Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

পাকিস্তানিদের হাতে চলে যাচ্ছে ইজতেমার দায়িত্ব

ijtemaটঙ্গী ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশ নিতে বাংলাদেশে এসেছেন তাবলিগের মাওলানা সাদবিরোধী অংশের মুরব্বিরা। বৃহস্পতিবার বিকালে তারা ইজতেমার ময়দানে আসেন বলে নিশ্চিত করেছে ইজতেমা কর্তৃপক্ষ। তাবলিগের আলমি শূরার প্রতিনিধি হিসেবে সাতজনের এ জামাত বাংলাদেশে এসেছে। এ প্রতিনিধি দলে রয়েছেন মাওলানা আবদুর রহমান, মাওলানা ইউনুস পালনপুরী, মাওলানা আকবার শরীফ, মাওলানা আহমাদ হুসাইনসহ অন্যান্যরা।

বিশ্ব তাবলিগ এখন দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পরিচালিত হচ্ছে। তাবলিগের মূল মার্কাজ দিল্লির নিজামুদ্দীন মসজিদের মাওলানা সাদ কান্ধলভি পরিচালনা করেন। মাওলানা সাদবিরোধীরা পাকিস্তান রাইবেন্ড মার্কাজের সহায়তায় আলমি শূরা পরিচালনা করেন।

chardike-ad

বাংলাদেশের তাবলিগের মূল মার্কাজ কাকরাইল এতদিন দিল্লির নিজামুদ্দীন মসজিদের অধীনে পরিচালিত হলেও এবার ইজতেমা কেন্দ্র করে দুই দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। কাকরাইলের শূরা মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা ওমর ফারুক গত নভেম্বরে পাকিস্তানের রাইবেন্ড ইজতেমা থেকে ফিরে আলমি শূরার পক্ষে কথা বলেন। এদিকে এবারের বিশ্ব ইজতেমায় মাওলানা সাদ কান্ধলভির না আসার পক্ষে তারা অবস্থান নেন।

অন্যদিকে কাকরাইলের শূরার অন্যতম সদস্য সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, মাওলানা মোশাররফ সাদ কান্ধলভি ও নিজামুদ্দিন মার্কাজের মুরব্বিদের আসার পক্ষে থাকেন। গত ১০ জানুয়ারি মাওলানা সাদ কান্ধলভি বাংলাদেশে এলেও আলেমদের একাংশের বিরোধিতার মুখে ইজতেমায় অংশগ্রহণ না করে আবার দিল্লি ফেরত যান।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইজতেমার প্রথম পর্বে ভারত-পাকিস্তানের কোনো মুরব্বি অংশগ্রহণ করেননি। তাবলিগ জামাতের বাংলাদেশের মুরব্বিরাই ইজতেমা পরিচালনা করেন। কিন্তু দ্বিতীয় পর্বে মাওলানা সাদবিরোধী পাকিস্তানের আলমি শূরার প্রতিনিধিরা ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন।

এ বিষয়ে কাকরাইলের অন্যতম শূরা খান শাহাবউদ্দীন নাসিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গত ৯০ বছরে যে এক নিয়মে তাবলিগ জামাত পরিচালিত হচ্ছিল, সেই ধারাকে এখন ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। নিজামুদ্দিন মার্কাজের আমির মাওলানা সাদকে ইজতেমায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হলো না। তাহলে এখন তাবলিগ পরিচালনা কারা করবে? এখন আবার কাকরাইলের শূরাদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত ছাড়াই পাকিস্তানপন্থী শূরাদের নিয়ে আসা হয়েছে। এভাবে চললে ইজতেমার আবেদন আর থাকবে না।

শুক্রবার রাতে ইজতেমা ময়দানের পরামর্শ কক্ষে দেশের সব জেলার দায়িত্বশীলদের নিয়ে কাকরাইলের শুরা সদস্যরা মাশওয়ায় বসেন। এ সময় কাকরাইলের অন্যতম শুরা মাওলানা জুবায়ের বিভিন্ন জেলার দায়িত্বশীলদের সার্বিক পরিস্থিতি জানান। এ সময় তিনি বলেন, ‘মাওলানা সাদ বাংলাদেশে আসা নিশ্চিত হলে কাকরাইল মসজিদে আমরা শুরা সদস্যগন পরামর্শ করি। সেখানে সিদ্ধান্ত নিয়ে মাওলানা সাদকে অভ্যর্থনার জন্য আমরা শুরা সদস্য মাওলানা মোশাররফ ও ওয়াসিফুল ইসলামকে বিমানবন্দর পাঠাই। কিন্তু এরপর যা হয়েছে, এ সম্পর্কে কাকরাইলের শুরা সদস্যরা কিছুই জানতেন না। এরপর যে পরিস্থিতি হয়েছে, এর সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নাই।’

কাকরাইলের আরেক প্রভাবশালী শূরা সদস্য জানান, টঙ্গীর ইজতেমা সব সময় নিজামুদ্দিন মার্কাজের অধীনেই পরিচালিত হয়। আমরা সে ধারাটিই অব্যাহত রাখতে চাই। কিন্তু তাবলিগের বহিরাগত লোক দিয়ে ইজতেমা পরিচালনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ইজতেমা মাঠে অবস্থানরত কাকরাইলের অন্য মুরব্বিদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কেউ আনুষ্ঠানিক কথা বলতে রাজি হননি।

এদিকে মাওলানা সাদ কান্ধলভির প্রস্থানসহ তাবলিগের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আজ শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে তাবলিগ জামাত। শনিবার সকালে বিশ্ব ইজতেমার মুরব্বি প্রকৌশলী মো. মাহফুজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মুরব্বি মাহফুজ বলেন, দুপুরে বিদেশি মেহমানদের তাঁবুতে মাওলানা সাদ ও তাবলিগের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়েছে। ইজতেমা ময়দানের তিন নম্বর ফটকের পাশে হাজি সেলিম মিয়ার কামরায় সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।