Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

সিঙ্গাপুরের যে দ্বীপে বৈঠকে বসবেন ট্রাম্প-কিম

singapore-islandমার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের মধ্যে বহুল প্রত্যাশিত বৈঠকটি সিঙ্গাপুরের সেন্তোসা দ্বীপের একটি পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দপ্তর হোয়াইট হাউস থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

ঐতিহাসিক এই শীর্ষ বৈঠকটি আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু এ বৈঠকের অনেক বিষয় এখনো নিশ্চিত করা হয়নি। কিমের সঙ্গে কোন মার্কিন প্রেসিডেন্টর এটাই হবে প্রথম বৈঠক। গত মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, পরিকল্পনা সুন্দরভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।

chardike-ad

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি সারা স্যান্ডার্স এক টুইট বার্তায় নিশ্চিত করেছেন যে, শীর্ষ বৈঠকটি সিঙ্গাপুরের সেন্তোসা দ্বীপের পাঁচ তারকা কাপেল্লা হোটেলে অনুষ্ঠিত হবে। যে ৬৩টি দ্বীপের সমন্বয়ে সিঙ্গাপুর গঠিত সেগুলোর মধ্যে স্যান্তোসা অন্যতম।

এই দ্বীপটি ৫শ হেক্টর জায়গার উপর গড়ে উঠেছে। মূল ভূখণ্ড থেকে এ দ্বীপটি কাছেই অবস্থিত। এখানে প্রচুর বিলাসবহুল হোটেল এবং অভিজাত গলফ কোর্স রয়েছে।

singapore-islandতবে সেন্তোসা দ্বীপের একটি কালো অধ্যায় রয়েছে। দস্যুতা, রক্তপাত এবং যুদ্ধের ইতিহাস রয়েছে এ দ্বীপের। উনিশ শতকে ব্রিটেনের অধীনস্থ একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে সিঙ্গাপুরের আবির্ভাব ঘটে।

ভারত এবং চীনের মধ্যে যে সমুদ্র পথ আছে সেটির মাঝখানে সিঙ্গাপুরের অবস্থান। ফলে সিঙ্গাপুরের আলাদা একটি গুরুত্ব রয়েছে। ব্রিটিশ শাসনের পূর্বেই সিঙ্গাপুর একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠছিল। এখানে ব্যবসায়ীদের আসা-যাওয়া যেমন ছিল, তেমনি দস্যুদের আনাগোনাও ছিল। সেন্তোসা দ্বীপটি মৃত্যুর দ্বীপ হিসেবে পরিচিত ছিল কারণ, এই দ্বীপ দস্যুতার জন্য পরিচিত ছিল।

১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটেনের আত্নসমর্পনের পর সিঙ্গাপুর জাপানের হাতে চলে যায়। তখন জাপানীরা এ দ্বীপটিকে সায়োনান অর্থাৎ দক্ষিণের বাতি নামে নতুন নামকরণ করে। সে দ্বীপে নৃতাত্ত্বিক চীনা সম্প্রদায়ের বসবাস ছিল। জাপান-বিরোধীদের সেখান থেকে সরানোর নামে বহু মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল।

১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী চীনা পুরুষদের বিভিন্ন জায়গায় ডেকে নিয়ে মেশিনগান দিয়ে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে সাগরে ফেলে দেয়া হয়। যেসব জায়গায় হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল তার মধ্যে বর্তমানে কাপেল্লা হোটেলের সামনে সমুদ্র সৈকত অন্যতম।

১৯৭০ সালে সিঙ্গাপুর সরকার দ্বীপটির নামকরণ করে সেন্তোসা, যার অর্থ শান্তি। এরপর দ্বীপটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ব্যাপক উদ্যোগ নেয়া হয়। এ দ্বীপে গড়ে উঠেছে অনেক ব্যয়বহুল আবাসন প্রকল্প। এখানে একেকটি বাড়ির দাম কয়েক মিলিয়ন ডলার। সেই সাথে রয়েছে বিলাসবহুল গলফ কোর্স এবং নানা ধরনের অভিজাত রেস্টুরেন্ট।

মূল ভূখণ্ডের কাছে হওয়ায় সেন্তোসা দ্বীপটি বেশ নিরাপদ। এ দ্বীপে যাওয়ার জন্য যেসব প্রবেশ পথ আছে সেগুলোকে খুব সহজেই নিরাপদ রাখা যায়। সেখানে যাওয়ার জন্য একটি ক্যাবল কার লাইন, একটি মনোরেইল লাইন এবং যানবাহন চলাচলের একটি টানেল রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা আলোচনায় যদি কোন বিরতি নিতে চান, তাহলে সেখানে তাদের জন্য গলফ কোর্সও রয়েছে।