Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ফেসবুক থেকে আয়! ১ম পর্ব

facebook-earn

ফেসবুক কি তা আর নতুনভাবে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। এটি আজকের দুনিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট। ১০ বছরের শিশু থেকে শুরু করে ১০০ বছরের বৃদ্ধ পর্যন্ত এখন ফেসবুক ব্যাবহার করছে।

chardike-ad

তবে আপনি কি জানেন ফেসবুক থেকেও আয় করা যায়? হ্যা ফেসবুক থেকেও টাকা আয়ও করা সম্ভব। কিন্তু কিভাবে? বিস্তারিত জানাচ্ছেন আব্দুল্লাহ মামুনঃ

ফেসবুক থেকে বিভিন্ন উপায়ে আয় করা যায়। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি উপায় হলোঃ

# এফ-কমার্স
# এফিলিয়েটে মার্কেটিং
# ব্লগিন
# এপ্লিকেশন তৈরী
# ফ্রি-ল্যান্সার সাইটের মধ্যমে

 

আজ আমরা এফ-কমার্স কি এবং কিভাবে এফ-কমার্স এর মাধ্যমে আয় করা যা সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবঃ

এফ-কমার্স কী?
ফেসবুকভিত্তিক ই-কমার্সই এখন এফ-কমার্স নামে পরিচিত। অল্প পুঁজিতে, এমনকি বিনা পুঁজিতেও এ ব্যবসা করা যায়। কোন দোকানঘর লাগে না, ব্যবসা পরিচালনা করা যায় ঘরে বসেই। দেশের যেখানেই থাকুন না কেন, ক্রেতার চাহিদামতো পণ্য ডেলিভারি দিতে পারলে এ ব্যবসায় সাফল্য আসবেই। এফ-কমার্সে সফলতা নির্ভর করবে সামাজিক যোগাযোগে আপনার পারদর্শিতার ওপর। আর এ কাজটির জন্য খরচার দরকার নেই। পেজের লাইক সংখ্যা যত বেশি হবে, আপনার পণ্য তত বেশি মানুষের কাছে পৌঁছবে। লাইক বাড়াতে আপনার চেষ্টাই যথেষ্ট। শুরুর দিকে পরিচিতজনদের ‘ইনভাইট’ করুন, বেশি বেশি শেয়ার দিন।

ই-কমার্সের সঙ্গে এফ-কমার্সের পার্থক্য
ই-কমার্সের ক্ষেত্রে ওয়েবসাইটে পণ্য বা সেবার তথ্য সাজানো থাকে, থাকে একটি পেমেন্ট গেটওয়ে, যার সাহায্যে ক্রেতারা পণ্য অর্ডারের পর মূল্য পরিশোধ করতে পারেন। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান পণ্য পৌঁছে দেয় ক্রেতার কাছে। অন্যদিকে এফ-কমার্সে কোন ওয়েবসাইটের দরকার হয় না। ব্যবসা পরিচালনা করা যায় ফেসবুকে একটা ব্যবসায়িক পেজে খুলে। এতে থাকে বিভিন্ন পণ্যের ছবি, বিবরণ, দরদাম, যোগাযোগের ঠিকানা প্রভৃতি তথ্য। এখানে কোনো পেমেন্ট গেটওয়ে থাকে না। পণ্য বা সেবা নিতে হলে ফেসবুক পেজে পণ্যের অর্ডার দিতে হয়। চাইলে শোরুমে গিয়েও পণ্য বা সেবা নিতে পারেন ক্রেতা বা গ্রাহক।

টার্গেট কোটি কাস্টমার
বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ জানুয়ারি ২০১৫ পর্যন্ত এক কোটি ১৮ লাখ। ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী ব্যবহারকারী রয়েছেন প্রায় ৯৮ লাখ। এর মধ্যে পুরুষ ৭৮ লাখ এবং নারী প্রায় ২০ লাখ। অথচ ২০০৯ সালেও দেশে ফেসবুকের ব্যবহারকারী ছিল এক লাখের কম। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এখন অনেক বড় বাজার। একে কেন্দ্র করে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোক্তা। অনেকেই এখন ফেসবুকেই শুরু করেছেন ব্যবসা। নিজের একটি বিজনেস পেজ খুলে তাতে প্রোডাক্টের ছবি আপলোড করে পণ্য বিক্রি করছেন অনেকেই।

শুরুটা হোক এখনই
আপনি হয়তো মাটির তৈজসপত্র বানাতে পারেন। কিংবা বাইরে থেকে উপহারসামগ্রী বা অন্য কোনো পণ্য আনার সোর্স আছে আপনার। হতে পারে, একটা নির্দিষ্ট এলাকায় ভালো মানের খাবার সরবরাহ করতে চান। অথবা কোনো এলাকায় টিভি, ফ্রিজ বা কম্পিউটার মেরামতের সেবা দিতে চান। শুরু করে দিন। প্রথম প্রথম হয়তো অর্ডার কম পাবেন। আস্তে আস্তে দেখবেন ভোক্তারা আপনাকে ঠিকই বেছে নিচ্ছে। একপর্যায়ে দেখবেন আপনি আর একা সামলাতে পারছেন না, ব্যবসার পরিসর বাড়ানোর জন্য তখন দরকার হচ্ছে লোকবল। ব্যস, আপনি হয়ে গেলেন একজন সফল ব্যবসায়ী।

পেজ তৈরি করবেন যেভাবে
প্রথমে ফেসবুকে আপনার আইডি থেকে www.facebook.com/pages/create ঠিকানায় যান।

এখানে Local Business or Place; Company, Organization or Institution; Brand or Product; Artist, Band or Public Figure; Entertainment; Cause or Community নামে ছয়টি ক্যাটাগরি দেখা যাবে। ধরা যাক, আপনি Product ক্যাটাগরিতে থেকে পেজ তৈরি করতে চাচ্ছেন। সে ক্ষেত্রে Brand or Product অংশে ক্লিক করলে দুটি অপশন আসবে। প্রথম অংশে ক্যাটাগরি সিলেক্ট করতে বলা হবে। অন্য অংশে পেজের একটি নাম দিতে হবে।

এরপর Get Started বাটনে ক্লিক করতে হবে। এরপর চারটি ধাপ আসবে যা পূরণ করতে হবে। চাইলে কিছু ধাপ Skip করা যাবে। তবে পরে তা পূরণ করতে হবে। প্রোফাইল ছবিও আপলোড করতে হবে। বেসিক ইনফো অংশে কিছু তথ্য দিয়ে অ্যাবাউট অংশে পেজ সম্পর্কে কিছু বর্ণনা দিতে হবে। এবার Continue বাটনে ক্লিক করলে আপনার পেজটি তৈরি হয়ে যাবে। এখন একটি Like বাটন দেখতে পাবেন যাতে ক্লিক করে আপনি প্রথম লাইক দিতে পারেন। এখন কাজ হলো পেজের ওপরের অংশে Build Audience অপশনে গিয়ে Invite Friends অপশন থেকে আপনার বন্ধুদের ইনভাইট করা। পেজে কোনো পরিবর্তন করতে চাইলে Edit Page বাটনে ক্লিক করে তথ্য পরিবর্তন করা যাবে।

 

এফ-কমার্সের জন্য আপনাকে যা করতে হবে

শুরুর আগে
→ কী ধরনের পণ্য বা সার্ভিস ডেলিভারি দেবেন প্রথমে তা ঠিক করুন। হতে পারে গয়না, পোশাক, উপহারসামগ্রী বা অন্য কিছু।
→ হুট করে শুরু না করে যাচাই করে দেখুন বাজারে কোন পণ্যের চাহিদা বেশি এবং কোনটি দূর-দূরান্তে ডেলিভারি দিলে ভালো চলবে।
→ শুরুতে অনেক ধরনের পণ্য বিক্রির চিন্তা বাদ দিয়ে এক ধরনের পণ্য নিয়ে শুরু করতে পারেন।
→ গুণগত মানসম্পন্ন, আকর্ষণীয় এবং ব্যতিক্রমী কোনো পণ্য বেছে নিতে হবে।
→ কাঙ্ক্ষিত ক্রেতা কারা, তা নির্ধারণ করুন। ছেলে না মেয়েদের জন্য পণ্য ছাড়বেন, তা ভাবুন। তবে শিশু ও নারীদের পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে।
→ কোন কোন এলাকায় পণ্য বা সেবা পৌঁছাতে পারবেন তা ঠিক করুন। বাসায় বা শোরুমও রাখতে পারেন।
→ পণ্য ডেলিভারির ব্যাপারে ভালো কোনো কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলাপ করে রাখুন।

শুরুর পরে
→ ব্র্যান্ডিংয়ে মনোযোগ দিন। পণ্য বা সার্ভিসটির উপস্থাপনা স্মার্টভাবে করুন। ফেসবুক পেজে আকর্ষণীয় ছবি দিন।
→ আস্তে আস্তে লাইক বাড়াতে থাকুন। এ জন্য আপনার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকা বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন বা শুভাকাঙ্ক্ষীদের সাহায্য নিন।
→ লাইক বাড়ানোর জন্য পেজে ব্যতিক্রমী কিছু পোস্ট করুন। যেমন হতে পারে ধাঁধা বা কুইজ প্রতিযোগিতা, যাতে থাকতে পারে আকর্ষণীয় পুরস্কার।
→ অন্যান্য বিজনেস পেজেও আপনার পেজটি প্রচার করুন, তাদেরগুলোও আপনার পেজে প্রচার করতে পারেন।
→ বিভিন্ন সাইটে, ব্লগে, মিডিয়ায় পেইজ ও ব্যবসার প্রচার চালান।
→ আপনি যে এলাকা থেকে পণ্য সরবরাহ করবেন (হতে পারে আপনার বাসা) তার ঠিকানা, ফোন নম্বর দিন।
→ পেমেন্ট সিস্টেমটি ভালোভাবে উল্লেখ করুন, এতে যেন কোনো জটিলতা না থাকে। সেটা হতে পারে মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেমে লেনদেন।

 

এফ-কমার্স সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা থাকলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। অথবা আমাদের ফেসবুক পেজে কমেন্ট করতে পারেন।

পরবর্তী লেখায় ফেসবুক ব্যাবহার  করে কিভাবে এফিলিয়েটে মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে  আয় করা যায় সেবিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।