ছয় মাস ধরে বেকার থাকার পর ধার-দেনা করে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে গিয়েছিলেন লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের বাবুল মিয়া।
সেখানে গিয়েও আড়াই মাস বেকার ছিলেন তিনি। এর পর ৩০ মার্চ গাড়ি চালানোর কাজ পান বাবুল। কিন্তু এদিন গাড়ি নিয়ে সড়কে নামতেই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান বাবুল মিয়া (৪৫)। সৌদি থেকে গ্রামের বাড়িতে এ খবর আসতেই শোকে নির্বাক হয়ে পড়েন বাবুলের স্বজনরা। বাবুলকে হারানোর পাশাপাশি তাকে বিদেশে ধার-দেনা শোধ করা নিয়ে দিশাহারা পরিবারটি। এর ওপর নতুন খবর। দাম্মামের হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে বাবুলের লাশ। সেখান থেকে দেশে লাশ আনতে হলে ছয় লাখ টাকা লাগবে।
এ অবস্থায় দরিদ্র পরিবারটি বলছে, সরকারি ব্যবস্থায় লাশ না আনা হলে তারা শেষবারের মতো স্বজনের মুখটিও দেখতে পারবে না। নিহত বাবুল রায়পুর উপজেলার দেবীপুর গ্রামের রাড়ীবাড়ির মৃত আহ্সান উল্যার ছেলে। বুধবার সকালে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, তার শোকাহত স্বজনরা মাতম করছেন। তারা জানান, ছয় মাস বেকার থাকার পর ধার-দেনা করে প্রায় তিন মাস আগে বাবুল মিয়া ড্রাইভিং ভিসায় দাম্মাম শহরে যান।
সেখানে আড়াই মাস বেকার থাকার পর গত ৩০ মার্চ নতুন করে চাকরি পান বাবুল। এর পর গাড়ি নিয়ে সড়কে বের হোন। পথে গাড়ির পেছনের চাকা অকেজো হয়ে গেলে তিনি জানালার ফাঁক দিয়ে উঁকি মেরে দেখার চেষ্টা করেন। ওই মুহূর্তে বিপরীত থেকে আসা দ্রুতগামী একটি গাড়ির ধাক্কায় তার মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই বাবুল মারা যান।
রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সফিউল আযম চৌধুরী সুমন জানান, নিহত বাবুল সহজ-সরল ও ভালো মানুষ ছিলেন। তার মৃত্যুতে পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে আমরাও শোকাহত। টাকার অভাবে বাবুলের লাশ দেশে আনতে বিলম্ব হচ্ছে জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, তার লাশ দ্রুত দেশে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতর ও মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।