বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাসে স্থবির হয়ে পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য। রফতানি খাতে খরা। মন্দা অবস্থায় অর্থনীতি। এ সঙ্কটময় পরিস্থিতিতেও দেশের অর্থনীতিতে স্বস্তি দিচ্ছে প্রবাসীদের আয় (রেমিট্যান্স)। মে মাসের ২৮ দিনে দেশে ১৩৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় (বিনিময় হার ৮৫ টাকা ধরে) যার পরিমাণ ১১ হাজার ৩৪৭ কোটি
মহামারি করোনাভাইরাসের এ সংকটময় সময়ে অর্থনীতিতে স্বস্তি জোগাচ্ছে প্রবাসীদের কষ্টের অর্থ রেমিট্যান্স। ঈদ সামনে রেখে দেশে টাকা পাঠানোর প্রবণতা বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রবাসীরা। চলতি মে মাসের প্রথম ১৪ দিনে মহামারির মধ্যেও প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা)। যা গত বছরের
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রকোপে স্থবির সারাবিশ্ব। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধ রয়েছে প্রায় সব দেশের কল-কারখানা। কাজ না থাকায় ঘরেই বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম খাত রেমিট্যান্সের ওপর। মালয়েশিয়া থেকে প্রতিমাসে বৈধপথে ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে যেখানে ১৫ থেকে ১৭ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স প্রবাসীরা দেশে পাঠাতেন।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে পুরো বিশ্বে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। বন্ধ রয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য। কঠিন সময় পার করছেন বিদেশের মাটিতে থাকা বাংলাদেশি প্রবাসীরা। যার বড় ধাক্কা লেগেছে দেশের রেমিট্যান্সে। গেল এপ্রিলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ১০৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের (প্রায় ৯ হাজার ১২৩ কোটি টাকা) রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যা গত
পৃথিবীব্যাপী নভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর বিস্তার প্রতিরোধে ‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে দেশের প্রিয়জনদের কাছে রেমিটেন্স পাঠাতে অনলাইন-টু-ওয়ালেট সেবার উপর ভরসা রাখছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বিশেষ প্রয়োজনের এ সময়টিতে প্রবাসী এবং দেশে অবস্থানকারী প্রিয়জন উভয়ই ঘরে অবস্থান করায়, অর্থ প্রেরণকারী বাইরে না গিয়ে তার নিজের মোবাইল থেকে অনলাইন অথবা ওয়ালেট ভিত্তিক মানি ট্রান্সফার
আট ঘণ্টার ব্যবধানে সৌদি আরবের মক্কায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাফেজ রুহুল আমিন (৪১) নামে এক রেমিট্যান্স যোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় রাত ৩টার দিকে রুহুল আমিন মারা যান। হাফেজ রুহুল আমিন রামু উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সিকদারপাড়ার পূর্ব নয়াপাড়া গ্রামের মরহুম মোহাম্মদ শফির ছেলে। রুহুল আমিনের
নগদ প্রণোদনা প্রদান ও টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্য বৃদ্ধিতে বৈধপথে বাড়ছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি। গত বছর একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৪১ কোটি ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ
হুন্ডি প্রতিরোধে কড়াকড়ি ও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে নানা উদ্যোগসহ ডলারের বিপরীতে বেশি টাকা পাওয়ায় ব্যাংকিং চ্যানেলে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকেও রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। গেল মাস আগস্টে মধ্যপ্রাচ্যের ছয়টি দেশ থেকে ৮৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে অর্থ্যাৎ জুলাই ও আগস্টে প্রবাসীরা ৩০৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যা বাংলাদেশি টাকায় ২৭ হাজার ১০৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এর মধ্যে গত আগস্টে রেমিট্যান্স আসে ১৪৮ কোটি ২৮ লাখ ডলার, আর জুলাই মাসে এর পরিমাণ ছিল ১৫৯ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। চলতি
প্রবাসীদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে ২০১০ সালে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে সরকার। কিন্তু আজ পর্যন্ত ব্যাংকটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বড় কোনো ব্যাংকে ‘নস্ট্রো অ্যাকাউন্ট’ খুলতে পারেনি। তাই এ ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারছে না প্রবসীরা। অথচ ব্যাংকটি কৌশলগত উদ্দেশ্যসমূহের প্রথমেই রয়েছে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বৃদ্ধিতে সহায়তা প্রদান। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য