টাঙাইলের মির্জাপুর উপজেলায় জনৈক প্রবাসীর বাড়িতে আগুনে পুড়ে মাসহ তিন মেয়ের করুণ মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার সোহাগপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে, দাহ্য পদার্থ ছিটিয়ে আগুন লাগিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে। নিহতরা হল প্রবাসী মুজিবর রহমানের স্ত্রী হাসনা বেগম (৩৫) এবং তাঁর তিন মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী মনিরা আক্তার (১৪), বাকপ্রতিবন্ধী মীম আক্তার (১১) ও নার্সারির ছাত্রী মলি আক্তার (৭)।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তিন মেয়েসহ হাসনা বেগম নিজ বাড়ির একটি কক্ষে ঘুমাচ্ছিলেন। ভোররাত সাড়ে তিনটা থেকে চারটার দিকে বিকট শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা গিয়ে দেখেন, ঘরের বাইরের দিকে আগুন জ্বলছে। বালু ও পানি দিয়ে বাইরের আগুন নেভানোর পর তাঁরা দেখতে পান, কক্ষের দরজা ভেতর ও বাইরে থেকে আটকানো। এরপর তাঁরা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখেন, চারজনের দগ্ধ লাশ বিছানায় পড়ে আছে। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেন। নিহতদের লাশ মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) পঙ্কজ চন্দ্র রায় গণমাধ্যমকে বলেন, “রাত ৩টার পরে কোন এক সময়ে দাহ্য পদার্থের সাহায্যে ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পেট্রল বহনকারী প্লাস্টিকের দুটো ড্রামের ঢাকনা উদ্ধার করা হয়েছে।”
জানা গেছে, প্রতিবেশী বাহারউদ্দিনের ছেলে সিঙ্গাপুরপ্রবাসী জাহাঙ্গীর আলম দীর্ঘদিন ধরে মজিবরের বড় মেয়ে মরিয়মকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। ওই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় জাহাঙ্গীরের পরিবারের লোকজন এ আগুন লাগিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জাহাঙ্গীর এখন দেশে অবস্থান করছেন এবং ঘটনার পর থেকে তিনি সপরিবারে পলাতক রয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে যে দুটো ঢাকনা উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলোর ড্রাম দুটো জাহাঙ্গীরের রান্নাঘর থেকে উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোন মামলা হয় নি। তবে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক রিকশাওয়ালাকে আটক করা হয়েছে।