Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

মিটিংয়ে যেতে না চাওয়ায় শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পেটালেন ‘ছাত্রদল কর্মী’

 

chardike-ad

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল কর্মী তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টটিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৭তম আবর্তনের মোহাম্মদ কাউসার।

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাত ১১টায় শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের ১০০৪নং রুমে এ ঘটনা ঘটে। বিচার চেয়ে হল প্রভোস্টের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন মোহাম্মদ কাউসার।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, নবীন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদল কীভাবে কাজ করবে তা নিয়ে মতবিনিময় করার জন্য হলের ৪০০৪ নম্বর কক্ষে মিটিং ডাকেন ছাত্রদলের আহ্বায়ক মামুনের অনুসারী ও শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত হলের ১৬তম আবর্তনের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদল কর্মী মাজাহারুল ইসলাম আবির ও মাহদুজ্জামান ইপেল। এ ছাড়াও ওই কক্ষে উপস্থিত ছিলেন জুনায়েদ লামিম ও মেহেদী হাসান শাহিন। জুনিয়রদের মিটিংয়ে ডাকার দায়িত্ব পান ১৭তম আবর্তনের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তোফায়েল মাহমুদ নিবিড় ও অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম।

এ সময় তৌহিদ ১০০৪নং রুমে এসে কাউসারকে মিটিংয়ের যাওয়ার জন্য জোর করে। কাউসার অপারগতা প্রকাশ করলে তৌহিদ মশারি ছিঁড়ে ফেলে। এ সময় যাবে না বলে ধাক্কা দিলে সঙ্গে সঙ্গে তৌহিদ বাইরে থেকে কাঠের তক্তা নিয়ে এসে মারতে শুরু করে। এ সময় আরেক ছাত্রদল কর্মী তোফায়েল মাহমুদ নিবিড় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, রাত ১১টায় আমি রুমে ঘুমাচ্ছিলাম। তখন ছাত্রদল কর্মী তৌহিদ আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে উপরে যেতে বলে। আমি ঘুমাব বলে যেতে অস্বীকৃতি জানাই। কিন্তু সে কিছুতেই শোনে না এবং আমার ওপর জোরাজুরি করে। একপর্যায়ে আমার মশারি টান দিয়ে ছিঁড়ে ফেলে এবং গালিগালাজ শুরু করে। তখন আমি ধাক্কা দিয়ে বলি চলে যেতে। কিছুক্ষণ পর এসে কাঠের তক্তা দিয়ে মাথা বরাবর পাঁচ-ছয় বার আঘাত করে, তখন আমি হাত দিয়ে কোনো রকমে নিজেকে রক্ষা করি।

অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী মোহাম্মদ তাওহীদুল ইসলাম জানান, ১৭তম আবর্তনের আমরা সবাই মিলে বসব, কথাবার্তা বলব এজন্য আমি তাকে ডাকতে যাই রুমে। রুমে গিয়ে দেখি সে মশারির ভিতরে শুয়ে আছে। আমি ডাকলেও, সে ওঠেনি। তারপর আমি তার মশারি উঠালে সে আমাকে ধাক্কা দেয়। তখন আমি তাকে গাছের তক্তা দিয়ে তিন-চারটা বাড়ি দিই।

ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুনের কর্মী কিনা এ বিষয়ে জানত চাইলে তিনি বলেন, আমার সঙ্গে ভাইয়ের ব্যক্তিগত সম্পর্ক আছে আর কিছু না।

হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১৬তম ব্যাচের জুনায়েদ লামিমকে মিটিংয়ের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না। মিটিং ডাকা হয়েছিল ১৮তম আবর্তনের শিক্ষার্থীদের বিষয়ে কথা বলতে।

জুনিয়রদের ডাকার বিষয়ে ১৬তম আবর্তনের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল কর্মী মাহাদুজ্জামান ইপেল বলেন, আমি আগে ছাত্রলীগ করতাম তবে এখন ছাত্রদল করি এটা সঠিক। ছাত্রদলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের উদ্দেশে মিটিং ছিল কিনা এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। আগেও ছাত্রলীগের ক্ষমতা প্রদর্শন করে শিক্ষার্থীদের মারার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।

মারধরের বিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমাদের কোনো মতবিনিময় সভা ছিল না। যারা মারামারি করেছে তারা কেউ আমার অনুসারী নয়। অনুসারী না হলে কীভাবে তাদের ভ্রমণ করতে নিয়েছিলেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে অনেকে ভ্রমণ করতে গিয়েছে। আসলে তারা কারা আমি জেনে আপনাকে জানাব।

এ বিষয়ে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক মো. জিয়া উদ্দিন জানান, আমি ঘটনাটি শুনেছি। তাদের ডাকা হয়েছে। সবার সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করে হল প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে।