Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

কাতারে আতঙ্কে বাংলাদেশিরা

Qatarকাতারের সঙ্গে মালদ্বীপসহ আরব বিশ্বের প্রভাবশালী সাত দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে। উপসাগরীয় অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদকে সমর্থনের অভিযোগ এনে কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে দেশগুলো। প্রতিবেশি দেশগুলো কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর দেশটি এখন নানামুখী কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক চাপের মুখে পড়েছে। খবর বিবিসির।

কাতারে কাজ করছে প্রায় তিন লাখের মতো বাংলাদেশি। দেশটির এমন সংকটময় মুহূর্তে বেশ আতঙ্কে রয়েছেন বাংলাদেশিরা। তাদের মধ্যে এই ভয় তৈরি হয়েছে যে, কাতার বাংলাদেশি বিশেষ করে শ্রমিকদের ফেরত পাঠাবে কিনা। বাংলাদেশিরা কাতারে থাকতে পারবেন না। তাদের চলে যেতে হবে এমন একটা ভীতি কাজ করছে সবার মধ্যেই।

chardike-ad

ইতোমধ্যেই সৌদি আরব, মিসর, বাহরাইন, আরব আমিরাত, লিবিয়া এবং ইয়েমেনের নাগরিকদের কাতারে যাওয়া, সেখানে বসবাস করা বা কাতার হয়ে অন্য কোন দেশে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এসব দেশের নাগরিকদের ১৪ দিনের মধ্যে কাতার ছাড়তে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে সৌদি আরব, আরব আমিরাত এবং বাহরাইনে বসবাসরত কাতারিদেরও একই সময়ের মধ্যে এসব দেশ ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে।

এ কারণে বাংলাদেশিরা কিছুটা আতঙ্কে আছে যে তাদের ওপর কোনো বিধি নিষেধ আরোপ হবে কিনা। দেশটিতে কর্মরত শ্রমিকরা ভয়ে দিন কাটাচ্ছে। কারণ তারা অনেক টাকা টাকা খরচ করে সেখানে গেছেন। এখন যদি তাদের ফেরত পাঠানো হয় তবে পরিবার নিয়ে দেশে বিপদে পরবেন সবাই।

কাতারে কর্মরত দু’জন বাংলাদেশি নির্মাণ শ্রমিক জানিয়েছেন, তাদের বলে দেয়া হয়েছে বুধবার থেকে যেন তারা কাজে না যায়।

এছাড়া অন্য একজন বাংলাদেশি শ্রমিক জানিয়েছেন, তিনি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন সেখানকার পণ্য আসে দুবাই থেকে। সেটা এখন বন্ধ আছে। তাই তার কফিল ( নিয়োগদাতা) বলে দিয়েছেন, ‘যদি এমন চলতে থাকে এবং স্টক শেষ হয়ে যায় তাহলে স্টোর বন্ধ করে দিতে হবে এবং তোমাকে চলে যেতে হবে। পরে যদি ভালো ফলাফল আসে তার ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

সৌদি আরব এবং দুবাই থেকে পণ্য নিয়ে মূলত কাতার ব্যবসা বাণিজ্য করে। যদি সৌদি আরব আর দুবাইয়ের ওপর নির্ভরশীল প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যায় তাহলে বহু বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ হারাবেন। তারা সেখানে বিকল্প কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজে যোগ দিতে না পারলে বাধ্য হয়েই তাদের দেশে ফিরতে হবে। এ কারণেই সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা এত ভয় পাচ্ছেন।

তবে কাতারের সঙ্গে সৌদি আরবসহ উপসাগরীয় দেশের সম্পর্কচ্ছেদ বাংলাদেশের শ্রমবাজার এমনকি কাতারসহ সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

একই সঙ্গে সৃষ্ট এ উত্তেজনায় বাংলাদেশ নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকার চেষ্টা করবে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ মূলত এক ধরনের মনস্তাত্বিক চাপে পড়েছে। কারণ, সরাসরি যেকোনো দিকে ঝুঁকে যাওয়াটা দেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই আপাতত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করাটাই শ্রেয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, কাতার-সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশগুলোর এই বিরোধে বাংলাদেশ কোনো বিশেষ পক্ষ নেবে না। এ ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের দেশেগুলোর এই বৈরি সম্পর্ক বাংলাদেশের শ্রম বাজারেও বিশেষ কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।

এই সংকট শুরু হওয়ার পর সেখানে অনেক মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে বাজার থেকে খাদ্যসামগ্রী কিনতে শুরু করায় জিনিসপত্রের দাম বাড়তে শুরু করেছে।

এতদিন সৌদি সীমান্ত দিয়েই কাতারে খাদ্য প্রবেশ করত। কিন্তু সৌদির সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ হওয়ার পর অনেকেই সুপার স্টোর গুলোতে খাদ্য মজুদ করা শুরু করেছেন। খাদ্য সংকট এখনো শুরু না হলেও একটা বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি চলছে।