Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ফ্রান্সে সন্দেহের শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশিরা

franceফ্রান্সের প্যারিসে জঙ্গিগোষ্ঠীর ব্যাপক হামলায় হতাহতের পরের দিনটি আতঙ্কে কাটিয়েছেন শহরে বসবাসরত বাংলাদেশিরা। অনেকেই ঘর থেকে বের হননি। যারা বের হয়েছেন, তাদের মনে হচ্ছে সবাই যেন তাদেরকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখছে। নিজেরাও ভুগছেন সন্দেহ আর অবিশ্বাসের দোলাচলে।

রোববার এক প্রতিবেদনে বিবিসি এমনটাই জানিয়েছে।

chardike-ad

প্যারিসের একটি দোকানে কাজ করেন জাহিদুল ইসলাম। তিনি শুক্রবার গভীর রাতের হামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শীও। তার সঙ্গে কথা বলার জন্য বিবিসির ঢাকা অফিস থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আপনাদের কোনো নম্বর আমার ফোনে ওঠেনি। আমাকে আগে নিশ্চিত হতে হবে আপনারা সত্যিই বিবিসি কিনা।’

পরে তার কাছে থাকা বিবিসির ফোন নাম্বারে তিনি ডায়াল করেন এবং একটি সাক্ষাৎকার দেন। জাহিদুল বলেন, তিনি ঘটনার পরদিন কাজে বেরিয়েছেন। দোকানে যদিও দিনে ১২ ঘণ্টা কাজ করেন, কিন্তু শনিবার কাজ করেছেন মোটে ৪ ঘণ্টা। ক্রেতা একেবারেই ছিল না বললেই চলে। সব দোকানপাটেরই একই অবস্থা। বেশিরভাগ দোকানপাটই ছিল বন্ধ। রাস্তায় মানুষজন যা বেরিয়েছে, তাদের মধ্যে ফরাসি ছিল খুব কমই। পরস্পর পরস্পরের দিকে তাকাচ্ছিল প্রচণ্ড সন্দেহ নিয়ে।

‘ক্ষোভ বা বিদ্বেষ নয়, সন্দেহপ্রবণতা কাজ করছে। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না’, যোগ করেন জাহিদুল ইসলাম।

এমনকি ফরাসি রীতি অনুযায়ী কিছু মানুষ ফুল দিয়ে ও মোমবাতি জ্বেলে আহত-নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেও তাদের সংখ্যা ছিল খুবই কম। হাজার হাজার পুলিশ মোতায়েন থাকলেও মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ এখনো ফিরে আসেনি বলে মনে হচ্ছে।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, এখানে বিদেশিদের বিশেষ করে যারা শ্বেতাঙ্গ নন তাদেরকে খুবই সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে এবং এটাকে অত্যন্ত স্বাভাবিক বলেই তিনি মনে করেন।

তিনি বলেন, ‘এদেশের নিয়ম হচ্ছে রাস্তাঘাটে কেউ কারো দিকে তাকায় না। কিন্তু আজ রাস্তাঘাটে সবাই ঘুরে ঘুরে তাকাচ্ছে বিশেষ করে আমাদের মতো বিদেশিদের দিকে। পাশের লোকের দিকে খুব তাকাচ্ছে। মানুষ খুব সতর্কভাবে চলাফেরা করছে।’

এ বছরের গোড়ার দিকে শার্লি এবদো পত্রিকায় হামলার ঘটনা স্মরণ করে জাহিদুল বলেন, ‘সেটা ছিল আমার বাসার খুব কাছে, তখনও মানুষকে এমন আচরণ করতে দেখা যায়নি, আজকে যেটা দেখছি।’

জাহিদুল ইসলাম আরো জানান, তিনি বাংলাদেশি কমিউনিটির অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা ভীত ও সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। অনেকেই কাজে আসেনি। বিশেষ করে যারা অবৈধভাবে ফ্রান্সে অবস্থান করছে তারা ঘর থেকে বের হওয়াই বন্ধ করে দিয়েছে।