সৌদি আরবের রিক্রুটমেন্ট এজেন্সিগুলো বাংলাদেশ থেকে গৃহশ্রমিক নেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার খরচ অনেক বেড়ে গেছে। এমনই খবর দিয়েছে আরব নিউজ নামে সৌদি আরবের একটি ইংরেজি দৈনিক।
ওই দৈনিকে স্থানীয় এক রিক্রুটমেন্ট বিশেষজ্ঞ আল মেঘিমিশের বরাতে বলা হয়, খুব কম সংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিকই এখন সৌদি আরবে চাকরির অনুসন্ধান করছেন। এর ফলে এখন একজন শ্রমিককে শুধু সৌদি আরবে নেওয়ার খরচই ১ হাজার মার্কিন ডলার (৩,৭৫১ সৌদি রিয়াল) থেকে বেড়ে ১ হাজার ৮০০ ডলার (৬,৭৫২ সৌদি রিয়াল)-এ দাঁড়িয়েছে।
ফলে সৌদি আরবের শ্রম মন্ত্রণালয় একজন শ্রমিককে সৌদি আরবে নেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বমোট খরচ ৭ হাজার রিয়ালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখার যে আদেশ দিয়েছে তা মানা সম্ভব নয়। আরো বেশ কয়েকটি রিক্রুটিং এজেন্সিও একই অভিযোগ করেছে। তাদের দাবি শ্রমিক নেওয়ার খরচ আগের চেয়ে ৮০ শতাংশ বেড়ে গেছে।
তিনি আরো জানান, সৌদি শ্রম মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ থেকে যে ৫ লাখ বাংলাদেশি গৃহশ্রমিক নেওয়ার কথা বলেছিল তা বাস্তবায়নেরও কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে মাত্র চার থেকে পাঁচজন বাংলাদেশি শ্রমিককে সৌদি আরবে সরবরাহ করা হচ্ছে।
মেঘিমিশ বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সংখ্যাও অপ্রতুল। আর তাছাড়া মাত্র চার মাসের প্রশিক্ষণ দিতেও প্রায়ই অনেক বেশি সময় ব্যয় করে ফেলা হয়; যার ফলে শ্রমিকদেরকেও অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়।’
এদিকে, নেপালে সৌদি দূতাবাসের এক কর্মকর্তা সম্প্রতি বলেছেন, ‘গৃহশ্রমিক নেওয়ার ব্যাপারে নেপালের সঙ্গে সৌদি আরব শিগগিরই একটি চুক্তি করতে যাচ্ছে।’
তিনি জানান, নেপালের সরকার শর্ত দিয়েছে, শ্রমিক নেওয়ার প্রক্রিয়ায় কোনো দালাল নিয়োগ করা যাবে না। শ্রমিকদের অধিকার সংরক্ষণে তাদেরকে সরাসরি প্রেরণ করতে হবে। নেপালের স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেপালের ওই সৌদি কুটনীতিক আরো জানান, নেপালের শ্রমমন্ত্রী শিগগিরই সৌদি আরব সফরে যাবেন। আর তখনই সৌদি আরবের সঙ্গে নেপালের এ বিষয়ে একটি সমঝোতা চুক্তি সাক্ষরিত হবে। এর আগে নেপালের সঙ্গে সাধারণ শ্রমিক নেওয়ার ব্যাপারেও একটি চুক্তি হয়েছে সৌদি আরবের।
তবে নেপালি শ্রমিক দিয়ে সৌদি আরবের চাহিদা মিটবেনা বলেই জানিয়েছেন তিনি। কারণ নেপালের জনসংখ্যা কম হওয়ায় সৌদি আরবের যে পরিমাণ শ্রমিক দরকার সে পরিমাণ শ্রমিক সরবরাহ করতে পারবে না দেশটি। নেপালের জনসংখ্যা মাত্র ২ কোটি ৯০ লাখ। আর তাছাড়া নেপালের নাগরিকদের মধ্যে বিদেশে গিয়ে কাজ করার প্রবণতাও নেই তেমন একটা।