Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

সৌদিতে যেভাবে নিহত হলেন ৯ রেমিট্যান্স যোদ্ধা

saudi-deathতখন সকাল ৭টা। শুক্রবার, ছুটির দিন হওয়ায় কেউ কেউ ফজরের নামাজ পড়ে ঘুমিয়েছে আবার কেউ দেশের বাড়িতে ফোনে কথা বলছে। হঠাৎ পাশের বিল্ডিং থেকে চিৎকার শোনা যায়। চিৎকার করতে করতে ওই বাসা থেকে লোকজন দৌড়াদৌড়ি করছে। শেষ পর্যন্ত না ফেরার দেশে ৯ রেমিট্যান্স যোদ্ধা।

লক্ষ্য করতেই দেখা যায়, ব্যাপক ধোঁয়া বের হচ্ছে। চারদিকে ধোঁয়ায় অন্ধকার হয়ে গেছে। সবাই পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু আগুন নেভানো সম্ভব না হওয়ায় লোকজন ভয়ে দূরে সরে যায়। এরমধ্যে আগুন এক রুম থেকে অন্য রুমে ছড়িয়ে যাচ্ছে। চিৎকার আর আগুনের ধোঁয়ায় রুমের অবস্থা খুবই খারাপ। আশপাশের সবাই বেরিয়ে আসলেও বের হতে পারেনি তিন রুমের অনেকে।

chardike-ad

নিহতরা বাঁচার অনেক চেষ্টা করেছে, আগুনের সঙ্গে লড়েছে দীর্ঘক্ষণ। শেষ পর্যন্ত না ফেরার দেশে ৯ বাংলাদেশি। কোনো পথ না পেয়ে টয়লেটের জানালা ভেঙে ঝাঁপ দিয়েছিলেন অনেকে। ঝাঁপ দিয়ে নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও তারা বাঁচার চেষ্টা করে। ঝাঁপিয়ে বাঁচার চেষ্টা করে ৪ জন। ফায়ার সার্ভিস এসেও চারটি মরদেহ উদ্ধার করে। বাকি ২ জনের বাথরুম থেকে অন্য একজনের রুম থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

বলছিলেন, ‘বিস্ফোরণ থেকে বেঁচে যাওয়া আল আমিন, মোবাইল নিয়ে বসেছিলেন সিঁড়িতে। তিনি জানান, তারা প্রথমে ৭ জনের মরদেহ নিতে দেখেছেন এবং এরপর ২ জন মেডিকেলে চিকিৎসা অবস্থায় মারা যান।

তিনি আরও বলেন, আমি সিঁড়িতে বসেছিলাম। হঠাৎ লোকজনের চিৎকার শুনতে পাই। জানি না সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়েছি কি-না তবে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। বিকট শব্দ শুনতে পায়নি। ধারণা করা হচ্ছে ইলেকট্রিক সর্ট সার্কিট হতে পারে।

প্রিন্স নুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণ শ্রমিকদের আবাসিক ভবন ছিল বিল্ডিংটি। গাদাগাদি করে থাকতো সবাই। ধারণ ক্ষমতারও বেশি মানুষ রাখা হতো। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে যাবার ফলে ঠিক সময়ে বের হবার সুযোগ পায়নি অনেকে। করুণ মৃত্যুই হয় তাদের শেষ পরিণতি। বিভিন্ন দেশের মোট ১৫ জন শ্রমিকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে বাংলাদেশি ৯ জন। আরও ৮ বাংলাদেশির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা রিয়াদ সমুচি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

শুক্রবার সকালে দাখেল মাহদুদ এলাকায় ঘটে যাওয়া এ মর্মান্তিক ঘটনায় তারা প্রাণ হারায়। নিহতরা হলো- গাজীপুরের কালীগঞ্জের হিমেল (২৮), নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের মজিদ (৫০), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সেলিম ও সিলেটের জোবায়ের (৪৫) ঢাকার যাত্রাবাড়ীর সোলেমান, নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদী থানার কাঁঠালিয়া ইউনিয়নের আবুল হোসেনের ছেলে রবিন (২২), কিশোরগঞ্জের ইকবাল (৩৪),।

জানা গেছে, ওই ভবনে ভিলা আক্তার আল আমদাসা এবং আল ইনজাজ দুই কোম্পানির শ্রমিকরা থাকতো। বেঁচে যাওয়া শ্রমিকরা অভিযোগ করেছে এক বছরের ওপরে এখানে এসেছে এখনো তাদের অনেকে আকামা পায়নি। এছাড়া নিহত অনেক শ্রমিকের আকামা ছিল না।

মরদেহ দেশে পাঠানোর বিষয়ে রিয়াদ দূতাবাসের লেবার উইং-এর দ্বিতীয় সচিব বলেন, যাদের আকামা নেই তাদের মরদেহ দেশে পাঠানোর বিষয়ে কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। খুব শিগগিরই মরদেহগুলো দেশে পাঠানো হবে।

সৌজন্যে- জাগো নিউজ