কোরিয়ায় ইপিএস কর্মীদের জন্য অনেক সীমাবদ্ধতা থাকায় ইপিএস ভিসা থেকে ই-৭ ভিসায় পরিবর্তনের জন্য আগ্রহীর সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে পারলে ই-৭ ভিসায় পরিবর্তন করা যায়। ইপিএস ভিসা নিয়ে কর্মীরা কোরিয়া ভ্রমণের জন্য কাউকে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন না এবং স্ত্রীকে নিয়ে আসতে পারেন না। অন্যদিকে ই-৭ প্রফেশনালদের ভিসা হওয়ায় কোরিয়ায় কর্মকালীন সময়ে পরিবারকে (বাবা মা) কোরিয়া ভ্রমণের জন্য আমন্ত্রণ জানাতে পারবেন এবং স্ত্রীকে তার সাথে রাখতে পারবেন। এছাড়া ই-৭ ভিসা থেকে রেসিডেন্স ভিসায় (এফ-২) পরিবর্তন করা তুলনামূলক সহজ হওয়াই ইপিএস কর্মীদের মধ্যে আগ্রহটা আরো বেশি। তবে ই-৭ এর নেতিবাচক দিক হলো কর্মস্থল পরিবর্তন করা যাবে না এবং কর্মরত কোম্পানী দেউলিয়া হয়ে গেলে কিংবা ঐ কোম্পানীতে কাজ না থাকলে কর্মীকে নিজ দেশে ফেরত যেতে হবে।
ই-৭ ভিসায় পরিবর্তনের যোগ্যতা, প্রয়োজনীয় শর্তসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন বাংলা টেলিগ্রাফের পাঠকদের জন্য তৈরী করেছেন মু মহিবুল্লাহ এবং আসাদুজ্জামান আসাদ।
আবেদনের যোগ্যতা
নিন্মোক্ত ভিসার আওতাধীন ব্যক্তিগণ আবেদন করতে পারবেন
– আবেদন করার সময় আপনি যদি ই-৯ নন-প্রফেশনাল এমপ্লয়মেন্ট ভিসায় কর্মরত থাকেন। (ই-১০ ভেসেল ক্রু অথবা এইচ-২ ওয়ার্কিং ভিসিট ভিসায় কর্মরতরাও একই নিয়মে আওতায়)।
-আপনি যদি বিগত ১০ বছরের মধ্যে অন্তত চার বছর বা তার বেশি ইপিএস ভিসায় (ই-৯ নন-প্রফেশনাল এমপ্লয়মেন্ট) ভিসায় উৎপাদন, নির্মাণ, কৃষি বা মাছ চাষের কাজে নিয়োজিত থেকে থাকেন। ডি-৩ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং, ই-৮ ট্রেইনী এমপ্লয়মেন্ট, ই-১০ ভেসেল ক্রু অথবা এইচ-২ ওয়ার্কিং ভিসিট ভিসার অন্তর্ভূক্তরাও একই নিয়মের আও্তাধীন।
*** যেভাবে সর্বমোট কার্যকাল (৪ বছর) হিসাব করতে হবে
ইপিএস (ই-৯ নন-প্রফেশনাল এমপ্লয়মেন্ট) ভিসায় কোরিয়ার মোট কার্যকাল হিসেব করা হয়। আপনি যদি কখনো বাংলাদেশে গিয়ে থাকেন এবং কোরিয়া ত্যাগের একমাসের মধ্যে ফিরে আসেন তাহলে ওই সময়টুকুও কার্যকাল হিসেবেই গণ্য হবে। অন্যথায় ঐ সময়কাল বাদ যাবে।
অন্যান্য পূরণীয় শর্তসমূহ
উপরোক্ত অবস্থাসমূহের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকলে আবেদনকারীকে নিম্নোক্ত শর্তাদি পূরণ করতে হবে
– বয়স ৩৫ এর নিচে হতে হবে।
– ২ বছরের ডিপ্লোমা (কলেজ পাশের পর) থাকতে হবে।
– কোরিয়ান ভাষা টপিক লেভেল ৩ থাকতে হবে অথবা সোশ্যাল ইন্টিগ্রেশন প্রোগ্রাম কোর্স সম্পন্ন করতে হবে।
– এক কোম্পানী থেকে সর্বোচ্চ ৫ জন ই-৭ ভিসা পেতে পারে (কৃষি এবং মাছচাষের ক্ষেত্রে ৩জন)। কোন কোম্পানীতে ১০ থেকে ৪৯ জন কর্মচারী থাকলে সেখান থেকে ১ জন, ৫০ থেকে ১৪৯ জনের ক্ষেত্রে ২ জন, ১৫০ থেকে ২৯৯জনের ক্ষেত্রে ৩ জন, ৩০০-৪৯৯ জনের ক্ষেত্রে ৪ জন, ৫০০ জনের বেশি হলে ৫ জন ই-৭ ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
– বিগত ১ বছরের বার্ষিক গড় আয় কোরিয়ার নাগরিকদের মোট গড় আয়ের সমান অথবা বেশী হতে হবে। সর্বশেষ এক বছর ধরে প্রতিমাসের বেতন নিজের ব্যাংক একাউন্টে ২৩ লাখের বেশি দেখাতে পারলে হবে।
যারা আবেদন করতে পারবেন না
আবেদনের তারিখ হতে ২ বছরের মধ্যে অভিবাসন আইন ভঙ্গের দায়ে যদি আবেদনকারী
ক. দশ লাখ উওন বা তদূর্ধ্ব পরিমাণ অর্থ মূল্যের জরিমানার মুখোমুখি হয়ে থাকে
খ. অন্তত তিনবার শাস্তি পেয়ে থাকে
গ. জরিমানার অর্থ পরিশোধ না করে থাকে
– আবেদনকারী কারাদণ্ড বা ততোধিক গুরুতর কোন শাস্তি পেয়ে থাকলে
– অভিবাসন আইনের অনুচ্ছেদ ১১(১) অনুসারে আবেদনকারীর কোরিয়ায় প্রবেশে কোনপ্রকার নিষেধাজ্ঞা থেকে থাকলে
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
– পাসপোর্ট, অ্যালিয়েন রেজিস্ট্রেশন কার্ড, নির্ধারিত ফি, একটি ছবি।
– উচ্চ মাধ্যমিকের (কলেজ) পরে দুই বছরের ডিগ্রী/ডিপ্লোমা পাস সার্টিফিকেট
– টপিক সার্টিফিকেট অথবা কেআইআইপি সার্টিফিকেট (সোশ্যাল ইন্টিগ্রেশন কোর্স সমাপ্তি সার্টিফিকেট)
– কোম্পানীর রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট/ লাইসেন্স সার্টিফিকেট
– এমপ্লইমেন্ট কন্ট্রাক্ট সার্টিফিকেট
– ট্যাক্স পরিশোধের সার্টিফিকেট (কোম্পানীর কাছ থেকে নিতে হবে)
কোরিয়ায় ভিসা পরিবর্তনের জন্য কোম্পানীর মালিকের পূর্ণাংগ সহযোগিতা দরকার। আরো বিস্তারিত জানতে চাইলে আপনার কাছাকাছি ইমিগ্রেশন অফিসের সহযোগিতা নিন অথবা ১৩৪৫ এ ফোন করে জেনে নিতে পারেন।