Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

অজান্তেই পোকা খাচ্ছি আমরা!

carmineপোকামাকড় খাওয়াকে অপছন্দ করেন, খাবারে পোকা পেলে খাওয়া বন্ধ করে দেন -এমন মানুষ নেহায়েতই কম নেই। কিন্তু তারাও যে অজান্তেই পোকা থেকে প্রস্তুত করা খাবার চেখে দেখছেন না, তা কি আর বলা যাবে? কারণ আমরা অনেকেই জানি না, খাবারে লাল রঙ করার জন্য কারমাইন নামের যে পদার্থটি বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়, তা তৈরি হয় পোকামাকড় চূর্ণ করা পাউডার দিয়ে।

বিবিসি জানায়, দক্ষিণ আমেরিকায় ক্যাকটাসে ‘কোকোহিনেল’ নামের এক ধরনের পোকা থাকে। সেই পোকা চূর্ণ করেই তৈরি করা হয় এই কারমাইন। সেই কারমাইন ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে বিশ্বের খাদ্য শিল্পে। দই থেকে শুরু করে আইসক্রিম, ফলের পাই থেকে শুরু করে কোমল পানীয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে কারমাইন। এমনকি লাল লিপস্টিক তৈরিতেও ব্যবহৃত হয় এই কারমাইন।

chardike-ad

আপনি হয়তো লাল রঙের কোনও খাবারের উপাদান তালিকায় চোখ বোলালে, সেখানে কারমাইন নামটি দেখতে পাবেন না। বরং হয়তো লেখা রয়েছে, প্রাকৃতিক লাল রঙ অথবা ক্রিমসন লেক অথবা ই১২০ নম্বরটি, যে নম্বরটি কারমাইনকে দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

কারমাইনের এই ব্যাপক ব্যবহারের কারণ হচ্ছে, এটি নিরাপদ আর দীর্ঘস্থায়ী, যা তাপ বা আলোর কারণে নষ্ট হয় না। যদিও টমেটো, বেরি আর বেটরুট থেকেও রঙ তৈরি করা হয়, কিন্তু সেগুলোর কোনটাই কারমাইনের মতো স্থায়ী নয়।

কারমাইন নিয়ে গবেষণা করেছেন অ্যামি বাটলার গ্রিনফিল্ড। তিনি বলছেন, খুব কম মানুষেরই এই খাদ্য উপাদানে সমস্যা হয়। সবমিলিয়ে খাবারের উপাদান হিসেবে এর অতীত খুবই ভালো। এটাও মনে রাখতে হবে যে, কারমাইন এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান, যার ওপর পেরুর অসংখ্য গরিব কৃষকের আয়ের উৎস। বেঁচে থাকার জন্য কারমাইনের ওপর তারা নির্ভর করে আছে।

বিশ্বে কারমাইনের ৯৫ শতাংশই উৎপাদন করে পেরু। স্ত্রীলিঙ্গের পোকাগুলোই চাষ করা হয়, কারণ এগুলোর ডানা থাকে না, ফলে উড়তেও পারে না।বছরে বছরে বিশ্বে কারমাইনের চাহিদাও বাড়ছে, ফলে এর দামও চড়া হচ্ছে। গত চার বছরে কারমাইনের দাম বেড়েছে ৭৩ শতাংশ।

তবে কোন কোন কোম্পানি কারমাইন থেকে নিজেদের সরিয়েও নিচ্ছে। এ রকম একটি বড় কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের কফি চেইন স্টারবাকস।

সমর্থকরা দাবি করেন, ৫০০ বছরেরও আগে থেকে দক্ষিণ আমেরিকান মায়া নৃগোষ্ঠী, এরপরে অ্যাজটেক মানুষজন এই পোকার চূর্ণ ব্যবহার করত। কৃত্রিমভাবে তৈরি খাবারের রঙের তুলনায় এটি মানুষের স্বাস্থ্যের চেয়ে অনেক ভালো বলে তারা মনে করেন। তবে তারাও স্বীকার করেন, খাদ্যপণ্যের গায়ে এই পণ্যটির ব্যবহারের কথা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ থাকা উচিত। পাশাপাশি এখন প্রাকৃতিক অন্য অনেক কিছু থেকে লাল রঙ তৈরি হচ্ছে, যেখানে কোনও পোকামাকড় নেই।

সৌজন্যে- অর্থসূচক