Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

‘বিনিয়োগের লোভেই রহস্যজনক আচরণ ভারত-চীনাদের’

barkatঅর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাত বলেছেন, বিশ্বের যে কয়টি অঞ্চলে ভালো মানের ইউরেনিয়াম রয়েছে তার মধ্যে মিয়ানমারের রাখাইন একটি। ইউরেনিয়াম ছাড়াও প্রচুর প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদ রয়েছে এখানে। ভূ-রাজনৈতিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান এই রাখাইন। বৈশ্বিক সাম্রাজ্যবাদী শক্তি এ সম্পদ আহরণে বহুমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিনিয়োগ করতে চায়। আর সেই কারণে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ‘রহস্যজনক’ আচরণ করছে ভারত ও চীনের মতো দেশগুলো।

আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিধনের প্রতিবাদ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি এ সম্মেলনের আয়োজন করে।

chardike-ad

তিনি বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর যে নির্যাতন করছে তা শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, গণহত্যা, জাতিগত নিধন ও সমাজ গোষ্ঠী হত্যা।

ড. বারকাত বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের সরকারকে বিশেষ অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক তৎপরতা প্রসারিত ও জোরদার করতে হবে। কারণ রোহিঙ্গা সংকট কোনো সাধারণ সাময়িক আপদকালীন বিষয় নয়।

মিয়ানমার সেনাদের সহিংসতা থেকে বাঁচতে গত ২৫ আগস্টের পর ৪ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। এখনো এ স্রোত অব্যাহত আছে। এ সেনা অভিযানকে জাতিসংঘ মিয়ানমার সরকারের জাতিগত নিধন বলে আখ্যায়িত করেছে। তবে তা বরাবরই অস্বীকার করছে দেশটি।

এদিকে এ ইস্যু বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশকে সহায়তা দিচ্ছে। ভারত-চীনও ইতিমধ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা পাঠিয়েছে। তবে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নেওয়ার ইস্যুতে তারা প্রকাশ্যভাবে বাংলাদেশকে সহায়তা করার ব্যাপারে স্পষ্ট সহায়তা করেনি। এমনকি রোহিঙ্গা ইস্যুতে তারা মিয়ানমার না বাংলাদেশকে সমর্থন করছে তা ‘অস্পষ্ট’।

আবুল বারকাত বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা শঙ্কিত। মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন-অত্যাচার বন্ধ না করলে বর্তমান ভয়াবহ পরিস্থিতি আস্তে আস্তে আরও ভয়ঙ্কর হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে আবুল বারকাত বলেন, ৫ লাখ রোহিঙ্গার ফলে দেশে কি পরিমাণ অর্থনৈতিক সমস্যা হতে পারে তা নির্ভর করছে তাদের থাকার ওপর। তবে শুধু অর্থনৈতিক নয়, পরিবেশগত অনেক ক্ষতি হবে। রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে আসিয়ানভুক্ত রাষ্ট্র ও প্রতিবেশি রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক কূটনৈতিক সম্পর্ক, যোগাযোগ বাড়ানোর পরামর্শ দেন এ অর্থনীতিবিদ।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চীন মিয়ানমারে যোগাযোগ, খনিজ, প্রাকৃতিক সম্পদসহ বিভিন্ন খাতে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ভূ-রাজনৈতিক সমস্যার কারণে চীন বাংলাদেশকে সমর্থন করবে না। আর মিয়ানমারে ভারতের বেসরকারি খাতে বহু বিনিয়োগ রয়েছে। বিশেষ করে এসব দেশের নজর রাখাইনের খনিজ সম্পদের দিকে। সেজন্য তারা রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের পাশে সেভাবে নেই। তারপরও বাংলাদেশকে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আশরাফ উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।