Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

যুদ্ধবিমান দিয়ে গোপনে চীনকে ঘিরে ফেলছে আমেরিকা?

fighter-planeযুদ্ধের পরস্থিতি ক্রমেই ঘনাচ্ছে দক্ষিণ চীন সাগরে। বিতর্কিত দ্বীপে রণতরী পাঠানোর পর আমেরিকা চীনকে যুদ্ধবিমান দিয়ে ঘিরতে শুরু করেছে।

জাপান আর অস্ট্রেলিয়ার কয়েকটি বিমানঘাঁটিতে ইতিমধ্যেই যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে আমেরিকা। পাল্টা জবাবে ভিয়েতনামের কাছে মহড়া শুরু করল ক্ষেপণাস্ত্রে সজ্জিত চীনা বিমানবহরও।

chardike-ad

ইউএসএস লাসেন চীন সাগরে ঢোকার পর থেকেই ওয়াশিংটনকে ক্রমাগত হুমকি দিয়ে চলেছে বিইজিং। এই চোখরাঙানির জবাব না দেওয়া আমেরিকার পক্ষে খুব একটা সম্মানজনক হবে না। তাই পেন্টাগন আর পিছু হটতে নারাজ।

দক্ষিণ চীন সাগরে ইতিমধ্যেই হাজির হওয়া মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস লাসেনকে সাহায্য করতে আরো বেশ কিছু রণতরী দক্ষিণ চীন সাগরের দিকে পাঠাচ্ছে ওয়াশিংটন।

কিন্তু, খুব গোপনে পেন্টাগন তার চেয়েও অনেক বড় প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে বলে খবর। চীনকে কিছুই জানতে না দিয়ে এফ-৩৫ এবং বি-১ বম্বার যুদ্ধবিমানের বেশ কয়েকটি স্কোয়াড্রন জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ায় মোতায়েন করে ফেলেছেন বারাক ওবামা।

বি-১ বম্বার সুপারসনিক গতিবেগ এবং দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে ভয়ঙ্কর হামলা চালানোর ক্ষমতা রাখে। অস্ট্রেলিয়ার একটি বিমানঘাঁটিতে আমেরিকা এই যুদ্ধবিমানগুলি মোতায়েন করেছে বলে খবর।

অস্ট্রেলিয়া থেকে উড়ে চীনে হামলা চালানো এই সব ফাইটার জেটগুলির কাছে অতি সহজ। চীনের আরও কাছে, জাপানে পেন্টাগন নিয়ে এসেছে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের একাধিক স্কোয়াড্রন। অবিশ্বাস্য পরিমাণ যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে আক্রমণের ক্ষমতা রয়েছে এফ-৩৫-এর।

মার্কিন যুদ্ধবিমান তাদের ঘিরছে বলে খবর পেয়েই পাল্টা শক্তিপ্রদর্শন শুরু করে দিয়েছে চীন।

চীনা নৌবাহিনীর কিছু যুদ্ধবিমান ভিয়েতনামের খুব কাছে ক্ষেপণাস্ত্র-সহ মহড়া শুরু করেছে। শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে চীনা যুদ্ধবিমানের এই ওড়াউড়ির ভিডিও চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির তরফেই প্রকাশ করা হয়েছে। কোন বিমানঘাঁটি থেকে এই যুদ্ধবিমানগুলি মহড়া দেওয়া শুরু করল, তা চীন জানায়নি। তবে ভিডিও দেখে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষিণ চীন সাগরে ভিয়েতনামের খুব কাছের একটি বিমানঘাঁটি থেকে চিনের এই মহড়া শুরু হয়েছে।

ভিয়েতনামের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক মোটেই মধুর নয়। সেই বিরোধও দক্ষিণ চীন সাগরের দখল নিয়েই। চীনা নৌবাহিনীর ভয়ে দক্ষিণ চীন সাগরে খনিজ তেল অনুসন্ধানের কাজ করতে পারছিল না ভিয়েতনাম।

অবশেষে ভারতের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে শুরু করেছে সেই কাজ। এ বার জলসীমা লঙ্ঘন নিয়ে চীন-আমেরিকা দ্বৈরথে শত্রুর শত্রুকেই বন্ধু হিসেবে বেছে নিয়েছে ভিয়েতনাম।

ফিলিপাইনের মতো ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, মালয়েশিয়া এবং এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের আর এক বড় শক্তি জাপানও এই দ্বৈরথে আমেরিকার পাশে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে।

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভিয়েতনাম উপকুলের কাছে চীনা যুদ্ধবিমানের ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে মহড়া শুরু করা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাশ কার্টার বৃহস্পতিবার দক্ষিণ চীন সাগরে মোতায়েন মার্কি রণতরী পরিদর্শণ করবেন। যুক্তরাষ্ট্র যে এ ইস্যুতে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে দৃশ্যত সেই বার্তা দিতেই তার এ সফর।

এদিকে চীন সফররত মার্কিন নৌবাহিনীর প্যাসিফিক কম্যান্ডের প্রধান অ্যাডমিরাল হ্যারি বি হ্যারিস দু’দেশের মধ্যে বাড়তে থাকা উত্তেজনাকে লঘু করেই দেখাতে চেয়েছিলেন।

সোমবার পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যানফোর্ড সেন্টারে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘অনেক পণ্ডিত এই দু’দেশের মধ্যে আসন্ন সংঘাতের ভবিষ্যদ্বাণী করছেন। আমি মনে করি না তেমন কিছু হবে।’

সূত্র: ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, আনন্দবাজার পত্রিকা