Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

তিন দিনে বিমানের ক্ষতি ৩ কোটি টাকা

akash-bima-doorবিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার ‘আকাশবীণা’র জরুরি বহির্গমন দরজার র‌্যাফট খুলে পড়ার পর তিন দিনে বিমানের তিন কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।  বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এখানে কারও গাফিলতি ছিল কি না তা খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি।

র‌্যাফট খুলে পড়ার এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিমানের ডেপুটি চিফ অব ফ্লাইটসেফটি ক্যাপ্টেন এনামুল হক তালুকদারের নেতৃত্বে কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন- বিমানের কর্পোরেট কোয়ালিটি ম্যানেজার নিরঞ্জন রায় ও প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার রবিউল আমিন।

chardike-ad

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জরুরি বহির্গমন দরজার র‌্যাফটটি খুলে যাওয়ার ঘটনাটি কোনোভাবে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। মূলত ইমার্জেন্সি ছাড়া এই র‌্যাফট বাটনে হাত দেয়ার সুযোগ নেই। নিয়ম হল- পাইলট যদি কোনো কারণে ফ্লাইটকে ইমার্জেন্সি ঘোষণা করেন তাহলে ৯০ সেকেন্ডের মধ্যে বিমানে থাকা সব জরুরি বহির্গমন দরজার র‌্যাফট খুলে দিতে হয়। র‌্যাফট এক ধরনের প্লাস্টিক সিঁড়ি যেটি দিয়ে যাত্রীরা স্লাইড করে বা লাফিয়ে নিচে নামতে পারেন। ড্রিমলাইনারের ৪টি জরুরি বহির্গমন দরজা আছে। প্রতিটি দরজার সঙ্গে একটি করে র‌্যাফট সিঁড়ি থাকে। এখন একটি কম দরজা ছাড়াই ড্রিমলাইনারের ফ্লাইট পরিচালনা করতে হচ্ছে।

চারটি র‌্যাফটের মধ্যে ১টি না থাকায় ড্রিমলাইনারের প্রতিটি ফ্লাইটে ৫৫ যাত্রী কম নিতে হচ্ছে। এভাবে গত দু’দিনে আকাশবীণাকে দিয়ে ১২টি ফ্লাইট পরিচালিত হয়েছে। ফলে দু’দিনে ১ থেকে দেড় কোটি টাকার বেশি অর্থ ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া লন্ডন থেকে আনা র‌্যাফট সংযোজনে খরচ আরও কোটি টাকা। আর এ জন্য কমপক্ষে একদিন আকাশবীণার ফ্লাইট বন্ধ রাখতে হবে। তাতে আরও ৮০-৯০ লাখ টাকা গচ্চা যাবে। সব মিলে তিন দিনে কমপক্ষে তিন কোটি টাকা গচ্চা দিতে হচ্ছে বিমানকে।

গত মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৪টার দিকে মালয়েশিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকায় ফেরে আকাশবীণা। যাত্রী নেমে যাওয়ার পর নিয়মিত গ্রাউন্ড চেকের অংশ হিসেবে বিমানের প্রকৌশল বিভাগ ড্রিমলাইনার পরিষ্কার করে। পরে সিঙ্গাপুর ফ্লাইটের আগে বিএফসিসির খাবারের গাড়ি আসলে দরজা খোলার সময় প্রকৌশল বিভাগের স্টাফ মোস্তাফিজুল হক র‌্যাফটটি খুলে ফেলেন। পরবর্তীতে সেটি প্রকৌশল বিভাগে পরীক্ষার জন্য নেয়া হয়।

sentbe-adএ ঘটনার পর ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুরগামী বিজি-৮৪ ফ্লাইটটি ৮টা ২৫ মিনিট ছাড়ার সময় থাকলেও তা ঢাকা ছাড়ে ৯টার দিকে। তখন র?্যাফট ছাড়াই ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয় প্রকৌশল বিভাগ। র‌্যাফট খুলে পড়ার ঘটনায় মোস্তাফিজুল হককে সাময়িক বরখাস্ত এবং শোকজ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে বুধবার বিমানের জনসংযোগ শাখা থেকে এক প্রতিবাদপত্রে জানানো হয়, আকাশবীণার দরজা ভাঙেনি। গণমাধ্যমে ড্রিমলাইনার নিয়ে ভুল সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, র‌্যাফট ভাঙার বিষয়টি সত্য নয়, সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বিমানটির কোনো দরজার কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। প্রকৃতপক্ষে জরুরি নির্গমন দরজার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি র‌্যাফট খুলে গেছে। জরুরি অবস্থায় যাত্রীদের বিমান থেকে বের হওয়ার জন্য এই র‌্যাফট দরজার সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। ওইদিন ফ্লাইটের যাত্রীদের খাবার ওঠানোর জন্য দরজা খোলার সময় র‌্যাফটটি খুলে যায়।

প্রতিবাদপত্রে আরও বলা হয়, উড়োজাহাজটি স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৬টি ফ্লাইট পরিচালিত হয়েছে। এ অবস্থায় বিমানের উড়োজাহাজ ড্রিমলাইনার সম্পর্কে ভুল তথ্য সংবলিত সংবাদটি জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে এবং একই সঙ্গে জাতীয় পতাকাবাহী রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইন্সের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে।

সৌজন্যে- যুগান্তর