Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

৩২৬ কোটি টাকার ‘ভুতুরে’ বিমানবন্দর!

airportজনমানবহীন ‘ভুতুড়ে’ এয়ারপোর্ট, নিরুত্তাপ বিমানবন্দর নিয়ন্ত্রক সংস্থা, গোটা একটা এয়ারপোর্ট টার্মিনাল খাঁ খাঁ করছে। জনমানবহীন চারদিক। দূরদূরান্ত পিন ড্রপ সাইলেন্স। কিন্তু কেন? ভূতের ভয়? না ভূতের ভয় সেখানে নেই। তাহলে কেন? সেই বিষয়ে জানার আগে একবার এই টার্মিনালটি সম্পর্কে একটু জেনে নেয়া যাক।

ভারতের রাজস্থান রাজ্যের জয়সালমেরের এই এয়ারপোর্ট টার্মিনাল তৈরির কাজ দু-বছর আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। প্রায় ১১১ কোটি ভারতীয় রুপি খরচ করে তৈরি করা হয়েছে এই টার্মিনাল বিল্ডিং। রাজস্থানের মরু এলাকার এই এয়ারপোর্টে বছরে ৩০ লাখেরও বেশি বিমানযাত্রীদের সামলানোর মতো পরিকাঠামো রয়েছে। ১৮০ সিটের জেট বিমান ওঠা নামার মতো ব্যবস্থাসহ রয়েছে অন্য সব আধুনিক পরিকাঠামো। তবুও রাজস্থানের জনমানবহীন মরু প্রান্তরেরর মতোই দশা এই এয়ারপোর্টের।

chardike-ad

শুধুমাত্র জয়সালমের নয়, ২০০৯ সাল থেকে কেন্দ্র মোট ৩২৬ কোটি রুপি খরচ করে এই ধরণের আটটি এয়ারপোর্ট তৈরি করেছে৷ যে সমস্ত এয়ারপোর্ট থেকে নিয়মিত ফ্লাইটের কোনো ব্যবস্থা নেই। অনেকেই এই সমস্ত এয়ারপোর্টকে সরকারের হাতি পোষার সঙ্গে তুলনা করছেন।

কিন্তু কেন এমন অবস্থা? স্পাইস জেট বিমান সংস্থার সিইও জানাচ্ছেন, ‘‘সরকারের বোঝা উচিত যে এয়ারপোর্ট তৈরি করলেই বিমান সংস্থাগুলি যে আসবে তেমন নিশ্চয়তা নেই। বিষয়টা অতটাও সহজ নয়।’ বেশিরভাগ বিমান সংস্থাগুলিই জানাচ্ছে, এই সমস্ত এয়ারপোর্টগুলি থেকে যাত্রী পাওয়া প্রায় খড়ের গাদায় সূচ খোঁজার মতো। এই সব জায়গা থেকে নিয়মিত উড়ান পরিষেবা দেয়া মানেই সংস্থার বিশাল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি। ক্ষতির অঙ্ক এতটাই যে তা কোনোভাবেই সামলানো সম্ভব নয়। এর সাম্প্রতিক উদাহরণ হল, মাইসর বিমানবন্দর, যেখানে যাত্রীসংখ্যা কম হওয়ার জন্য সমস্ত উড়ান পরিষেবা স্থগিত করে দেয়া হয়েছে।

এই সমস্ত ভুতুড়ে এয়ারপোর্ট টার্মিনালগুলি তৈরি প্রকল্পের অধিকাংশই ইউপিএ আমলের। ইউপিএ আমলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত বিমান পরিষেবার আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই উদ্যোগ যেভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে তাতে প্রশ্ন উঠছে, আদতেও কোনো সঠিক নীতি গ্রহণ করে এই এয়ারপোর্টগুলি তৈরি করা হয়েছিল কিনা?

সারা দেশে প্রায় এয়ারপোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার অধীনে এমন একশোটি ডোমেস্টিক এয়ারপোর্ট রয়েছে যেখান থেকে নিয়মিত ফ্লাইটের কোনো ব্যবস্থা নেই। এমন অবস্থায় গত ইউপিএ সরকারেরর মতোই মোদির সরকারও প্রায় ২০০টি এয়ারপোর্টে নতুন টার্মিনাল তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সম্প্রতি ভোটের আগে বিহারে ২,৭০০ কোটি রুপি খরচ করে ৪টি নতুন বিমানবন্দর তৈরির কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী৷ এখন প্রশ্ন হলো, বর্তমানে জয়সালমেরের মতো যেসব ভূতুড়ে এয়ারপোর্ট পুরোপুরি ধুঁকছে, সেইদিকে নজর না দিয়ে নতুন ২০০টি টার্মিনাল তৈরির সিদ্ধান্ত কতটা যুক্তিযুক্ত? এখানেই মোদির সংস্কারনীতি ধাক্কা খাচ্ছে বলেও অনেকের মতো।