শোয়েব মালিকের নান্দনিক এক ইনিংস এবং শহিদ আফ্রিদির অলরাউন্ডার নৈপূণ্য বিফলে গেলো। তিন ম্যাচ টি-২০সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিততে জিততেও হেরে গেল পাকিস্তান। সুপার ওভারে আফ্রিদি ও উমর আকমলের ব্যর্থতার কারণে হেরে ৩-০ ব্যবধানের হোয়াইটওয়াশের লজ্জাকে সঙ্গী করে মাঠ ছাড়ে পাক বাহিনী।
ইংল্যান্ডের করা ১৫৪ রানের জবাবে ৭ উইকেট হারিয়ে ইনিংসের শেষ বলে সমান ১৫৪ রান করে আফ্রিদির দল। ফলে ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে।
সুপার ওভারে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামে পাকিস্তান। নির্ধারিত এক ওভারে মাত্র ৩ রান করতে সক্ষম হন আফ্রিদি ও উমর আকমল। ক্রিস জর্দানের করা সুপার ওভারের প্রথম বলে কোনো রান নিতে পারেননি আফ্রিদি। দ্বিতীয় বলে সিঙ্গেল নিয়ে আকমলকে স্ট্রাইক দেন পাকিস্তান অধিনায়ক। তৃতীয় বলে আকমল সিঙ্গেল নিয়ে আফ্রিদিকে স্ট্রাইক দেন।
শেষ তিন বলে পাকিস্তানের দর্শকরা আফ্রিদির কাছে বড় শটই আশা করছিল। তবে ব্যর্থ আফ্রিদি। চতুর্থ বলে মাত্র এক রান নিতে সক্ষম হন তিনি। পঞ্চম বলে আকমল কোনো রান না নিতে পারলে পাকিস্তানের পরাজয়ের পথ তৈরি হয়। আর সুপার ওভারের শেষ বলে আকমল বোল্ড হলে পাকিস্তানের হার সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।
জয়ের জন্য ৪ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে আফ্রিদির করা পঞ্চম বলে দুই রান নিয়ে দলকে জয় এনে দেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক এউইন মরগান। তার সঙ্গী ছিলেন জস বাটলার।
এর আগে জয়ের জন্য ১৫৫ রানের লক্ষ্য নিয়ে ১১.১ ওভারে ৬৫ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় পাকিস্তান। একে একে ব্যর্থতার মিছিয়ে যোগ দেন আহমেদ শেহজাদ, মোহাম্মদ হাফিজ, রাফাতুল্লাহ মোহাম্মদ, মোহাম্মদ রিজওয়ান ও উমর আকমল।
তবে ৬৫ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ষষ্ঠ ৩৮ বলে ৬৩ রানের জুটি গড়ে পাকিস্তানকে কক্ষপথে ফেরান শোয়েব মালিক ও শহিদ আফ্রিদি।
দলীয় ১২৮ রানের মাথায় আফ্রিদি ২০ বলে ২৯ রান করে ফিরে গেলে জয়ের জন্য শেষ ১৫ বলে ২৭ রান দরকার হয় পাকিস্তানের। এক প্রান্ত আগলে থাকা মালিক সেটিকে ১ ওভারে ১০ রানে নামিয়ে আনেন।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৪ উইকেট হাতে নিয়ে পাকিস্তানের দরকার ছিল ১০ রান। প্রথম বলে সিঙ্গেল নেন মালিক। দ্বিতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে পাকিস্তানের জয়কে সহজ করে তোলেন সোহেল তানভীর। তবে তৃতীয় বল ডট দিয়ে পাকিস্তানকে চিন্তায় ফেলেন তানভীর।
জয়ের জন্য শেষ ৩ বলে ৩ রান দরকার পাকিস্তানের। ক্রিস ওকসের করা ওভারের চতুর্থ বলে সিঙ্গেলস নিয়ে শোয়েব মালিককে স্ট্রাইক দিলেন তানভীর। জয়ের জন্য ২ বলে ২ রান দরকার পাকিস্তানের। পঞ্চম বলে আউট হয়ে পাকিস্তানকে বিপদে ফেলে দিলেন মালিক। শেষ বলে এক রান নেন তানভীর। ফলে ম্যাচ সুপার ওভারে গড়ায়।
পাকিস্তানে জেতাতে আপ্রাণ চেষ্টা করা শোয়েব মালিক ৫৭ বলে ৭৫ রানের দারুণ এক ইনিংস উপহার দেন। আফ্রিদি ২০ বলে ২৯ ও মোহাম্মদ রিজওয়ান করেন ২৪ বলে ২৩ রান।
এর আগে জেমস ভিঞ্চির ৪৬, ক্রিস ওকসের ৩৭ ও ৩২ রানের ইনিংসের ওপর ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৪ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড।
পাকিস্তানের হয়ে আফ্রিদি এবং সোহেল তানভীর দুটি করে উইকেট লাভ করেন। একটি করে উইকেট নেন উমর আমিন, আনোয়ার আলি ও শোয়েব মালিক।
প্রসঙ্গত, তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয় পাওয়ার পর চার ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেও জয় পায় পাকিস্তান। এরপর টানা তিন ওয়ানডের পর টানা তিনটি টি-২০ ম্যাচেও হেরে যায় আজহার আলি ও আফ্রিদির দল।