চলতি বছর বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্যামসাং। কোম্পানিটির বিভিন্ন কারখানা, গবেষণা কেন্দ্রের উন্নয়ন ও বায়োফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে ৫০ ট্রিলিয়ন উওন (৪ হাজার ৭৪০ কোটি ডলার) ব্যয় করতে যাচ্ছে কোম্পানিটি। গতকাল রোববার কোম্পানিটির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। খবর ইয়োনহাপের।
কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন কারখানা, গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগে ক্রমান্বয়ে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে স্যামসাং। এর আগে ২০১১ ও ২০১২ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগ করেছে যথাক্রমে ৪২ ট্রিলিয়ন ও ৪৯ ট্রিলিয়ন উওন। সূত্রটির পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়, আগামী মাসে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি স্মার্টফোন নির্মাতা স্যামসাং ইলেকট্রনিকস কোম্পানি ও স্যামসাং এভারল্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ প্রত্যেকে স্যামসাং বায়োলজিকস কোম্পানির জন্য ৮ হাজার ৪৭০ কোটি উওন করে বিনিয়োগ করবে। পাশাপাশি চলতি বছরের আগস্ট নাগাদ কোম্পানি দুটি সব মিলিয়ে ৬০ হাজার কোটি উওন বিনিয়োগেরও ঘোষণা দিয়েছে।
২০১১ সালে প্রতিষ্ঠা হয় স্যামসাং বায়োলজিকস। মূলত ইলেকট্রনিকস ও মোবাইল ডিভাইসের বাইরে কোম্পানিটির ব্যবসাকে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এটি চালু করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় কোম্পানিটি নতুন এ আয়ের খাতকে শক্তিশালী করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। চলতি বছর তাদের মোট বিনিয়োগের প্রায় অর্ধেকই যাবে এ খাতে।
বর্তমানে স্যামসাং বায়োলজিকসের একমাত্র কারখানা রয়েছে, যাতে রয়েছে মাত্র দুটি বায়োরিয়েক্টর (কোষ তৈরিতে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিকারী যন্ত্র)। ২০১৫ সালের মধ্যে কোম্পানিটি নতুন আরেকটি কারখানা খোলার পরিকল্পনা করছে, যেখানে ১০টি বায়োরিয়েক্টর স্থাপন করা হবে। স্যামসাং বায়োলজিকসের এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে বিশ্ববাজারে বায়োলজিকসের চাহিদা অনেক। এ বিশাল চাহিদা মেটানোর জন্যই তারা দ্বিতীয় কারখানাটি চালু করতে যাচ্ছে। গত বছর স্যামসাং বায়োলজিকস ব্রাসেলসভিত্তিক সুইস লচ গ্রুপ ও ব্রিস্টল মায়ারস স্কুইবের (বিএমএস) সঙ্গে চুক্তি করে।
পাশাপাশি চলতি বছর স্যামসাং তাদের গতানুগতিক ব্যবসারও সম্প্রসারণ করবে। এর মধ্যে স্যামসাং ডিসপ্লে কোম্পানি তাদের আসানের কারখানাটি সম্প্রসারণ করবে। এর মাধ্যমে ওএলইডি ডিসপ্লে উৎপাদন করা হয়ে থাকে। স্যামসাং ডিসপ্লের একজন কর্মকর্তা জানান, বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা এ সম্প্রসারণ কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন। এজন্য তাদের মোট খরচ হবে ৩-৫ ট্রিলিয়ন ওন।
পাশাপাশি আগামী বছর স্যামসাং ইলেকট্রনিকস তাদের মোবাইল চিপ নির্মাণ কারখানা সম্প্রসারণ কাজ হাতে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এজন্য খরচ হবে ২ দশমিক ২৫ ট্রিলিয়ন উওন।
চলতি বছরের মধ্যভাগের মধ্যে চীনের জিয়ান শহরে কোম্পানিটির মোবাইল চিপ ও আরঅ্যান্ডডি (গবেষণা ও উন্নয়ন) কারখানার কাজ শেষ হবে। একই সঙ্গে তাদের সিউলের আরঅ্যান্ডডির কাজও শেষ পর্যায়ে। অন্যদিকে ভিয়েতনামে কারখানা স্থাপনের জন্য তারা এরই মধ্যে ৭৫ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। সূত্রঃ বণিকবার্তা।