একেক মানুষের ঘুমানোর অভ্যাস একেক রকম। কেউ খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠেন, কেউ বা আবার গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকেন। কিন্তু ঘুমের স্বভাব যেমনই হোক না কেন, বেশিরভাগ মানুষেরই রাত্রে বিছানায় যাবার পরেও আপনার ঘুমাতে কিছুটা সমস্যা হয়। ঠিক কোন সময়ে ঘুমাতে যাওয়াটা আপনার জন্য সুবিধাজনক এবং কি করে এই সময় বের করবেন আপনি?
আমাদের শরীরে আসলে একটি ঘড়ি আছে, যে কিনা সময়ের হিসেব রাখে এবং আমাদের চোখে নিয়ে আসে ঘুম। এর কারণেই রাতের বেলায় আমাদের ঘুম পায়। মস্তিষ্কের এই ঘড়ির অংশটি এতটাই জরুরী যে এখানে রক্তের প্রবাহ সবচাইতে বেশি। আমাদের কখন ঘুম পাবে- এ ব্যাপারটার সাথে জড়িত আছে আমাদের বিবর্তন এবং আদিম মানুষের প্রকৃতিতে টিকে থাকার সংগ্রাম। আমাদের ঘুমের চক্র হলো ৯০ মিনিটের। অর্থাৎ প্রতি ৯০ মিনিট পর পর আমাদের ঘুম ২০-৩০ সেকেন্ডের জন্য ভেঙ্গে যায়। আদিম মানুষ এ সময়ে নিজের আশেপাশে দেখে নিশ্চিত হতো কোনো বিপদ আছে কিনা, এর পর আবার ঘুমিয়ে পড়তো। এ ব্যাপারটা এখনো আমাদের রক্তে রয়ে গেছে, ফলে আমাদের ঘুমের চক্র এখনো ৯০ মিনিট লম্বা। এর সুবিধাও আছে। এর ফলেই নবজাতক শিশুর মা রাত্রে ঘুম থেকে উঠে বাচ্চাকে খাইয়ে আবার ঘুমাতে পারেন।
ঘুমের ক্ষেত্রে নিজের শরীরের দিকে লক্ষ্য রাখাটা সবচাইতে জরুরী। অনেকে মনে করেন আগে আগে ঘুমিয়ে পড়াটা ভালো, কিন্তু তা আসলে সত্যি নয়। আপনার শরীর জেগে থাকতে চাইছে কিন্তু আপনি তাকে জোর করে দ্রুত ঘুম পাড়াতে চাইছেন- এতে কোনোই সুফল পাওয়া যাবে না। এর চাইতে ভালো একটি উপায় হলো, আপনার ঘুমাতে যাবার সময় এবং ঘুম থেকে ওঠার সময়টা একটা ছকে বেঁধে ফেলা। আপনি যে সময়ে ঘুমাতে চান, তার ১০-১৫ মিনিট আগে বিছানায় চলে যান। যেমন, আপনি যদি সাড়ে সাত ঘণ্টা ঘুমাতে চান এবং সকাল সাড়ে সাতটায় ঘুম থেকে উঠতে চান, তবে মোটামুটি পৌনে বারোটায় আপনার ঘুমাতে যেতে হবে। নিজেকে বোঝান, যে এখন আপনার ঘুমাতে হবে। ঝেড়ে ফেলে দিন সব দুশ্চিন্তা। আর অবশ্যই প্রতিদিন একই সময়ে ঘুম থেকে উঠুন। এতে নির্দিষ্ট একটা সময়ে ঘুমিয়ে যেতে আপনার আর সমস্যা হবে না।