Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

‘ফেসবুকে স্ট্যাটাসই আমার কাল হয়েছে’

চলতি সময়ের আলোচিত কণ্ঠশিল্পী ন্যান্সি। ২০১১ সালে পান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। গান ও ব্যক্তিজীবন দুটি নিয়েই পাঠকদের কাছে অন্যতম কৌতূহল জন্ম দিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি ঘুমের ওষুধ খেয়ে ন্যান্সির আত্মহত্যার চেষ্টা নিয়ে খবর বেরোয় বিভিন্ন মিডিয়ায়। সেইসব অজানা ঘটনা ও প্রশ্নের উত্তর জানতে শিল্পীর মুখোমুখি।

chardike-ad

প্রশ্ন: আপনি এই সময়ে জনপ্রিয় একজন কণ্ঠশিল্পী, আপনার উঠতি ক্যারিয়ারের এই সুবর্ণ সময়ে কেন আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন?

ন্যান্সি: দেখুন, আত্মহত্যা চেষ্টার খবরটাই মিথ্যা।

প্রশ্ন: তাহলে এতগুলো ঘুমের ওষুধ কেন খেলেন?

다운로드 (30)ন্যান্সি: ফেসবুকে আমার রাজনৈতিক অবস্থান তুলে ধরার পর থেকে একের পর এক আমার স্টেজ শো বাতিল হচ্ছিল। রিহ্যাব ফেয়ার, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের শো, হোটেল প্যালেসিয়া থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি বড় বড় শোতে আমন্ত্রণ জানানোর পরও শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে আমাকে বাদ দেয়া হয়েছে।  এ নিয়ে আমার মধ্যে ছিল প্রচণ্ড হতাশা। ওই দিন রাতে কোনোভাবেই আমার ঘুম আসছিল না। আমি বোকামি করে একের পর এক ৮-১০টি ঘুমের ওষুধ জিয়োনিল ট্যাবলেট খাই। এরপর আর কিছুই মনে নেই।

প্রশ্ন: শোনা গেছে, আপনি ৬০টি ঘুমের ট্যাবলেট খেয়েছিলেন। কেন?

ন্যান্সি: এটা টোটালি রং ইনফরমেশন।

প্রশ্ন: কিন্তু আপনার অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে, ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় পাঠাতে বাধ্য হলেন ডাক্তাররা, এটা তো অস্বাভাবিক একটা অবস্থা!

ন্যান্সি: ময়মনসিংহে ডাক্তাররা আমার চিকিৎসা করতে ভয় পান। তারা মনে করলেন, ন্যান্সির চিকিৎসা করতে গিয়ে কোনো ভুল হয়ে গেলে সারাদেশে হৈচৈ পড়ে যাবে। বুঝেনই তো সেলিব্রেটি হলে যা হয়! মিডিয়ার ভয়েই তারা আমাকে ঢাকায় পাঠান।

প্রশ্ন: ঢাকায় এসে আপনাকে ল্যাব এইডের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। অবস্থা নিশ্চয় গুরুতর ছিল।

ন্যান্সি: এটা ডাক্তারদের ভুল ছিল। কারণ আইসিইউতে নেয়ার মতো খারাপ অবস্থা আমার ছিল না। এরপর আমার পারিবারিক ডাক্তার তাদের ভুল ধরিয়ে দিলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে কেবিনে স্থানান্তর করে।

প্রশ্ন: আপনি বলেছেন, রাজনৈতিক কারণে আপনাকে গান গাইতে বাধা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু আমরা যতটা জানি, আপনি কোনো রাজনৈতিক দলের সক্রিয় সদস্য নন, তাহলে এ প্রশ্ন তোলা কি অবান্তর নয়?

ন্যান্সি: দেখুন, ফেসবুকের ওই একটা স্ট্যাটাসই আমার কাল হয়েছে। ফরিদপুরে আমার প্রোগ্রাম ছিল। আগের রাতে ফোন করে আমাকে বলা হয়েছে, আপু আপনি এখানে আসবেন না। আপনার প্রতিপক্ষ আপনাকে খুন করে ফেলবে।

প্রশ্ন: এই বিষয়গুলো তো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা প্রশাসনকে জানাতে পারতেন?

ন্যান্সি: আমি কাকে বলব? বিভিন্ন সূত্র থেকে বারবার বলা হচ্ছে প্রশাসন থেকে আমাকে বাধা দেয়া হচ্ছে।

প্রশ্ন: গানের শো না করতে দেয়ার অন্তরালে আপনার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ? জেনেছেন কিছু?

ন্যান্সি: ওই যে, আমি নাকি রাজনৈতিক দল করি।

প্রশ্ন: আসলে কি আপনি তাই?

ন্যান্সি: দেখা যাক, ওই যে আমি একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে স্ট্যাটাস লিখেছি, ওটাই আমার অপরাধ। আমি সামান্য একজন সমর্থক মাত্র। সেটা পারিবারিকভাবেই। এটা বলা-ই কি আমার অপরাধ? তাহলে আমি কি স্বাধীন মতামতও দিতে পারব না?

প্রশ্ন: আমরা তো জানি আপনি একজন প্রফেশনাল শিল্পী…

ন্যান্সি: কিন্তু আমার গায়ে তো রাজনৈতিক দলের সিল লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন সবাই সেভাবেই ট্রিট করছে।

প্রশ্ন: তাহলে কি পুরোদমে রাজনীতি শুরু করবেন?

ন্যান্সি: আমি তো একজন শিল্পী, রাজনীতি করার কথা কখনো ভাবিনি। কিন্তু এখন যে অবস্থা তাতে মনে হচ্ছে আমাকে কোনো রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠনে আমাকে যোগ দিতে হবে।

প্রশ্ন: আপনি ফেসবুকে যা লিখেছিলেন, সেই অবস্থানে অনঢ় আছেন?

ন্যান্সি: হ্যাঁ, আমাকে গুলি করে মেরে ফেলা হলেও আমি আমার অবস্থান বদলাব না।

প্রশ্ন: তাহলে আর হতাশার কী আছে?

ন্যান্সি: না, হতাশা না। কথা হলো আমার তো কোনো অপরাধ নেই। কেন তাহলে আমার স্টেজ শো প্রশাসন বাতিল করে দেবে বা বাধা দেবে? আমাকে তো জোর করে রাজনীতিতে ঠেলে দেয়া হয়েছে।

প্রশ্ন: কবে থেকে রাজনীতিতে নামছেন?

ন্যান্সি: ভাবছি। দু-তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেব।

প্রশ্ন: গান আর রাজনীতি কি তাহলে এক সাথে চলবে?

ন্যান্সি: আর দু মাস আমি দেখব। এরমধ্যে যদি স্টেজ-শো আর গানের কাজ না আসে তাহলে আমি ঢাকা ছেড়ে দেব। গানই যদি গাইতে না পারি, তাহলে ঢাকায় থেকে কী হবে! চলে যাব গ্রামের বাড়িতে। আর দশটা সাধারণ নারীর মতো আমিও স্বামী-সন্তান নিয়ে ব্যস্ত থাকব।

প্রশ্ন: আপনি এখন শ্বশুরবাড়িতে নিয়মিত টাকা দিতে পারছেন না, এমন অভিযোগ শোনা যায়।

ন্যান্সি: এগুলো পুরোটাই অবান্তর। মিথ্যে কথা।

প্রশ্ন: আপনার বাবার সঙ্গেও আপনার দূরত্ব, তার দ্বিতীয় বিয়ের কারণে?

ন্যান্সি: এটাও ঠিক না। আমার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন এখন থেকে চৌদ্দ বছর আগে। তখন আমার মা ও আমরা এটা মেনে নিয়েছি। সুতরাং এখন প্রশ্ন উঠা অবান্তর। প্লিজ দোয়া করবেন। আমাদেরকে সুস্থভাবে বাঁচতে দিন। সূত্র: ইত্তেফাক।