের দাদুর বাড়ি, সে আর কে জানত। এই মাঠে না এলে হয়ত ওরা কোনোদিনই পরিবারকে খুঁজে পেত না।’

রূপা-সুমিতের দাদু গোবিন্দ পাত্রের কথায়, ‘একদিকে ছেলে মারা গেছে, তার মধ্যেই থানা-হাসপাতালে ছুটোছুটি- তখনই কোনোভাবে হারিয়ে যায় ওরা। মিসিং ডায়েরি করেছিলাম থানায়, খোঁজও করতে যেতাম মাঝে মাঝেই। আমাকে ঘোরানো হত বারে বারে। বিভিন্ন হোমেও যোগাযোগ করেছি কিন্তু কিনারা করতে পারিনি। এভাবে যে নাতি-নাতনীকে ফিরে পাব, কোনোদিন কল্পনাও করিনি।’

যদিও ঠিক কীভাবে রূপা-সুমিত হারিয়ে গিয়েছিল, আর সেখান থেকে কীভাবে অনাথ আশ্রমে তাদের জায়গা হল সেটা কিছুটা অস্পষ্ট।

নাতি নাতনীকে খুঁজে পেলেওতাদের বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসতে চান না তিনি, কারণ তিনি একা, আর সামান্য রোজগারে দুই নাতি-নাতনীকে মানুষ করানোর সামর্থ্যও নেই তার।