Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

‘গুহায় শুধু পানি খেয়ে ১০ দিন পার করেছি’

thai-boys-football-temaথাইল্যান্ডের গুহা থেকে উদ্ধার হওয়া কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচ হাসপাতাল ছেড়েছে। গত সপ্তাহে দেশটির উত্তরাঞ্চলের চিয়াং রাই প্রদেশের থাম লুয়াং গুহা থেকে তাদের উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী চিয়াং রাই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সেখানে কয়েকদিনের জটিল চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে বুধবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যায় হাসপাতাল ছাড়ে খুদে ফুটবলাররা। এ সময় একটি সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেয় ওই ১২ জন খুদে ফুটবলাররা ও তাদের কোচ। সংবাদ সম্মেলনে খুদে ফুটবলাররা গুহায় কাটানো দিনগুলির ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেয়।

chardike-ad

থাইল্যান্ডে টানা ১৭ দিন জলডোবা অন্ধকার গুহায় শুধু পানি খেয়েই ১০ দিন কাটিয়ে দেয় খুদে ফুটবলাররা। প্রবল প্রাণশক্তিতেই তারা বেঁচেছিলো। শুধু পানি পান করেই তীব্র ক্ষুধা জয় করেছে তারা। ফুটবলারা বলেছে, গুহায় আটকে থাকার নয়দিন পর ডুবুরিরা যখন তাদের খুঁজে পায় সেই মুহূর্তটি তাদের কাছে ‘জাদুকরী’ বলে মনে হয়েছে।

উদ্ধার হওয়ার পর বুধবারই প্রথম ১২ কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচ জনসম্মুখে আসে। থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। এ সময় তাদের সঙ্গে চিকিৎসক ও আত্মীয়-স্বজন উপস্থিত ছিলেন। থাইল্যান্ডসহ সারাবিশ্বের দর্শক উন্মুখ হয়েছিল খুদে ফুটবলারদের জীবন জয়ের গল্প শোনার জন্য।

নিজ দলের প্রতীক ‘বন্য শূকর’ ছাপা টি-শার্ট পরে এবং ফুটবল হাতে কিশোর দলটি মঞ্চে প্রবেশ করে। তাদের পেছনে থাই হরফে ‘বন্য শূকরকে বাড়ি আনা হচ্ছে’ লেখা বিশাল একটি ব্যানার টাঙানো ছিল। অনুষ্ঠানের মঞ্চটি সাজানো হয়েছিল পুরো একটি ফুটবল মাঠের আদলে৷ সেখানে ফুটবল নিয়ে এসে খেলতে খেলতেই কথা বলেছে কিশোররা। আর তখনই সবাই জানতে চাইলো গুহায় আটকে থাকা তাদের ১৭ দিনের অজানা কথা৷ টিন নামে এক কিশোর বলে, ১০ দিন আমরা শুধু পানি খেয়েছি। তবে ধীরে ধীরে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি। কিন্তু মনোবল হারাইনি।

দলের সবচেয়ে ছোট সদস্য তিতান বলে, খাবারের কথা ভাবায় আমার বেশি ক্ষুধা লাগেনি। তবে শেষ মুহূর্তে শক্তি হারিয়ে ফেলি। শুধু মায়ের কথা ভেবে ভয় হচ্ছিল, দ্রুত বাড়ি ফিরে না গেলে বকা খেতে হবে। অন্যদিকে গুহায় প্রবেশ করাকে ‘দুষ্টুমি’ উল্লেখ করে সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছে টিনা।

গত ২৩ জুন বার্ষিক ভ্রমণে উত্তরাঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায় গিয়ে হারিয়ে যান ১১-১৬ বছর বয়সী ১২ ফুটবলার ও ২৫ বছর বয়সী কোচ। পরে ২ জুলাই চিয়াং রাই প্রদেশের থাম লুয়াং গুহায় তাদের সন্ধান পায় ব্রিটিশ ও থাই ডুবুরি দল। এরপর ৮ জুলাই থেকে ১০ জুলাই তিনদিনের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে তাদের উদ্ধার করা হয়।

এরপর থেকে তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। এখন বাড়ি ফিরে স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করে দিয়েছে মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখে আসা খুদে ফুটবলাররা।