Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

প্রবাসীরা ভোট দিতে পারবেন, তবে…

electionবাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসীরাও দেশের বাইরে থেকে ডাকের মাধ্যমে ভোট দেয়ার সুযোগ পাবেন। কোনো প্রবাসী দেশে ভোটার থাকলে তিনি বিদেশে থাকলেও ডাকযোগে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন।

ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দূতাবাস ও কনস্যুলেটের ওয়েবসাইটে দেয়া আছে। তবে আগে থেকে এ নিয়ে তেমন কোনো প্রচার-প্রচারণা চালায়নি ইসি। ফলে প্রবাসীরা ডাকযোগে ভোট দেয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে তেমন জানেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।

chardike-ad

দেশের বাইরে থাকলেও প্রবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন, তারা দেশের নির্বাচনে ভোট দিতে চান। কিন্তু এ নিয়ে অতীতেও তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। এবার উদ্যোগ নিলেও এই ভোট নিয়ে প্রবাসীদের মধ্যে কোনো প্রচার চালানো হয়নি।

ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যালট পেপারের জন্য বিদেশ থেকে ডাকযোগে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করতে হবে। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ডাকযোগে আবেদন পৌঁছানোর পর প্রবাসীর দেয়া বিদেশের ঠিকানায় ডাকযোগে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। তারপর পছন্দের প্রতীকে ভোট দিয়ে পুনরায় ডাকযোগে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আগামী ৩০ ডিসেম্বরের আগে ফেরত পাঠাতে হবে।

ইসির নির্দেশনায় বলা হয়, প্রবাসী যাদের বাংলাদেশের ন্যাশনাল আইডি কার্ড আছে, যারা নির্বাচনের সময় ভোট দিতে বাংলাদেশে যাবেন না এবং ডাকযোগে ব্যালটের মাধ্যমে বিদেশ থেকে ভোট দিতে আগ্রহী, তাদের শিগগিরই নিজ নিজ জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে (জেলা প্রশাসক) পোস্টাল ব্যালটের জন্য আবেদন পাঠাতে হবে। আবেদনে ন্যাশনাল আইডি কার্ডের নম্বর, ন্যাশনাল আইডি কার্ডের অন্য পৃষ্ঠায় থাকা ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে। নির্বাচন কমিশন গত ৩০ নভেম্বর পরিপত্র জারি করলেও দূতাবাস ও কনস্যুলেট অফিসের ওয়েবসাইটে ১০ ডিসেম্বর থেকে তা দৃশ্যমান হচ্ছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশি স্কলার ইউনিভার্সিটি তেনাগা ন্যাশনাল মালয়েশিয়ার প্রফেসর ড. নওশাদ আমিন বলেছেন, মালয়েশিয়ার নাগরিক বসবাস করেন কানাডায়। ওই মালয়েশিয়ান নাগরিক কানাডায় থেকে তার দেশের জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন। বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে ‘অ্যাবসেন্টি ব্যালট সিস্টেম’ চালু আছে। যেমন- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকেই ভোট দিতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকরা যদি ভোট না দেন সেক্ষেত্রে তাদের জরিমানা করার ব্যবস্থা আছে।

প্রবাসী জাপানি নাগরিকরাও ভোট দিতে পারেন। কানাডার নাগরিকরা যারা স্বল্পকালীন অথবা দীর্ঘকালীনের জন্য কানাডার বাইরে আছেন তাদের জন্য রয়েছে মেইলিং পোলিং সিস্টেম, আর যারা ভোটদানের নির্ধারিত তারিখের আগেই কানাডা ছাড়বেন, তাদের জন্য রয়েছে অ্যাডভান্স পোলিং সিস্টেম। বিশ্বের অন্যতম রেমিটেন্স গ্রহণকারী দেশ ফিলিপাইনও তার প্রবাসী নাগরিকদের জন্য ভোটের ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে। হংকং, থাইল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুরেও আছে অপটিক্যাল স্ক্যানিং ভোটিং সিস্টেম।

প্রফেসর ড. নওশাদ আমিন আরও বলেন, দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স জাতীয় প্রবৃদ্ধির ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ অবদান রেখে চলেছে।

পৃথিবীর প্রায় ১২০টি দেশ বিদেশে থাকা তাদের প্রবাসী নাগরিকদের জন্য ভোটাধিকারের ব্যবস্থা করে রেখেছে। কিন্তু বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়ে এখনো প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান কিংবা ভোটাধিকার দিতে পারেনি। শুধু যেসব প্রবাসী দেশে গিয়ে ভোটার হয়েছেন, তারাই ডাকযোগে ভোট দিতে পারবেন।

ভোট দিতে ইচ্ছুক প্রবাসীদের তালিকা নির্বাচন কমিশনে আলাদাভাবে জমা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে প্রবাসীদের ভোটাধিকার বাস্তবায়নের দাবিতে কর্মরত সংগঠন প্রবাকস। ভোট দিতে ইচ্ছুক প্রবাসীদের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ডাকযোগে প্রদত্ত আবেদনের কপি প্রবাকসের কো-অর্ডিনেটর ওমর আলীর কাছে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে ই-মেইলে (omarali1971@gmail.com) পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সৌজন্যে- জাগো নিউজ