Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ভালোবাসার টানে ব্রাজিলিয়ান তরুণী লাকসামে

laksamধর্ম, সমাজ, রাষ্ট্র ও সংস্কৃতিসহ সব বাধা অতিক্রম করে সুদূর ব্রাজিল থেকে প্রেমের টানে লাকসামে ছুটে এসেছেন ২৫ বছর বয়সী জুলিয়ানা নামে এক তরুণী। গত ৩১ অক্টোবর ঢাকায় কাকরাইল একটি কাজি অফিসে ওই প্রেমিক যুগল বিয়ে করেন। প্রেমিক বাহরাইন প্রবাসী আবদুর রব হিরু উপজেলার গোবিন্দপুর ইউপির দোখাইয়া গ্রামের আবুল খায়েরের ছোট ছেলে।

ঢাকায় এয়ারপোর্টে বাংলাদেশের হিরু বাবা মেয়েকে রিসিভ করে কাকরাইল কাজি অফিসে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করি। এরপর মিরপুর-২ একটি ভাড়া বাসায় ওঠি। গত মঙ্গলবারে প্রেমিকা জুলিয়ানা ও তার বাবাকে নিয়ে নিজ বাড়িতে আসি। সবার আশীর্বাদে ও আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা সুখের সংসার করছি। জুলিয়ানা কিছু বাংলা বলতে শিখেছে। আমাদের পরিবারের সব সদস্য এই সম্পর্ক নিয়ে খুবই খুশি।

chardike-ad

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সিলেট মদন মোহন কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে শেষবর্ষে অধ্যয়নরত অবস্থায় জীবিকার তাগিদে পাড়ি জমান প্রবাসে। বছরখানেক আগে দেশে আসেন হিরু।

এ প্রেমের সংবাদ সংগ্রহ করতে সোমবার সরেজমিনে উপজেলার দোখাইয়া গ্রামে প্রেমিক হিরুর বাবা আবুল খায়েরের বাড়িতে গিয়ে কথা হয়। খুবই আন্তরিকভাবে প্রেমিক হিরুর সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেন বড় ভাই মানিক।

এরপর হিরুর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ৬ জুলাই ২০১২ সালে বাহরাইন কর্মস্থলে অবসরে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা সেন্টারে দুজনার পরিচয় হয়। পরে ফেসবুকে জুলিয়ানার আইডিতে লাইক দেন হিরু। জুলিয়ানও তাকে লাইক দেন। এভাবেই শুরু হয়ে চলতে থাকে তাদের প্রেম আলাপ-আলোচনা।

একপর্যায়ে তাদের টেক্স বিনিময় থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিদিনই কথা হতো। সেই থেকে দুজনের মধ্যে প্রেম-ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর থেকে ব্রাজিলের প্রেমিকা জুলিয়ানার সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিয়ের সম্পর্কের কথাবার্তা শুরু করে ঘনিষ্ঠতা বেড়ে যায়।

ব্রাজিলের প্রেমিকা জুলিয়ানা বাবা মারকোর্স জিয়ানিংয়ের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশে আসার সিদ্ধান্ত নেন। গত ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশে আসেন ওই প্রেমিকা ও তার বাবা।

এ গভীর প্রেমের খবরে আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে অসংখ্য নারী, পুরুষ ও শিশুসহ লোকজন প্রেমিক আব্দুর রব হিরুর বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন। গত ১ নভেম্বর হিরুর বাবা আবদুল খালেক এ দৃশ্য দেখে স্থানীয়দের নিয়ে বধূবরণ উপলক্ষে ৩০০ লোকের মেজবানের আয়োজন করেন।

স্থানীয় এক রিকশাচালক ওই নবদম্পতিকে নিয়ে আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখান। এরপর জুলিয়ার বাবা রিকশা চালিয়ে মেয়ে এবং জামাইকে নিয়ে আনন্দ-উল্লাস করেন। বর্তমানে নবদম্পতি তাদের ভাড়া করা ঢাকার বাসায় অবস্থান করছেন।

এদিকে গত ১৬ মার্চ বাংলাদেশি কাতার প্রবাসী হাবিবের প্রেমের টানে নোয়াখালীতে চলে আসলেন ব্রাজিলিয়ান তরুণী দিয়াগো সিলভা। ইসলাম গ্রহণ করে বিয়েও করেছেন হাবিবকে। হাবিব নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বর ইউনিয়নের চরজব্বর গ্রামের জাকের হোসেনের ছেলে।

হাবিবের স্বজনরা জানান, প্রায় পাঁচ বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে হাবিবের সঙ্গে ব্রাজিলিয়ান তরুণী দিয়াগোর পরিচয় হয়। পরবর্তীতে দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।

প্রেমিকা দিয়াগো ব্রাজিল যাওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় হাবিবকে প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। এরেই মাঝে কাতারের ভিসা পান হাবিব। পরে তিনি কাতারে চলে যান। দু’জনের সম্পর্কও চলতে থাকে।

একপর্যায়ে দু’জনই বিয়ে করার জন্য মনস্থির করেন। তারা সিন্ধান্ত নেন বাংলাদেশে এসে দুজনেই বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হবেন। গত মাসে কাতার থেকে বাংলাদেশে আসেন হাবিব। এরপর গত শুক্রবার ব্রাজিল থেকে বাংলাদেশে আসেন দিয়াগো।

রোববার ব্রাজিলিয়ান এই তরুণী জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে এফিডেভিটের মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং নাম পরিবর্তন করে রাখেন ফাতেমা।

এরপর নোয়াখালী জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ফাতেমার সঙ্গে হাবিবের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর কোর্টে উপস্থিত সকলকে মিষ্টিমুখ করানো হয়।

হাবিব বলেন, ফাতেমা ও আমি খুবই খুশি যে আমাদের দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক সফল হয়েছে। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন।

হাবিরের মামা নুরনবী জানান, এ ঘটনায় তার পরিবার, আত্মীয়-স্বজনসহ সবাই অবাক হলেও তারা অত্যন্ত খুশি হয়েই নববধূকে বরণ করে নিয়েছেন।