Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ওমানে প্রবাসীদের বিপদে নিবেদিত প্রাণ শফিকুল ইসলাম

shofikulমানুষের বিপদে মানুষই এগিয়ে আসবে, এটাই স্বাভাবিক। শত ব্যস্ততার মাঝেও প্রবাসীদের মাঝে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন ওমানে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী মুহাম্মাদ শফিকুল ইসলাম ভূইয়া। প্রবাসে কেউ বিপদে পড়লে পাশে না দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না। মানুষের উপকার করায় যেন তার নেশা। বাংলাদেশি থেকে শুরু করে ওমানি পাকিস্তানি, ইন্ডিয়ান সবার কাছেই পরোপকারী নামে পরিচিত।

দেশটিতে বসবাসরত ৮ লাখ বাংলাদেশির যে কোনো বিপদে-আপদে সহযোগিতা করায় তাকে ‘পিলার অব বাংলাদেশ’ উপাধি দিয়েছে ‘টাইমস অব ওমান’। মুহাম্মাদ শফিকুল ইসলাম ভূইয়া একজন সফল বাংলাদেশি। দীর্ঘ ৪০ বছর যাবত এই বাংলাদেশি ওমানে প্রবাস জীবন-যাপন করছেন।

chardike-ad

জানা গেছে, ১৯৮০ সালে ভাগ্য বদলের আশায় ওমান আসেন। শুরুতে অন্য দশজনের মতই তার যাত্রা। আট বছর কনস্ট্রাকশন ফোরম্যান এর চাকরি করেন। সেখান থেকে ওমানের যুব ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চাকরি। ১৯৮৭ সাল থেকে ২০০৮ সাল নাগাদ দীর্ঘ ২১ বছর অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে চাকরি করেন।

২০০৮ সালে দেশটিতে ওমানিকরণ করায় তার চাকরি চলে যায়। এরপর শুরু করেন ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা, নিউ স্টার ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস এলএলসি নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে এগিয়ে যান যোগ্যতা ও দক্ষতা দিয়ে।

ওমানে এসে অল্প কিছুদিনের ভেতর আরবি ভাষা আয়ত্ত করে ফেলেন এ বাংলাদেশি। খুব অল্পতেই আপন করে নেন ওমানিদের। দেশটিতে দীর্ঘ ২০ থেকে ৩০ বছর যাবত বসবাস করছে এমন সিনিয়র বাংলাদেশি প্রবাসীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, শফিকুল ইসলাম ভূইয়া মানুষের উপকারের জন্য রাত ৩টায় ডাকলেও সে ছুটে চলে যান সহযোগিতা করতে। শত্রুর বিপদেও উপকার করতে পিছপা হন না বিন্দুমাত্র।

সুলতান কাবুস ইউনিভার্সিটির ডিন থেকে শুরু করে ওমান প্রেস ক্লাবের সেক্রেটারিসহ ওমানের বিভিন্ন মুদির থেকেও শফিকুল ইসলাম ভূইয়ার ভূয়সী প্রশংসা শোনা যায়। মূলত শফিকুল ইসলাম ভূইয়া শ্রমিকদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কাজ করে।

শফিকুল ইসলাম ভূইয়া বাংলাদেশ সোশ্যাল ক্লাব ওমানের একজন ফাউন্ডার মেম্বার, ট্রেজারার হিসেবে দু’বছর, এরপর সেক্রেটারি হিসেবে ৪ বছর কাজ করেছেন। সবশেষে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দীর্ঘ ৫ বছর প্রবাসীদের জন্য কাজ করেছেন অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে। সোশ্যাল ক্লাবের প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় অসহায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের ফ্রি চিকিৎসা, জেলে থাকা অসহায় শ্রমিকদের দেশে যেতে ফ্রি টিকিটসহ মরদেহ দেশে পাঠাতে আর্থিক সহযোগিতা করেছেন বহু প্রবাসীকে।

২০১৬ সালে ওমানে এক বাংলাদেশির হার্ট অপারেশনের জন্য বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১২ লাখ টাকা হসপিটালের বিল আসে। শফিকুল ইসলাম ভূইয়ার সুপারিশে সমস্ত বিল মওকুফ করে দেয় হসপিটাল কর্তৃপক্ষ।

শফিকুল ইসলাম ভূইয়ার ওমানে রয়েছে নিজস্ব ট্রাভেল এজেন্সি ও পেট্রোল পাম্পের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। রুই ও আল খোয়ের এরিয়াতে নিউ স্টার ট্রাভেল এজেন্সি ও মাস্কাটের গালাতে রয়েছে আল-মাহা পেট্রোল পাম্প। দীর্ঘদিন যাবত স্বপরিবারে ওমানে বসবাস করছে এই বাংলাদেশি। তিন ছেলের ভেতর তিনজনই অত্যন্ত মেধাবী, তিনজনই মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটিতে পড়ালেখা করছেন।

বাংলাদেশি এই সফল মানুষটির সঙ্গে আলাপ করলে তিনি অত্যন্ত আক্ষেপ করে বলেন, ওমানে আজ জনসংখ্যার দিক থেকে আমরা (বাংলাদেশিরা) এক নম্বরে। আমাদের মাঝে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। আজ যদি বাংলাদেশ অ্যাম্বাসি থেকে ওমানের সিনিয়র ব্যবসায়ীদের নিয়ে বসা হতো, তাহলে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দূতাবাসের সম্পর্ক আরো গভীর হত।

তিনি বলেন, সেইসঙ্গে সবাই দূতাবাস ও ব্যবসায়ীরা মিলে অনেক কাজ করা যেতো। বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যেত। যেমন দেখেন, আমার সঙ্গে ওমানের অনেক মন্ত্রী থেকে শুরু করে ওমানের লেবার কোর্টেও ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এভাবে অনেক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অনেক সিনিয়র ওমানিদের সম্পর্ক রয়েছে। সুতরাং এই সম্পর্কগুলো দূতাবাস চাইলে কাজে লাগাতে পারে।’

উল্লেখ্য, সম্প্রতি জনপ্রিয় পত্রিকা টাইমস অব ওমানে এ বাংলাদেশির ভূয়সী প্রশংসা করে প্রতিবেদন প্রচার করেছেন।

সৌজন্যে- জাগো নিউজ