চলতি বছর বিশ্বজুড়ে ১০ কোটি গ্যালাক্সি এস সরবরাহ করবে দক্ষিণ কোরীয় ইলেকট্রনিক পণ্য নির্মাতা স্যামসাং। সম্প্রতি সিউলে অনুষ্ঠিত স্যামসাংয়ের অ্যানালিস্ট ডে ইভেন্টে এ তথ্য জানান কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেকে শিন। বিশ্বজুড়ে কোম্পানিটির পণ্যের চাহিদা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। খবর টেক টুর।
পুরো বিশ্বে এখন যে কয়টি কোম্পানি স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট সরবরাহ করছে, তার মধ্যে অন্যতম স্যামসাং। কোম্পানিটি বাজার দখলে ভারতসহ আরো অনেক দেশে বিভিন্ন কোম্পানির তুলনায় এগিয়ে রয়েছে। চলতি বছর তারা বিশ্বজুড়ে ১০ কোটি গ্যালাক্সি এস ও গ্যালাক্সি নোট সরবরাহ করবে বলে জানিয়েছে।
কোম্পানিটি সিউলে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশ্লেষকদের কাছে নিজেদের ভবিষ্যতের বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরে। এর মধ্যে তারা ভবিষ্যতে স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটের বাজারে আধিপত্য বিস্তারের পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করে। বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে কোম্পানিটি ভবিষ্যতে স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটের বাজারে রাজত্ব করবে বলে মন্তব্য করেন বিশ্লেষকরা।
গ্যালাক্সি এসের মতো স্মার্টফোনের পাশাপাশি কোম্পানিটি তাদের ট্যাবলেট বিক্রির পরিমাণ বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে বলেও সম্মেলনে জানানো হয়। কোম্পানিটির জানানো তথ্যমতে, গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে চলতি বছরের একই সময় পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে তারা অ্যান্ড্রয়েডভিত্তিক ৪ কোটি ট্যাবলেট সরবরাহ করেছে। এ হিসাবে গত বছরের তুলনায় চলতি বছর কোম্পানিটির ট্যাবলেট বিক্রির পরিমাণ ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সম্মেলনে জেকে শিন বলেন, ‘গত সময়ে স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট বিক্রির মাধ্যমে আমরা বিশ্ববাজারে দখল বাড়াতে সক্ষম হয়েছি। তবে এখনো উন্নতি করার জন্য অনেক বিষয় রয়ে গেছে। তাই এখন পর্যন্ত আমরা আমাদের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে পারিনি। তবে সামনে আমরা গ্রাহকদের মন জয় করে বাজার দখল বাড়াতে সচেষ্ট হব।’
চীন, ভারত ও ব্রাজিলের মতো উদীয়মান বাজারগুলোয় কোম্পানিটি তাদের দখল বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, উদীয়মান নতুন বাজার দখল যেকোনো কোম্পানিকে এক ধাপ এগিয়ে রাখবে। এ কারণেই কোম্পানিটি বিশ্বের বিভিন্ন নতুন উদীয়মান বাজারগুলো দখলে সচেষ্ট হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তারা।
এদিকে এসব উদীয়মান বাজারগুলোর নিজস্ব স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট নির্মাতা কোম্পানি রয়েছে, যে কারণে আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোকে এসব বাজারে প্রবেশ করে টিকে থাকতে বেশ বেগ পেতে হবে। চায়নার জিয়াওমি ও ভারতের মাইক্রোম্যাক্স হচ্ছে এর উত্কৃষ্ট উদাহরণ। কারণ এ কোম্পানিগুলো নিজেদের দেশে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
কোম্পানিটি ২০১৫ সাল নাগাদ বিশ্বজুড়ে ১৫০ কোটি স্মার্টফোন সরবরাহ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। এখন থেকে তারা এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কাজ করে যাবে বলে জানান শিন। চলতি বছর যেখানে কোম্পানিটি ১০০ কোটি স্মার্টফোন সরবরাহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, সেখানে দুই বছরের মধ্যে এ সংখ্যা আরো ৫০ লাখ বাড়ানো অনেক দুঃসাহসিক পরিকল্পনা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে কোম্পানিটির জনপ্রিয়তা ও বাজার দখল বর্তমানে যেহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে কোম্পানিটির এ ধরনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে তেমন কোনো বেগ পেতে হবে না বলেও মন্তব্য করেন বিশ্লেষকরা।
বাজারে ছাড়ার পর থেকে কোম্পানিটির গ্যালাক্সি এসফোর স্মার্টফোনটির জনপ্রিয়তা ক্রমেই বেড়ে চলছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে কোম্পানিটির শুধু এ পণ্যটিই প্রচুর পরিমাণে বিক্রি হবে বলে আশাবাদী নির্মাতা কোম্পানিটি। ভারতে কোম্পানিটি বাজার দখলে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। এ বাজারগুলোয় কোম্পানিটির বিক্রি ক্রমে বেড়েই চলছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে কোম্পানিটিকে তাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তেমন বেগ হতে হবে না বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। সূত্রঃ বণিকবার্তা।