চিকিৎসাবিজ্ঞানে এ বছর তিন গবেষক যৌথভাবে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তারা হলেন— যুক্তরাষ্ট্রের জেমস রথম্যান ও র্যান্ডি শেকম্যান এবং জার্মানির থমাস সুডহফ। দেহের কোষ কী প্রক্রিয়ায় তথ্য বা উপকরণ স্থানান্তর বা পরিবহন করে, সে-বিষয়ক গবেষণার জন্য তারা এ পুরস্কার পেয়েছেন। গতকাল সোমবার সুইডেনের কারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট থেকে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। খবর বিবিসি ও এপির।নোবেল কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়, প্রতিটি কোষ দেহের জন্য প্রয়োজনীয় যেসব রাসায়নিক উপাদান উৎপাদন করে এবং তা কোষের ভেতরে ও কোষ থেকে কোষে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্যাকেজের আকারে (চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ভেসিকল নামে পরিচিত) পরিবাহিত করে, সে-বিষয়ক গবেষণার জন্য এ তিন গবেষককে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। এ ভেসিকলগুলো কাজ করে পরিবহন বহরের মতো, যথাযথভাবে উপাদানটি সঠিক গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। কীভাবে ভেসিকলগুলো কাজ করে, সে পদ্ধতিই আবিষ্কার করেছেন এ তিন বিজ্ঞানী। মস্তিষ্কের যোগাযোগ, দেহে হরমোন নিঃসরণ ও রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা বোঝার জন্য তাদের এ কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোষের পরিবহনব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটলে স্নায়ুবিক জটিলতা, ডায়াবেটিস ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার র্যান্ডি শেকম্যান তার গবেষণায় দুটি জিন চিহ্নিত করেছেন। এরা কোষীয় পরিবহনের কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ভেসিকল নির্দিষ্ট কোষে পৌঁছার পর রাসায়নিকের আদান-প্রদানের কাজটি করতে সহায়তা করে প্রোটিন। এ প্রোটিন খুঁজে বের করেন ইয়েল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জেমস রথম্যান। জার্মানির থমাস সুডহফ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করছেন। তিনি দেখিয়েছেন, এ পরিবহনের কাজটি সুচারুভাবে করতে কীভাবে সংকেত আদান-প্রদানের বিষয়টি নিয়ন্ত্রিত হয়।
নোবেল জয়ের পর জেমস রথম্যান বলেন, ‘পুরস্কার পাওয়ার কথা চিন্তা করিনি। চমত্কৃত হওয়ার মতো কোনো কথা বলতে পারব না। শুধু বলব, হায় খোদা আমি পেয়ে গেছি!’ পুরস্কার প্রাপ্তির পর কী করলেন— এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রথমে গবেষণাগারের ব্যবস্থাপককে ডাকলাম। পরে অন্যকর্মীদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করলাম।’
সূত্রঃ বণিকবার্তা