Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী দ. কোরিয়া

bd-korea-ict-seminarআন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি বাজার সম্প্রসারণে কোরিয়ার শীর্ষস্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের বাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী। ইতোমধ্যেই বেশ কিছু কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে। আশা করা যাচ্ছে ২০১৬ সালেও এই বিনিয়োগর ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।

সে লক্ষ্যে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর সক্ষমতা ও পরিকল্পনা জানানোসহ এ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার জন্য ‘Strengthening Partnership through ICT’ শীর্ষক বিনিয়োগ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেসিস, আইসিটি ডিভিশন ও কোরিয়ান দূতাবাস যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে।

chardike-ad

আজ রোববার ওয়েস্টিন ঢাকায় আয়োজিত এই সেমিনারে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশি কোম্পানি কোরিয়ার বেশ কিছু কোম্পানির সঙ্গে নেটওয়ার্কিং করার ও আগামীতে একসঙ্গে কাজ করার জন্য আলোচনার সুযোগ পান।

সকালে সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বেসিসের সভাপতি ও এফবিসিসিআই পরিচালক শামীম আহসান। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত আন সোং ডু। উপস্থিত ছিলেন বেসিসের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম রাউলি, এ তৌহিদ, বেসিসের মহাসচিব উত্তম কুমার পাল, যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, পরিচালক আশরাফ আবীর, নির্বাহী পরিচালক সামী আহমেদসহ বেসিসের সাবেক কার্যনির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দ।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, দেশে ই-গভর্নেন্স প্রতিষ্ঠায় বাংলা গভনেট একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। আর এই প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করেছে কোরিয়া। দেশে ৭ হাজারের অধিক তথ্যপ্রযুক্তি প্রফেশনালদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে বাংলাদেশ-কোরিয়া ইনস্টিটিউট অব আইটি। স্যামসাং বাংলাদেশে আরঅ্যান্ডডি সেন্টার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ৬ শতাধিক বাংলাদেশি প্রকৌশলীর কর্মসংস্থান সৃষ্ঠি করেছে। এছাড়া বিভিন্ন খাতে কোরিয়ার শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর সম্পৃক্ততা রয়েছে। তিনি কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠিত আইটি পার্কে কোরিয়ান কোম্পানির বিনিয়োগ ও অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। এছাড়া সরকারের পরিকল্পনাধীন সাইবার সিকিউরিটি ল্যাব, রিসার্স ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠায়ও সহযোগিতার জন্য কোরিয়ার প্রতি আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথি বেসিস সভাপতি শামীম আহসান বলেন, গ্লোবাল আইটি ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে কোরিয়া। অপরদিকে বাংলাদেশে মেধাসম্পন্ন অ্যাপ ডেভেলপার রয়েছে যারা আন্তর্জাতিকমানের গেইম ডেভেলপমেন্ট করতে পারে। পাশাপাশি বাংলাদেশ কোরিয়ার ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যের একটি বড় বাজার। এই দুই দেশের পারস্পরিক কৌশলগত সম্পর্ক কোরিয়ার অগ্রগতির ধারাবাহিকতা রাখবে ও প্রতিযোগিতাশীল বাজারে কোরিয়াকে শীর্ষস্থান ধরে রাখতে সহায়তা করবে। পাশাপাশি তিনি বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি কোম্পানির সফলতা ও অর্জন সম্পর্কে তুলে ধরেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত আন সোং ডু বলেন, গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে কোরিয়া। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে বাংলা গভনেট, সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন, নেটওয়ার্কিংসহ বিভিন্ন খাতে কাজ করেছে কোরিয়ার কোম্পানি। আগামীতেও বাংলাদেশে এই খাতের উন্নয়ন ও যৌথভাবে কাজ করার ধারাবাহিকতা থাকবে।

অনুষ্ঠানে এ বছর গ্লোবাল আইসিটি ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্সে প্রথম হওয়ায় কোরিয়াকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন বেসিসের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাসেল টি আহমেদ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশি কোম্পানির অংশগ্রহণে প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বেসিসের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাসেল টি আহমেদের পরিচালনায় এতে অংশ নেন ডাটা সফটের প্রধান নির্বাহী মাহবুব জামান, বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী ফাহিম মাশরুর, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক এসএম আশরাফুল ইসলাম, মাইক্রোসফটের বাংলাদেশ কান্ট্রি ম্যানেজার সোনিয়া বশির, এমসিসি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী আশরাফ আবির ও সামিট গ্রুপের পরিচালক ফাদিয়া খালেদা খান।

এরপর কোরিয়ার ৬টি কোম্পানি ও বিশ্বব্যাংক তাদের সক্ষমতা ও সম্ভাব্য সহযোগিতা নিয়ে প্রেজেন্টেশন দেয়। বেসিসের নির্বাহী পরিচালক সামী আহমেদের পরিচালনায় এতে কোরিয়ায় ই-গর্ভনেন্টের যাত্রা ও কোরিয়ার গেইম ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান ট্রেন্ডস সম্পর্কে এনআইএ কনসালট্যান্ট ইসাক কিম, বাংলাদেশে কেটি’র অতীত, বর্তমান ও ভবিষৎ সম্পর্কে কেটি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট সোহি সিন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের উপর কেস স্ট্যাডি নিয়ে স্যামসাং আরঅ্যান্ডডির সরদার মোহাম্মদ মনজুরুর রহমান, কোরিয়া ও বাংলাদেশে ই-গভর্নেন্ট সম্পর্কে এসকে সিঅ্যান্ডসি এর এশিয়া সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট হা জনসিক, বাংলাদেশে ওয়ারলেস ব্র্যান্ডব্যান্ড নেটওয়ার্ক সম্পর্কে ডেইয়ং ইউবিটেকের পরিচালক ইয়াংবিওম কিম, ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটির উন্নয়ন নিয়ে ডিলোইট্টে কোরিয়ার জিনওয়ান সিন এবং ঢাকা স্মার্ট সিটি নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের সিনিয়র আরবান স্পেশালিস্ট ক্রিস্টোফার টি. পাবলো তাদের সম্ভাব্য সহযোগিতা ও উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেন।