Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

পাকিস্তানের নিরাপত্তা দেখে খেলোয়াড়রা হতবাক

zim-pakদীর্ঘ ছয় বছর পর পাকিস্তান প্রথম বারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজন করতে যাচ্ছে। যেখানে স্বাগতিকদের মোকাবেলা করবে জিম্বাবুয়ে। আসন্ন এই সিরিজকে কেন্দ্র করে পাকিস্তান সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী। সেই সঙ্গে বসানো হয়েছে তল্লাসি চৌকি। ক্রিকেট সিরিজকে কেন্দ্র করে কর্তৃপক্ষের এই আয়োজন দেখে হতবুদ্ধি হয়ে গেছে খেলোয়াড়রা। তবে এ সবকে পেছনে রেখে তারা এখন মনোনিবেশ করেছে আসন্ন সিরিজের দিকে।

অপেক্ষাকৃত খর্ব শক্তির দল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ম্যাচের সুচনা হবে দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজ দিয়ে। যার প্রথমটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২২ মে শুক্রবার। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামেই অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের সবগুলো ম্যাচ।

chardike-ad

এ উপলক্ষে শহর জুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে হাজার হাজার পুলিশ ও আধা-সামরিক বাহিনী। শহরের আকাশে টহল দিচ্ছে হেলিকপ্টার।

পাকিস্তানের মাটিতে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আসর বসেছিল ২০০৯ সালে। এসময় সফরকারী শ্রীলংকান জাতীয় ক্রিকেট দলকে বহনকারী বাসে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গীরা। হামলায় দলের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছয় পুলিশসহ ৮ পাকিস্তানী নাগরিক। এসময় ৭ লংকান খেলোয়াড়সহ বেশ ক’জন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছিল। এরপর থেকেই নির্বাসিত হয় পাকিস্তানের মাটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট।

তবে এবার বেশ সজাগ পাকিস্তানের প্রশাসন। আসন্ন সিরিজকে কেন্দ্র করে স্টেডিয়ামের আশপাশের সবগুলো প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে সেখানকার হোটেল ও দোকানপাট। রেডিও সিগন্যাল আটকানোর জন্য বসানো হয়েছে জ্যামার। জিম্বাবুয়ে দল বিমান বন্দরে অবতরনের সঙ্গে সঙ্গে তাদের আবাসিক হোটেলের নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে হাজার হাজার নিরাপত্তা কর্মী।

সবকিছু মিলিয়ে স্বাভাবিক টুর্নামেন্টের তুলনায় ভিন্ন মাত্রার একটি পরিবেশ বিরাজ করছে সফরকারী দলকে ঘিরে। জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক এল্টন চিগুমবুরা তো বলেই ফেললেন যে এটি তার এবং দলের জন্য নতুন এক অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, ‘সত্যি এটি আমাদের জন্য নতুন কিছু। তবে আমরা জানি কেন এমনটা করা হচ্ছে। আমাদের খেলোয়াড়রা এসব দেখে খুব একটা ভীত হচ্ছেনা। কারণ তারা জানে এসব আয়োজন পাকিস্তান করছে আমাদের জন্য, আমাদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য।

আমি মনে করি না এসব আমাদেও ওপর প্রভাব ফেলতে পারবে। এখন আমাদের প্রধাণ লক্ষ্য হচ্ছে ভাল ক্রিকেট খেলার দিকে মনোযোগ দেয়া।’

এদিকে পাকিস্তান দলের অধিনায়ক শহিদ আফ্রিদি আশা প্রকাশ করে বলেছেন যে শুক্রবার সবকিছু ছাপিয়ে সবার মনোযোগ আকর্ষণ করবে ক্রিকেট। বিশ্বকাপ এবং বাংলাদেশ সফরে দুর্বল পারফর্মেন্সের পর এখন তার প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

আফ্রিদি বলেন, ‘এই (নিরাপত্তা) ব্যবস্থাটি অত্যাবশ্যক হয়ে গেছে। আমি নিশ্চিত, শুক্রবার যখন প্রথম বল মাঠে গড়াবে তখন সবার মনোযোগ থাকবে ক্রিকেটের দিকে। কোন ধরনের হেনস্তা ছাড়াই ক্রিকেট অনুরাগীরা ক্রিকেটকে উপভোগ করতে পারবে। আমি নিশ্চিত বিপুল সংখ্যক লোক মাঠে উপস্থিত হবে।’

এদিকে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা সত্বেও করাচিতে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। তারপরও ২৭হাজার দর্শক ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন স্টেডিয়ামের সবগুলো টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে আয়োজকরা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) ম্যাচের জন্য আম্পায়ার পাঠাতে অস্বীকৃতি জানানোয় সিরিজ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছেন স্থানীয় আম্পায়ার আহসান রাজা। ২০০৯ সালের সহিংসতায় তিনিও আহত হয়েছিলেন।

ইতোপুর্বে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫টি আন্তর্জাতিক টি২০ ম্যাচ খেলেছে জিম্বাবুয়ে। তবে একটিতেও জয় পায়নি। অস্বাভাবিক পরিবেশ বিরাজ করা সত্বেও অধিনায়ক চিগুমবুরা সোরা খেলা উপহার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটের জন্য ভাল দিক হচ্ছে নির্দিষ্ট দিনে যে দলটি ভাল খেলবে সে দলটিই জয়লাভ করবে। প্রথম ম্যাচটিতেই দেখবেন আমরা সেরা খেলাটা উপহার দিচ্ছি।’