Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

সৌদিতে অভ্যুত্থানের ডাক : চাচাত ভাইকে ক্ষমতা নিতে যুবরাজের অনুরোধ

saudi-princeসৌদি বাদশাহ সালমানকে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে দুই চাচাত ভাইয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির নির্বাসিত এক যুবরাজ। ওই যুবরাজ বলেছেন, তিনি অভ্যুত্থানের ডাক দেয়ার পর এর সমর্থনে দেশটির পুলিশ ও সেনাবাহিনীর অনেক সদস্যের কাছে থেকে ই-মেইলে সাড়া পেয়েছেন।

প্রিন্স খালেদ বিন ফারহান অপর দুই যুবরাজ আহমেদ বিন আব্দুলআজিজ ও মুকরিন বিন আব্দুলআজিজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, সৌদি রাজপরিবার ও দেশের যে ক্ষয়ক্ষতি বাদশাহ সালমানের নিয়ন্ত্রণহীন, নির্বোধ ও খামখেয়ালীপনা শাসনের মাধ্যমে হয়েছে তা মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।

chardike-ad

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইকে দেয়া এক স্বাক্ষাৎকারে প্রিন্স খালেদ এসব মন্তব্য করেন। সৌদি আরবের এই যুবরাজ ২০১৩ সাল থেকে জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যদি যুবরাজ আহমেদ এবং মুকরিন ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে রাজপরিবার, নিরাপত্তা বাহিনী ও সেনাবাহিনীর ৯৯ শতাংশ সদস্য তাদের পাশে দাঁড়াবে।’

যুবরাজ খালেদ সৌদি রাজপরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন এক সদস্য। ক্ষমতার উত্তরাধিকারী নির্ধারণের ব্যাপারে রিয়াদ অত্যন্ত সংবেদনশীল। রাজপরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হলেও উত্তরাধিকারের লড়াইয়ে অংশ নিতে পারেন এবং খালেদে সেই চেষ্টা করছেন।

সৌদি এই যুবরাজ বলেছেন, বাদশাহ সালমানের জীবিত বড় ভাই মাহমুদ বিন আব্দুলআজিজ সম্প্রতি এক বিবৃতিতে পুরো রাজপরিবারে বড় ধরনের অসন্তোষ বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেন।

খালেদ বলেন, ‘রাজপরিবারের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে। আমি এই তথ্য পাওয়ার পর বাদশাহ সালমানের উচ্চশিক্ষিত দুই ছেলে আমার চাচাত ভাই আহমেদ এবং মুকরিন; যারা ভালো বুদ্ধিমান এবং আরও ভাল পরিবর্তন আনতে সক্ষম তাদের অনুরোধ জানিয়েছি। আমি বলেছি, আমরা সকলেই তাদের সঙ্গে আছি এবং তাদের প্রতি আমাদের সমর্থন রয়েছে।’

সৌদি যুবরাজ আহমেদ আব্দুলআজিজ দেশটির সাবেক স্বরাষ্ট্র উপমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার প্রতি নিরাপত্তাবাহিনী ও উপজাতিদের গুরুত্বপূর্ণ অংশের সমর্থন এখনো রয়েছে। এছাড়া যুবরাজ মুকরিন ২০১৫ সালের এপ্রিলে মোহাম্মদ বিন নায়েফের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে ক্রাউন প্রিন্স নিয়োগ পেয়েছিলেন। পরে ২০১৭ সালের জুনে তাকে সরিয়ে মোহাম্মদ বিন সালমানকে ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। সৌদি এই যুবরাজ বিদেশি গণমাধ্যমে সংক্ষেপে ‘এমবিএস’ নামে পরিচিত।

প্রিন্স খালেদ বলেছেন, ‘তিনি অভ্যুত্থানের ডাক দেয়ার পর এর সমর্থনে সেনাবাহিনী ও পুলিশের অনেক সদস্যের কাছে থেকে ই-মেইল পেয়েছেন। আমি তাদের এসব মেইলে বুঝতে পেরেছি যে, সৌদি আরবের বর্তমান পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য তারা দাবি জানানোর পরিবর্তে প্রিন্স আহমেদ বিন আব্দুলআজিজের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন

সৌদি আরবের দুর্নীতিবিরোধী ধরপাকড়ের সময় ব্যাপক নিপীড়নের ব্যাপারে কথা বলেছেন খালেদ। রাজপরিবারের অনেক সদস্যকে গ্রেফতারের পর অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছেন যুবরাজ এমবিএস।

খালেদ বলেন, সাবেক বন্দিরা এখনো মুক্ত নয়। তাদের পায়ে মনিটরিং ডিভাইস বসানো হয়েছে। মোবাইল ফোন মনিটরিং করা হচ্ছে। এমনকি রাজ্যের বাইরে যেতে দেয়া হচ্ছে না তাদের। তারা অপমানজনক পরিস্থিতিতে বসবাস করছেন।

দেশটির রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে প্রিন্স খালেদ বলেন, ‘প্রতিনিধি নির্বাচনের একক ক্ষমতা বাদশাহর, এতে কারো কোনো ক্ষমতা নেই। তবে নতুন কোনো বাদশাহ এলে সব পরিস্থিতির পরিবর্তন আসবে।’

বাদশাহ সালমানের প্রতি নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রিন্স খালেদ। তার মিসরীয় মাকে তালাক দিতে বাদশাহ সালমান খালেদের বাবাকে বাধ্য করেছিলেন বলে জানান তিনি। বাদশাহকে বর্ণবাদী হিসেবে উল্লেখ করে সৌদি এই যুবরাজ বলেন, তার বোনের কুয়েতি স্বামীকেও তালাক দিতে বাধ্য করেছিলেন বাদশাহ।

যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সম্প্রতি বলেন, আগামী ৫০ বছর দেশ শাসন থেকে তাকে বিরত রাখতে পারে একমাত্র মৃত্যু। প্রিন্স খালেদ বলেন, আমি তাকে একটি প্রশ্ন করতে চাই। সে কী সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে চুক্তি করে নিয়েছে যে, ৫০ বছর বেঁচে থাকবে। এটার নিশ্চয়তা সে কীভাবে দিতে পারে?

সৌজন্যে- জাগো নিউজ