মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ফেলে আসা আবাদি জমি থেকে ধান কেটে নিতে শুরু করেছে মিয়ানমার সরকার। শনিবার রাখাইনের মংডুর ৭১ হাজার একর জমির ধান কাটতে শুরু করে সরকার।
মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এএফপির খবরে বলা হয়েছে, মিয়ানমার সরকারের এই পদেক্ষেপের ফলে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় পালিয়ে যাওয়া ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গার রাখাইনে ফেরা নিয়ে উদ্বেগ বাড়াতে পারে।
দেশটির দ্যা গ্লোবাল নিউজ লাইট অব মিয়ানমারের প্রতিবেদনের স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, এইসব ধান কাটার জন্য দেশের অন্য এলাকা থেকে শ্রমিক আনা হয়েছে।
সেইসব শ্রমিকদের একজন গ্লোবাল নিউজ লাইটকে জানান, তাদের কাজ কেবল ধান কাটা, মাড়াই করা ও রোদে শুকানো। তবে এরপর ধানের কী ব্যবস্থা হবে সে সম্পর্কে তাদের কোনো ধারনা নেই।
মংডুর কৃষি বিভাগের প্রধান থেন ওয়াই বলেন, এই ধানের কী করা হবে তা সরকারই ভালো জানে। আমাদের কেটে , মাড়াই করে তুলে রাখতে বলা হয়েছে। আমরা সেটাই করছি।
রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করতেই একাজ করা হচ্ছে বলে মিয়ানমার সরকারের ব্যাপক সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ফিল রবার্টসন বলেন, ফসল কাটায় সরকারি কর্মকর্তার নেতৃত্ব দেওয়ায় বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। যে রোহিঙ্গারা এসব জমিতে বীজ বপন করেছিলেন সেটার চেয়ে ফসল কাটতেই বেশি মনযোগী মিয়ানমার সরকার।
উল্লেখ, গত ২৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া সহিংসতায় মিয়ানমারের এই সীমান্ত অঞ্চলের বেশির ভাগই এখন জনমানবশূন্য। রোহিঙ্গাবিরোধী মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানকে জাতিসংঘ ‘জাতিগত নিধন’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে।
আন্তর্জাতিক ব্যাপক চাপের মুখে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবসনের অঙ্গীকার করেছে। যারা সেদেশের বাসিন্দা হিসেবে প্রমাণ দেখাতে পারবেন শুধুমাত্র তাদেরকেই ফেরত নেওয়া হবে বলে দেশটির নেত্রী অং সান সু চি জানিয়েছেন।