Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

‘বেত দিয়ে মারত, খুন্তির ছ্যাঁকা দিত, ঠিকমতো খেতে দিত না’

saudiঅভাবের সংসারে সচ্ছলতা আনতে দালালের মাধ্যমে সৌদি পাড়ি জমান বরিশালের রোকসানা (ছদ্ম নাম)। কিন্তু সৌদি শেখদের অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে মাত্র চার মাসেই পালিয়ে দেশে ফিরতে হয়েছে মধ্য বয়সী এই নারীকে। বিদেশে নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফিরে আসা ২০ জন নারীকে এক লাখ টাকা করে নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক এবং লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারাস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি)। সেই ২০ নারীর একজন এই রোকসানা।

সোমবার ব্র্যাক সেন্টারে কথা হয় তার সাথে। সৌদি যাওয়া ও শেখদের নির্যাতনের বিষয়ে কথা বলেন তিনি। রোকসানা জানান, মাস চারেক আগে দালালের মাধ্যমে অল্প কিছু টাকা দিয়ে সৌদি যান তিনি। কিন্তু যে বাড়িতে কাজ করতেন, সেই বাড়ির মালিক ও ছেলের নির্যাতন সইতে না পেরে ব্র্যাকের সহায়তায় দেশে ফিরে এসেছেন। রোকসানা বলেন, সৌদি যাওয়ার সময় দালাল বলেছিল মাসে ১ হাজার রিয়াল দেবে। কিন্তু প্রথম মাস শেষে দেয় ৮০০ রিয়াল। শুধু টাকাই কম দেয়নি, নিয়মিত খেতেও দিত না। কথায় কথায় মারধর করত। মারার জন্য বাড়িতে বেত ছিল। সেই বেত দিয়ে মালিক মারত। আবার কাজে একটু ভুল হলে খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দিত।

chardike-ad

তিনি বলেন, প্রথম দুই মাস বেতন দিলেও পরের দুই মাস আর কোনো বেতন দেয়নি। বেতন আটকে দেয়ার পর ঠিকমতো খেতেও দিত না। একটু কিছু হলেই রুমের মধ্যে আটকে রাখত, তালা দিয়ে রাখত।

তিনি বলেন, ‘যে বাড়িতে কাজ করতাম, সেই বাড়িতে অনেক মানুষ ছিল। ছেলেই ছিল ৫টা। মোট ১২-১৩ জন মানুষ থাকত। বাড়ির সব কাজ আমাকে করতে হতো। ভোরে আজান দেয়ার সময় উঠতাম। আর ঘুমাতে যেতাম রাত ১২টা বা ১টার সময়’ বলেন রোকসানা।

তিনি বলেন, চার মাসের মতো কাজ করেছি। এ সময়ের মধ্যে প্রায় আমাকে মারত। কাজে একটু কিছু হলেই মারত। বেত দিয়ে মারছে ৭-৮ দিন। ম্যাডামে খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দিয়েছে কয়েক দিন। এছাড়া নানাভাবে নির্যাতন করেছে। এরপর একদিন ওদের ছেলে আমার গায়ে হাত তোলে। তখন পালিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিই।

কিভাবে পালিয়ে আসলেন? এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, একদিন বাইরে ঝাড়ু দেয়ার কথা বলে পালিয়ে আসি। পালিয়ে পুলিশের কাছে ধরা দেই। পুলিশ মক্তবে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে এক মাস থাকার পর দেশে ফিরে আসছি।

সৌজন্যে- জাগো নিউজ