Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

কেমন আছেন লেবাননে বাংলাদেশি শ্রমিকরা

lebanonবেশি অর্থ রোজগার করে পরিবারকে সচ্ছল করার বহু আশা নিয়ে প্রবাসে পাড়ি জমায় বাংলাদেশি শ্রমিকরা। লেবানন মধ্যপ্রাচ্যেরই একটি দেশ, ছোট্ট এই দেশে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার বাংলাদেশি আছেন। এদের মধ্যে কেউ ফ্রি ভিসায় কেউ ব্যক্তি মালিকের অধীনে, কেউ কোম্পানি ভিসায় কাজ করছেন। মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু দেশে ভিসা বন্ধ থাকায় এখন অনেকেই লেবাননে আসছেন। তিন লাখ, চার লাখ, কারো কারো এই খরচ ছয় লাখ টাকা পর্যন্ত দাঁড়ায়। কিন্তু, এখানে এসে প্রতারিত হচ্ছেন বেশির ভাগ শ্রমিকই।

জানা গেছে, অনেকেই ফ্রি ভিসায় বাংলাদেশে দালালের সঙ্গে বৎসরে ১৩শ’ থেকে ১৬শ’ আমেরিকান ডলার চুক্তি করে আসেন, কিন্তু এখানে আসার পরে ঘটে উল্টোটা। তাদের কাছ থেকে নেয়া হয় ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৪শ’ ডলার পর্যন্ত। এটা পুরুষদের ক্ষেত্রে। মহিলাদের ক্ষেত্রেও দেখা যায়, ১ হাজার ডলার নেওয়ার কথা বলে এখানে এনে পরে ব্ল্যাকমেইল করে ১৩শ’ থেকে ১৪শ ডলার পর্যন্ত আদায় করা হয়। যারা ব্যক্তি মালিক বা কোম্পানি ভিসায় আসে তাদের বেশিরভাগই দালাল চক্রে বন্দি হয়ে যায়, অনেককেই কাজ দেয়া হয় না, আবার অনেকেই তার সঠিক বেতন পান না। বেশ ক’টি ক্লিনার কোম্পানির শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

chardike-ad

লেবাননে যারা আদম ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এরা নিজেদের প্রতারণার সুবিধার জন্য কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কাগজপত্র চূড়ান্ত না করেই, এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সঙ্গে কোনরকমের চুক্তি ছাড়াই ভিসা নিচ্ছে। এখানে আসার পরে সেই দালালের কোনো খোঁজ পায় না অসহায় শ্রমিকরা। অনেকেই দেশে জমি-জমা বিক্রি করে এখানে আসে। ফলে দেশে ফিরে যেতে ভয় পায়- স্বজনদের কীভাবে মুখ দেখাবে এই চিন্তায়। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা যায়- এখানে কাজ নেই, বাসস্থান নেই বেতনভাতা নেই, তাই এরা বাধ্য হয়েই দেশে ফিরে যায়। কেউ কেউ কোম্পানি থেকে পালিয়ে বাইরে কাজ করে। কিন্তু তাতে অবৈধ কাগজপত্রের কারণে জেলে যাবার পরিস্থিতি দাঁড়ায়। এসব পরিস্থিতি এড়াতে বেশিরভাগ শ্রমিককেই কম বেতনে বেশি ডিউটি করতে হয়।

তবে সবাই যে কষ্টে আছে তা কিন্তু নয়। এর ব্যতিক্রমও কিছুটা আছে। কোনো বাংলাদেশি এখানে নিজের ভালো অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। এমনকি কেউ কেউ বলা যায় প্রভাবশালী পর্যায়েও পৌঁছে গেছেন, যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশ কয়েকটা সমাজ কল্যাণ সংগঠনের। এখানে আছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর অঙ্গ সংগঠনও।

তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রবাসী বাংলাদেশিরা এসব সংগঠনের নেতাদের কর্মকাণ্ডে খুব একটা সন্তুষ্ট নন। অভিযোগ হলো, এসব নেতারা শুধু নিজেদের নাম জাহির করা এবং বাংলাদেশ দূতাবাসে তাদের কর্তৃত্ব খাটানোর কাজেই বেশি ব্যস্ত থাকেন। সাধারণ শ্রমিকদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে এরা কোনো উদ্যোগ নেন না। অবাক ব্যাপার হলো, দূতাবাসেরও এদিকে তেমন একটা নজর নেই। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, শ্রমিকরা দূতাবাসে এসে তাদের সমস্যা জানালেও দূতাবাস কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয় না। লেবাননের মতো দেশে বাংলাদেশ দূতাবাস থাকতেও বাংলাদেশিদের সমস্যা রয়েই যাচ্ছে। অথচ এ দূতাবাসের পেছনে সরকারের বিপুল অর্থ খরচ হচ্ছে প্রতি মাসে