Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

তালাকনামায় যেসব অভিযোগ করেছেন শাকিব খান

Sakib apuঢাকার চলচ্চিত্রের অন্যতম তারকা শাকিব খান তার অভিনেত্রী স্ত্রী অপু বিশ্বাসকে তালাকনামা পাঠিয়েছেন।

শাকিব খানের আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলাম বিবিসিকে জানিয়েছেন, তার মক্কেলের অভিযোগ তিনি স্ত্রীর কাছে চাহিদামত সমর্থন পাচ্ছেন না, ফলে তাদের মধ্যে বনিবনা হচ্ছে না।

chardike-ad

সিরাজুল ইসলাম জানান, ২২ নভেম্বর শাকিব খান তাদের দাম্পত্য সমস্যা নিয়ে বিস্তর আলোচনা করে তালাকের নোটিস পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। আইনজীবী জানান, অপু বিশ্বাসের বিরুদ্ধে তার অনেক অভিযোগের মধ্যে একটি ছিল – তার স্ত্রী গৃহকর্মীর কাছে তাদের সন্তানকে রেখে তালা দিয়ে বাইরে গিয়েছিলেন।

আইনজীবী জানিয়েছেন, এই দাম্পত্য বিরোধের মীমাংসার জন্য দুজন ৯০ দিন সময় পাবেন। এই তালাকনামা চ্যালেঞ্জ করতে চাইলে এই সময়ের মধ্যেই করতে হবে।
শাকিব বা অপু বিশ্বাস কারো সাথেই কথা বলা যায়নি। দুজনেরই মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল।
২০০৮ সালে এই তারকা দম্পতি বিয়ে করলেও, আট বছর ধরে বিয়ের কথা গোপন রেখেছিলেন তারা।

কিন্তু এ বছর ১০ এপ্রিল হঠাৎ অপু বিশ্বাস তার ছয় মাসের শিশুকে নিয়ে লাইভ টেলিভিশনে বিয়ের কথা ফাঁস করে দিলে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়।

এরপর শাকিব খান চাপের মুখে স্ত্রীর সাথে দুজনে সন্ধি করলেও, পত্র পত্রিকার খবর মতে, তাদের সম্পর্ক কখনো স্বাভাবিক হয়নি।

যেভাবে যা হলো

আলমগীর কবির

বাংলাদেশী চলচ্চিত্রপ্রেমীদের কাছে শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস নামটি এমনিতেই আলোচনায় ছিল। প্রায় এক যুগ তারা জুটিবদ্ধ হয়ে অভিনয় করে দর্শকদের উপহার দিয়েছেন জনপ্রিয় অনেক ছবি। কিন্তু হুট করেই আড়ালে চলে গিয়ে অপু ফিরলেন বছর খানেক পর।

যে ফেরাটা ছিল বিতর্কিত। মানুষ যেখানে তার বিয়ের খবরই জানতেন না, সেখানে তিনি সন্তান কোলে টেলিভিশন লাইভে এসে বললেন, এই সন্তানের বাবা শাকিব খান। আমরা দু’জনে বিয়ে করেছি আরো আট বছর আগে।

খবরটি শুনে উত্তেজিত শাকিব প্রথমে সবকিছু অস্বীকার করলেও পরে সব মেনে নেন। এই মেনে নেয়ার সাথে কিছু শর্তও জুড়ে দিয়েছিলেন শাকিব। যার মধ্যে অন্যতম ছিল ‘অপু আর ক্যামেরার সামনে কাজ করতে পারবে না’। কিন্তু অপু এই শর্ত মানতে নারাজ। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে ঠাণ্ডা লড়াইও চলছে ওই সময় থেকেই। কিন্তু ওই লড়াই যে এত দ্রুত বিচ্ছেদের দিকে এগোবে সেটা বোধ হয় কারো ধারণার মধ্যে ছিল না।
তাদের বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানিয়েছে, তারা এখন বিচ্ছেদের দিকেই এগোচ্ছেন। কিছু দিন ধরেই এমন গুঞ্জন দেশীয় মিডিয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছিল।

শাকিবের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, শাকিব খান থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরলেই ডিভোর্সের ব্যাপারে কাগজপত্র চূড়ান্ত করবেন। কেন এ বিচ্ছেদ?

এ ব্যাপারে সূত্রটি জানায়, মূলত অপুর স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তের কারণেই না কি তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটছে। বেশ কিছু কারণে অপুর ওপর নাখোশ শাকিব। তার অনুমতি ব্যতিরেকেই না কি অপু সব ধরনের কাজ করছেন। যে কাজগুলো শাকিব খানের বিরুদ্ধে যাচ্ছে। মিডিয়ায় শাকিবের শত্রু যারা তাদের সাথেই অপুর ওঠাবসা। বিভিন্ন টকশো কিংবা আড্ডায় শাকিবকে অন্য নায়িকাদের সাথে জড়িয়ে হেয় করে কথা বলাসহ আরো অনেক কারণে অপুর ওপর বিরক্ত শাকিব।
বিষয়গুলো নিয়ে শাকিব মানসিকভাবে বেশ অশান্তিতে আছেন বলে সূত্র জানায়। এসব কারণে শেষ পর্যন্ত না কি তিনি ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে এখনো স্পষ্ট কিছু বলেননি শাকিব।
এ মুহূর্তে তিনি কলকাতার ছবি ‘মাস্ক’-এর শুটিংয়ে থাইল্যান্ডে অবস্থান করছেন। বিচ্ছেদের ব্যাপারে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সময় হলে সবকিছু স্পষ্ট হবে। আমি এখনই কিছু বলতে চাচ্ছি না। এমনিতেই আমি আমার কাজ নিয়ে ব্যস্ত। এর মধ্যে কেউ যদি আমাকে হেনস্তা করার চেষ্টা করে সেটি মেনে নেয়া যায় না। আমিও একজন মানুষ। বিষয়টি সবারই মনে রাখা উচিত।’
মুখে স্পষ্টভাবে কিছু না বললেও বিষয়টি অস্বীকারও করেননি তিনি।

শাকিবের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, ডিভোর্সের ব্যাপারে যখন কথাবার্তা চলছিল তখন নাকি শাকিবকে বিভিন্ন রকম হুমকিও দেয়া হয়েছিল। এখনো তার কাছের লোকজনের কাছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে বিভিন্নজন তথ্য আদায়ের চেষ্টা করছেন। বিষয়গুলোর স্পষ্ট কোনো দালিলিক প্রমাণ না দিলেও বিচ্ছেদের ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিচ্ছে সূত্র।

এ বিষয়ে অপুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। তবে শাকিব যদি এ ধরনের কোনো কিছু বলে থাকে তাহলে আপাতত কিছুই বলার নেই আমার। যেসব অভিযোগ করা হয়েছে এটি সত্য নয়। আমি চেষ্টা করি সবার মন জুগিয়ে চলার জন্য। শাকিব যেহেতু আমাকে কাজে নেবে না, তাই আমি নিজের মতো করে কাজ করার চেষ্টা করছি। এর বাইরে আমি আর কিছুই করিনি। তবে সবকিছু করার আগে তার ভাবা উচিত- তার একটি সন্তান রয়েছে।’
আজ সোমবার একটি আবাসন কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হওয়ার ঘোষাণা দিতে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন অপু বিশ্বাস। ওইখানে এই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি খুব একটা পাত্তা দেননি।

অপু বলেন, ‘আমার মনে হয় না এরকম কিছু হবে। কারণ আমার মায়া ত্যাগ করলেও সন্তানের মায়া ত্যাগ করা কঠিন।’
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে শাকিব অপুর বিয়ে হয়। বিষয়টি তারা দীর্ঘ আট বছর গোপন রেখেছিলেন। অবশেষে চলতি বছর ১০ এপ্রিল একটি টিভি চ্যানেলে সন্তানসহ লাইভে এসে বিয়ের বিষয়টি ফাঁস করে দেন অপু।