Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

মধুর যত গুণ

honeyপ্রাচীনকাল থেকেই খাওয়ার পাশাপাশি মধুকে রূপচর্চার কাজেও ব্যবহার করা হয়। রাণীরা অনেকেই মধু দিয়ে রূপচর্চা করতেন। আকর্ষণীয় ফিগার ও মসৃণ ত্বকের জন্য বলিউড ও হলিউডের অনেক তারকা দৈনিক মধুর ব্যবহার করেন।

জানার বাইরেও অনেক গুণ রয়েছে মধুর। হাজার গুনের কিছু গুন আপনাদের জন্য  নিচে আপনাদের জন্য উপস্থাপনা করা হলোঃ

chardike-ad

ভালো অ্যাথলেটিক পারফর্মেন্সের জন্য:

শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে মধু। ব্যায়াম করার আগে ১ চামচ মধু খেলে সহজে ক্লান্তি আসে না। শরীরের শক্তি জোগান দেওয়ার জন্য চমৎকার একটি উপাদান মধু। তাই ঘুম থেকে উঠে একটি পাউরুটি বা টোস্টের উপর মধু মাখিয়ে খেয়ে নিন বা চায়ে চিনির বদলে মধু মিশিয়ে খান।

রোগ সারাতে:

মধু খেলে নানা রকম রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এতে আছে কার্সিনোজেন (ক্যান্সারজনক পদার্থ) যা ক্যান্সার ও টিউমার হওয়ার ঝুঁকি কমায়। গলা ব্যাথা, গলা ভাঙ্গার সমস্যা ঠিক করতে মধুর জুড়ি নেই। এটির অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য গলার প্রদাহ দূর করতে পারে। গলায় সমস্যা থাকলে প্রতিদিন ১ চা চামচ মধু খান। এছাড়া কুসুম গরম পানির সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। বাজরা মধু সবচেয়ে ভালো কাজ করে গলার জন্য।

দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে, শারীরিক দুর্বলতা ঠিক করতে, মূত্রনালীর রোগ, ডায়রিয়া, বমিভাব ঠিক করতে পারে মধু। নিয়মিত মধু খেলে শরীরের ক্ষত তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়।

ওজন কমাতে:

মধু, লেবুর রস ও কুসুম গরম পানি মিশিয়ে প্রতিদিন খেলে ওজন কমে। ১ টেবিল চামচ দারুচিনি গুড়া, ১ টেবিল চামচ মধু ও ১ কাপ পানি মিশিয়ে খেলেও ওজন কমে। এই পানীয় খালি পেটে খেতে হয়।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে:

শুষ্ক ত্বকের জন্য মধু খুবই ভালো। ১ চা চামচ মধু, ১ চা চামচ দুধ ও ১ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মুখে ১০ মিনিট লাগিয়ে রাখলে সুন্দর একটি আভা আসে ত্বকে। সপ্তাহে ৪ দিন ১ চা চামচ মধু ও টম্যাটোর রস মিশিয়ে মুখে ২৫ মিনিট লাগিয়ে রাখলে ত্বক উজ্জ্বল হয়।

ব্রণ দূর করতে:

মধু নতুন ব্রণ উঠতে বাধা দেয়। তাই যাদের খুব ব্রণের সমস্যা তাদের প্রতিদিন ১ চা চামচ মধু খাওয়ার সাথে সাথে ত্বকে মধু ১০ মিনিট লাগিয়ে রাখা উচিত।

চুলের কন্ডিশনার হিসেবে:

মধু দিয়ে চুলের জন্য প্রাকৃতিক কন্ডিশনার বানানো যায়। মধুর সাথে অলিভ অয়েল মিশিয়ে চুলে ৫-৭ মিনিট লাগিয়ে রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে চুল উজ্জ্বল হয়। এছাড়া শ্যাম্পুর সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে নিলে কন্ডিশনারের বদলে এটাই কন্ডিশনারের কাজ দিবে।

বয়স কম দেখাতেঃ

বয়স কম দেখাতেও মধুর জুরি নেই। প্রতিদিন ত্বকে মধু লাগালে ত্বক টানটান থাকে।

কালো দাগ দূর করতেঃ

সপ্তাহে ৫ দিন ৩ চা চামচ গোলাপ জল ও ২ চা চামচ মধু মিশিয়ে ১৫ মিনিট শরীরের কালো স্থানগুলোতে লাগিয়ে রাখলে কালো দাগ কমতে থাকে। এছাড়া মধু, দুধ ও দই মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ বানিয়ে ত্বকে ১০ মিনিট লাগিয়ে রাখলে বলিরেখা পরবে না ত্বকে। এটি সপ্তাহে ৩ দিন।

চুল পড়া দূর করতেঃ

চুল পড়ার সমস্যা দূর করতে একটি বাটির ২/৩ অংশ মধু ও ১/৩ অংশ পানি দিয়ে মিশিয়ে এটি চুলের গোড়ায় লাগান ও ২/৩ মিনিট ম্যাসাজ করুন। এবার বাকি মিশ্রণ পুরো চুলে লাগিয়ে নিন ভালো করে ও ৩ ঘন্টার জন্য রেখে দিন। এরপর হাল্কা কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ১ বার।

হ্যাংওভার কাটাতেঃ

সারারাত কাজ করেছেন অথবা ছিলেন পার্টিতে। সকালে দেখলেন ক্লান্ত বিধ্বস্ত আপনি। এক গ্লাস পানিতে ২ টেবিল চামচ মধু মেশান। খেয়ে ফেলুন এরপর দেখুন মধু আপনাকে কি রকম সতেজ করে দিচ্ছে।

অন্ত্রের পরজীবী দূর করতেঃ

এক গ্লাস পানিতে এক টেবিল চামচ মধু এবং এক টেবিল চামচ ভিনেগার মিশিয়ে পান করুন। আর গুডবাই বলে দিন আপনার অন্ত্রে বসবাসরত পরজীবী এবং ছত্রাকদের।

মধুর গুণাগুণের পাশাপাশি রয়েছে কিছু সমস্যাও। তাই মধু ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ।

যেসব মধুর রং বেশি গাঢ় সেগুলোতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি থাকে তাই সেগুলো বেশি উপকারী। মধু কেনার সময় খেয়াল করবেন তা যেন বিশুদ্ধ ও কাঁচা হয়। প্রথম প্রথম মধু খাওয়া শুরু করলে খেতে ভালো নাও লাগতে পারে তবে অভ্যাস হয়ে গেলে দেখবেন মধু শুধু খেতে বেশ ভালো লাগে

শিশুদের মধু খেতে দিবেন না বা তাদের খাবারে মধু মিশিয়ে দিবেন না, কেননা শিশুদের ক্ষেত্রে মধু থেকে বটুলিজম হওয়ার ঝুঁকি আছে। এছাড়া মধু ওজন কমাতে সহায়ক হলেও বেশি করে মধু খেলে রক্তে স্যুগার বেড়ে যাবে ও ওজনও বেড়ে যাবে।