Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

মালয়েশিয়ায় মর্গে পড়ে থাকা নারীর পরিচয় মিলেছে

rojinaমালয়েশিয়ার মর্গে পড়ে থাকা বাংলাদেশি নারীর পরিচয় পাওয়া গেছে। তার প্রকৃত নাম রোজিনা আক্তার। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার একরামপুর উইলসন রোডে। রাজিয়া আক্তার নামে ভুয়া জন্মসনদ ও পাসপোর্ট করে তিনি আট মাস আগে মালয়েশিয়াতে পাড়ি জমান।

গত ৩ অক্টোবর মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালাপুরের আমপাং এলাকায় একটি অ্যাপার্টমেন্টের ৮তলা ভবন থেকে নিচে পড়ে তার মৃত্যু ঘটে। ঘটনার পর রোজিনার মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালের মর্গে রাখলেও প্রকৃত পরিচয় ও আর বাংলাদেশে থাকা অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হওয়ায় মরদেহ ফেরত পাঠানো হয়নি। সম্প্রতি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর পরিবার পরিচয় নিশ্চিত করে মালয়েশিয়াতে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে।

chardike-ad

রাজিয়া আক্তারের পাসপোর্ট নং বিএল ০৮৮৯৫১০। পাসপোর্ট অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জের বন্দরের ২০৬ এসএসশাহ রোড লেখা থাকলেও প্রকৃত ঠিকানা একরামপুর উইলসন সড়কের আব্দুল রবের মেয়ে। আট ভাই-বোনের মধ্যে রোজিনা আক্তার চার নম্বর। রোজিনার স্বামী মো. সেলিম মারা যাওয়ার পর বিগত ১০ থেকে ১২ বছর ধরে বন্দরে এক ছেলে তন্ময় ইসলাম, এক মেয়ে আফরিন আক্তারসহ মা বিমলা বেগম ও ছোট ভাই সবুজ মিয়াকে নিয়ে সেখানে বসবাস করে আসছিলেন।

রাজিয়া ওরফে রোজিনা আক্তারের মা বিমলা বেগম বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে বিদেশ থেকে (মালয়েশিয়া) এক পুরুষ (অজ্ঞাত পরিচয়) ফোন দিয়ে বলছে রোজিনা নাকি আত্মহত্যা করছে। মরদেহ পুলিশে নিয়ে গেছে। এরপর থেকেই আমরা রনি দালালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকি। কিন্তু প্রথমে কথা হলেও পরে তার মোবাইলও বন্ধ। বুধবার স্থানীয় পত্রিকায় দেখি খবর আসছে। আমার মেয়ের পরিচয়ের অভাবে মরদেহ বিদেশ থেকে দেশে পাঠাতে পারছে না। আমি আমার মেয়েকে ফিরে পেতে চাই।’

পাসপোর্টে ভুল ঠিকানার বিষয়ে বলেন, ‘আমরা কিছু বলতে পারব না। দালাল টাকা নিয়ে কোন ঠিকানা দিয়ে পাসপোর্ট করছে সেটা আমি জানি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সংসারের অভাব অনটন ও সন্তানদের ভবিষ্যতের চিন্তা করে মালয়েশিয়ায় যায় রোজিনা। স্থানীয় রনি নামে এক যুবকের মাধ্যমে আট মাস আগে কয়েক লাখ টাকা খরচ করে সে বিদেশ যায়। যাওযার পর থেকেই প্রতি মাসে ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পাঠাত। কী চাকরি পেয়েছে সেটাও কখনো বলেনি। শুধু বলত মা ভালো আছি চিন্তা করো না।’

বিমলা বেগম বলেন, ‘প্রতিদিনই রোজিনা নিজে ফোন দিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলত। আমার শরীর অসুস্থ তাই প্রতিদিন ফোন দিয়ে খোঁজ নিত আমি সময়মতো ওষুধ খাই কি না। শরীর ভালো কি না। এছাড়াও দুই সন্তান ঠিকমতো পড়ালেখা করে কি না। সবার শরীর ভালো না কি না। এসব কিছুই জানতে চাইত।’

রোজিনা আক্তারের ছোট মেয়ে আফরিন আক্তার বলেন, ‘সোমবার (২ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটায় মায়ের সঙ্গে কথা হয়। তখন মা নানিকে খুঁজছিল ফোনে। কিন্তু নানি বাজারে থাকায় কোনো কিছু বলেনি। পরে আমাদের খোঁজ-খবর নিয়ে ফোন রেখে দেয়। সেই মার সঙ্গে শেষ কথা হয়।’

ছোট ভাই মো. সবুজ বলেন, ‘মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে রোজিনার সঙ্গে কথা হয়। তখন সকলের খোঁজ-খবর নেয়। তখন রোজিনার বড় ছেলে তন্ময় ইসলাম মায়ের কাছে মোটরসাইকেল কিনে দেয়ার জন্য বলে। রোজিনা তাকে বলে পরীক্ষা শেষ করে ভালো ফলাফল করলে কিনে দেবে। সেই শেষ কথা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সিউর ছিলাম না যে আমার বোন মারা গেছে। তাই থানায় কোনো অভিযোগ কিংবা কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। পরে বৃহস্পতিবার স্থানীয় পত্রিকায় খবর পাওয়ার পর দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মরদেহ ফিরে পাওয়ার জন্য আবেদন করি। কিন্তু সেখান থেকে আগামী সোমবার যোগাযোগ করতে বলেছে।’ জাগো নিউজ